avertisements 2

বাড়িতে নতুন চাকরির খবর দিতে যাওয়ার পথে সহকারী প্রকৌশলী নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৩২ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

গণপূর্ত অধিদফতরে চাকরি হয়েছে। খুশির খবর স্ত্রীকে জানাতে কর্মস্থল গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থেকে নিজ বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুরের দিকে রওনা হন। তবে বাড়ি ফেরা হলো না স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সহকারী প্রকৌশলী মোজাহার আলীর (২৮)। খুশির খবরটি স্ত্রী জানার আগেই শুনলেন স্বামীর মৃত্যু সংবাদ। শুক্রবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘোড়াঘাটে পৌর এলাকায় যাত্রীবাহী পিকআপের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত হন তিনি। এই ঘটনায় পিকআপে থাকা আরও ১৭ জন আহত হন।

জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার হিলি মোড়ে পিকআপ ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী মোজাহার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পিকআপটি রাস্তার পাশে জমিতে পড়ে উল্টে যায় এবং চালকসহ ১৭ জন আহত হন। তাদেরকে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিন জনকে রংপুর ও দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা। আহত ১৭ জনই দিনাজপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। তারা পিকআপটিতে চড়ে গাইবান্ধায় একটি অটোরাইস মিলে কাজ করার জন্য যাচ্ছিলেন। এই ঘটনায় রাতেই নিহত মোজাহার আলীর ভাই মজিদুল মন্ডল বাদী হয়ে পিকআপ চালক ও দুই হেলপারের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেছেন।

ডুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি শেষে গত ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় যোগ দেন মোজাহার আলী। গত এপ্রিলে প্রথম সপ্তাহে বিয়ে করেন। শুক্রবার বিকালে খবর পেয়েছেন, নতুন করে তার চাকরি হয়েছে গণপূর্ত অধিদফতরে। গণপূর্তে চাকরির জন্য গত ৫ মাস আগে দিয়েছিলেন পরীক্ষা। মোবাইল ফোনে স্ত্রীকে কল করে বলেছেন, ‘তোমাকে সারপ্রাইজ দেব। আমি বাড়িতে আসছি।’ তবে বাড়িতে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। মোজাহার দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের রানীনগর-তেগরা গ্রামের নজরুল মন্ডলের ছেলে।

নিহতের সহকর্মী উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মোজাহার ভাই খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। মাত্র কয়েকমাস আগে তিনি আমাদের অফিসে যোগ দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবারও আমার সঙ্গে তার সংসার জীবন নিয়ে অনেক হাসিঠাট্টা করলেন। তার এই মৃত্যু মেনে নেওয়ার মতো নয়।’

মামলার বাদী ও নিহতের ভাই মজিদুল মন্ডল বলেন, ‘কিছু দিন আগে চাকরি ও বিয়ে করেছে আমার ছোট ভাই। জীবনে সুখের দিন আসার আগেই তাকে চলে যেতে হলো। গণপূর্তে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাকে নিষেধ করেছিলাম, এলজিইডির চাকরি না ছাড়তে। সেই গণপূর্তের চাকরির খবর দিতে বাড়িতে যাওয়াটাই কাল হলো ভাইয়ের।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2