সরকারি গাড়ি নিয়ে কারাগারে জামাইকে দেখতে গেলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৫ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:২৮ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
নওগাঁর মান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক সরকারি জিপ গাড়ি নিয়ে জেলহাজতে থাকা জামাতাকে (মেয়ের স্বামী) দেখতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি গাড়ি ও তেল খরচ করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে নওগাঁ জেলা কারাগার থেকে সরকারি এ গাড়িটি বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
জানা গেছে, নওগাঁর মান্দায় প্রসাদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সাংবাদিক আব্বাস আলীকে প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতি নেতৃবৃন্দের নির্যাতনের মামলায় এজাহারভুক্ত চারজন আসামি রোববার বিকাল ৩টার দিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নওগাঁ ২নং আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার বসাক এ নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন- মামলার ২ নম্বর আসামী প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতি সাংগঠনিক সম্পাদক ও মান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হকের জামাই আলামিন রানা (৩০), প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এরশাদ আলী(৫০), সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার (৪৫) ও খাদেমুল ইসলাম (৫৫)।
একই মামলার তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতার উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের দাওইল গ্রামের মিজানুর রহমানকে আটক করে শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে আটক করে। রোববার দুপুরে তাকে জেল হাজতে পাঠায়। বর্তমানে মোট পাঁচজন আসামি জেলহাজতে রয়েছে।
জেলার মান্দা উপজেলা থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দুরে জেলা শহরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক সরকারি জিপ গাড়ি নিয়ে জেলহাজতে থাকা জামাইকে দেখতে আসেন। দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি জেলা কারাগার থেকে সরকারি এ জিপ গাড়িটি বেরিয়ে যান।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িচালক আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুপুরের খাবার খাচ্ছেন বলে জানান। খেয়ে উঠে কথা বলবেন। তার আধাঘণ্টা পর যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন আর রিসিভ করেননি।
মান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নতুন চেয়ারম্যান হয়েছি। সরকারি গাড়ি নিয়ে কোথায় যাওয়া যাবে বা যাবে না তা আমার জানা নেই। তবে সরকারি গাড়ি নিয়ে জেলখানায় গিয়েছিলাম।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
নওগাঁ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক উত্তম কুমার রায় বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানদের দেওয়া গাড়ি ব্যবহারের কিছু বিধিমালা আছে। তিনি সরকারি কোনো কাজে যেতে পারেন।
তার জামাতা জেলা কারাগারে দুইদিন থেকে বন্দি, তাকে দেখতে সরকারি গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়টি জানা নেই।
নওগাঁ জেল সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, মান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক দুপুরে আসামিদের দেখতে আসছিলেন। পরে অফিস কক্ষে বসিয়ে তার সঙ্গে কিছু কথা হয়। তবে করোনার মধ্যে আসামিদের দেখানো সম্ভব না বলে তাকে জানিয়ে দিলে তিনি চলে যান।