avertisements 2

দুই গুচ্ছগ্রামে জোটেনি এক টুকরো কোরবানির মাংস

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩১ পিএম, ৩ মে,শুক্রবার,২০২৪

Text

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র বিধৌত দ্বীপ চর ধনার চর কাশিয়াবাড়ী গুচ্ছগ্রাম ও কোমরভাঙ্গি গুচ্ছগ্রামের একটি পরিবারেরও ভাগ্যে জোটেনি কোরবানির মাংস। ফলে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত এই দুই এলাকার মানুষ কোরবানির মাংস খেতে পারেননি। সোমবার (১১ জুলাই) রাতে দুই গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্যরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যাদুরচর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হযরত আলী বলেন, ‘বিধবা জরিনা বেওয়া (৮০), স্বামী পরিত্যক্তা রুপবান (৫০) ও বিধবা মানিকজান বেওয়াসহ (৭৫) আমার ওয়ার্ডের ধনার চর কাশিয়াবাড়ী গুচ্ছগ্রামের ৫৫টি পরিবারের কারোর মুখে কোরবানির মাংস ওঠেনি। এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই দিনমজুর। এ গ্রামের অনেক অসহায় নারী ও পুরুষ ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।’

যাদুরচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের কোমরভাঙ্গি গুচ্ছগ্রামে ২৫টি পরিবারের বসবাস। এরা সবাই ভূমিহীন অসহায়। এই গ্রামের দিনমজুর মোজাম্মেল (৪২), জামাল (৪৮) ও শাপলাসহ (৩৬) একটি পরিবারও কোরবানির মাংস পায়নি। এসব পরিবারকে ঈদুল আজহার আগে ভিজিএফের ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছিল। তাই রান্না করে তারা সবজি দিয়ে খেয়েছে।’

যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ধনার চর কাশিয়াবাড়ী গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত ৫৫টি পরিবার ও ৬নং ওয়ার্ডের কোমরভাঙ্গি গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত ২৫টি পরিবারের সবাই ভূমিহীন অসহায় দুস্থ। এদের অধিকাংশরাই খেটে-খাওয়া ও দিনমজুর। কেউ কেউ ভিক্ষাবৃত্তিও করেন। এসব পরিবারের কারোরই কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য তো দূরের কথা অনেকেরই ব্রয়লার মুরগিও কিনে খাওয়ার অবস্থা নেই।

তিনি আরও বলেন, গ্রাম দুটি ব্রহ্মপুত্র বিধৌত দ্বীপ চর হওয়ায় এ দুই এলাকার মানুষজন নদী পাড়ি দিয়ে অন্য কোন এলাকার সামর্থ্যবানদের কাছ থেকেও কোরবানির মাংস সহায়তা আনতে পারেননি। ফলে ঈদুল আজহার উৎসবের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত এসব এলাকার একটি পরিবারও কোরবানির মাংসের স্বাদ পাননি। ঈদের দিন এসব এলাকার কারোর সামর্থ্য থাকলে হয়তো ব্রয়লার মুরগি কিনে খেয়েছেন নয়তোবা অধিকাংশরাই ভাত ও সবজি খেয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকাই চরাঞ্চল। এসব চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষরাই খেটে-খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের। তাই আমার ইউনিয়নে পশু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্যবান মানুষ খুবই কম। এসব চরাঞ্চলের যেসব পরিবারের মানুষজন আমার কাছে এসেছিল আমি সাধ্য অনুযায়ী তাদের মাংস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কাশিয়াবাড়ী গুচ্ছগ্রাম ও কোমরভাঙ্গি গুচ্ছগ্রাম দ্বীপ চর হওয়ায় এসব এলাকার মানুষ কোরবানির মাংস পাননি। ফলে ঈদুল আজহার দিনেও তারা কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত হলেন।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2