জালাল উদ্দিন আহমেদ
হাকিকি আযাদীর স্বপ্নদৃষ্টা একজন ক্রিকেট কাপ্তান
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুন,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:১৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ধন্যবাদটা প্রথম আলোকে দিতেই হয়। মুক্ত প্রবাহের এই সময়ে আমরা অনেক কিছুই চাওয়ার আগে পেয়ে যাই। লেখার উৎসাহটা সেখান থেকেই শুরু। সম্প্রতি জনৈক ইসলামিক চিন্তাধারার লেখক জনাব পারভেজ হুদভয় পাকিস্তানের গনতন্ত্রকামী একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে অহংকারী ভন্ড স্ববিরোধী আখ্যা দিয়ে পাকিস্তানের ক্ষমতাভোগী শাসকদের মদদপুষ্ট ডন পত্রিকায় কলাম লেখেন। প্রথম আলোর সৌজন্যে আমরা তার বাংলা অনুবাদ পাই (৫ জুন, পৃ:৮)। জনাব পারভেজের লেখায় পঞ্চাশ পঞ্চান্ন বছর আগেকার পুর্ব বাংলার সেদিনের পাকিস্তান জিন্দাবাদ ওয়ালা চাঁদতারা মার্কা টুপি পরা সেই বুদ্ধিজীবিদের কথাকেই স্মরন করিয়ে দেয়। সৃষ্টির জন্মলগ্ন থেকেই পাকিস্তান নামক ধর্মীয় জাতি স্বত্ত্বায় আত্মপ্রকাশ করা রাষ্ট্রটিতে চলছে একমুখো শোষন ও শাসনের ঘুর্ণিচক্র। এর ব্যতিক্রম কদাচিৎ হয়েছে বলে সেই অখন্ডের তেইশেও যেমন তারা দেখেনি, পরবর্তী খন্ডিত বায়ান্নতেও তাদের কপালে জুটেনি। অর্থাৎ তাদের এই পঁচাত্তর বছর কেটেছে হাই কাউন্টারের horse shoe লাগানো বুটের লেফট রাইটের উগ্র মিলিটারী মেজাজ।,
রাষ্ট্র পরিচালনার রথ যাত্রায় এটা তাদের পরম্পরা বা হেরিডিটি বললেও ভুল বলা হবে না। কারন অবশ্য একটা আছে। আত্মপ্রকাশের পর হতে মোটামুটি চার পাঁচ বছর ধরে এই নবীন রাষ্ট্রটিকে সামরিকভাবে মজবুত করার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পোড় খাওয়া দুজন বৃটিশ জেনারেলের অধিনায়কত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। স্বাধীন পাকিস্তানের প্রথম সেনা প্রধান ছিলেন জেনারেল ফ্রাঙ্ক মেসার্ভি। তার নেতৃত্বেই ১৯৪৭-৪৮ সালে কাশ্মীর দখলের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। বলা যায় আজকের বাস্তবতায় সৃষ্ট ভারত-পাকিস্তানের এলওসি বা line of control ফ্যাসাদের মূল কমান্ডার কিন্তু সেই বৃটিশরাই। পাকিস্তানের দ্বিতীয় সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল ডগলাস গ্রেসি। মোটকথা ১৯৫১ সাল অব্দি পাকিস্তান সেনাবাহিনী কোন native সেনাপ্রধান দ্বারা পরিচালিত হয়নি। সেক্ষেত্রে জেনারেল আইয়ুব খান ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর প্রথম পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত সর্বাধিনায়ক হিসাবে সামনে আসেন। জেনারেল আইউব খান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বৃটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল ছিলেন। সাতচল্লিশের দেশ স্বাধীনকাল তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার হিসাবে যোগদান করেন। লক্ষ্য করা যায়, রাষ্ট্র পরিচালনায় পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই একটি মিলিটারি মেজাজের রাষ্ট্র ব্যবস্থার আবহ সৃষ্টি হয়। সম্ভবত বৃটিশ দুই জেনারেল পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সেই মেজাজের মন্ত্রগাঁথায় পোক্ত করে দেন।
এধরনের বাস্তবতায় পাকিস্তান রাষ্ট্রটির পরিচালন ব্যবস্থায় একটা সামরিক মেজাজের আবহ তার জন্ম লগ্ন থেকেই বিস্তার ও বিরাজমান হয়। কারন, পাঁচটি রাজ্য সমন্বয়ে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রটিতে জাতিগত ও ভাষাগত বিভেদের একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী আবেদন ছিল। উষ্ণ মরুভূমি, পাহাড়ি বাঞ্জারান গোষ্ঠী, সমতলের জনপদ এবং বিশেষ করে দু'হাজার কিলোমিটার দূরের সম্পুর্ন ভিন্নভাষী ও ভিন্ন জাতিগোষ্টীর এক অচেনা জাতিস্বত্ত্বা দিয়ে সৃষ্ট এই পাকিস্তানের পত্তনটাই হয়েছিল একটা গোঁজামিলের মধ্য দিয়ে। ফলে আঞ্চলিক রাজনীতির সবলতা এবং কেন্দ্রীয় রাজনীতির দুর্বল অবস্থানের সুযোগে পাকিস্তান নামক ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বার রাষ্টটিতে সামরিক বাহিনীর অপরিহার্যতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। আর এই সুযোগটা পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী বেশ পারঙ্গমতার সাথে গত পৌঁনে এক'শ বছর বেশ দাপটের সাথেই ভোগ করে আসছে। মোটকথা জনগন তাদের অস্তিত্বের আঁতুড় ঘর খোঁজার পথে নিজেদের পায়ের মাটি শক্ত করার মানসে যখন শক্ত কোমরে দাঁড়াতে চাইলো তখন পাকিস্তান ভিত্তিক রাজনীতির সমগ্রতায় কোন শক্ত আস্তানা খুঁজে না পেয়ে সামরিক জোশের উচ্চাভিলাষেই তৃপ্ত হোল তারা। তাছাড়া বেসামরিক প্রশাসনের কেন্দ্রে থাকা পাঞ্জাব লারকানা ভিত্তিক সামন্ত প্রভুত্বের ভুস্বামীদের কাছে দেশের সাধারন মানুষের চাইতে ক্ষমতার পোষাকী উঠানটিই পছন্দসই হয়েছিল। ফলে সৃষ্টির সূচনা লগ্নেই পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি জনগনের না হয়ে ওই সমস্ত পোষাকী শক্তিমান ব্যারাকের মানুষ এবং উপরতলার মাথাওয়ালা সামন্ত জমিদার ভূস্বামীদের করতলগত হয়ে পড়ে।
সৃষ্টির সূচনালগ্নেই উচ্চাভিলাষী সামরিক সর্বাধিনায়ক ফিল্ড মার্শালের কাছে পাকিস্তানের গনতান্ত্রিক চর্চা ব্যারাক বন্দি হয়। গনতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক চাহিদার শর্তগুলি রাষ্ট্র কর্তৃক পুরন না হলেও পশ্চিমা যুদ্ধবাজ ধনবাদী রাষ্ট্র সমূহের বিশেষ আশীর্বাদে পাকিস্তানের দৃশ্যমান বহুমাত্রিক উন্নয়ন ঘটে। ফলে দেশের সাধারন মানুষ পাকিস্তানের এই কৃত্রিম চাকচিক্যে একটা ঘোরের আচ্ছন্নে থেকে পাকিস্তানের চলমান অগনতান্ত্রিক বুটেড স্যুটেড ও বন্ধুকের নলের সরকারকে নিয়ে বেশী মাথা ঘামাতে চায় নি। কিন্তু আগেই বলেছি পাকিস্তানের আঞ্চলিক রাজনীতির পরিপুষ্টতা কিছুটা হলেও নিজের মত করে তাদের স্বকীয়তার পথে পা বাড়িয়ে রেখেছিল। বিশেষ করে পুর্বাঞ্চলের বাঙালী জাতীয়তাবাদের পুর্ব পাকিস্তানীরা তাদের আপন অস্মিতায় ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিল। ওদিকে পশ্চিমের এক উচ্চাভিলাষী নেতাও তার আপন ক্যারিশমায় সেখানকার জনগনকে সামরিক বেষ্টিত দেশের তকমা ঝেড়ে ফেলে পাকিস্তানকে একটি জনকল্যানমুলক রাষ্ট্রে পরিনত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ফলে দুই পারের দুই নেতার জনপ্রিয়তার তোড়ে পাকিস্তানী সেনাপতিরা ক্ষমতার তালগাছটা নিজের পকেটে রাখার মানসে অখন্ড পাকিস্তানকে খন্ড বিখন্ড করে হলেও তাদের চর্চিত পথ থেকে সরে দাঁড়ায় নি। সেক্ষেত্রে পুর্ব পাকিস্তানের বাঙালী অংশ অখন্ড পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের বাংলাকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ হিসাবে অভ্যুদয় ঘটায়। পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ তার গনতান্ত্রিক যাত্রায় স্বাধীন সার্বভৌম গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। বিদ্ধস্ত পাকিস্তান তার পশ্চিমাংশের অবশিষ্ট চারটি রাজ্য নিয়ে গনতান্ত্রিক অভিযাত্রায় যাত্রা শুরু করেছিল বটে তবে সামরিক তন্ত্রের সেই পুরনো রশির টান তাদের পিছু ছাড়ে নি।
সামরিক সেনাপতিদের প্রচন্ড উত্তাপ নিয়েও পাকিস্তান রাষ্ট্রটি তাদের জনপ্রিয় নেতা জুলফিকার আলি ভুট্টোর নেতৃত্বে সামনের দিকে এগোতে চেয়েছিল। কিন্তু উচ্চাভিলাষী সেনাধ্যক্ষদের ক্ষমতালিপ্সু দৃষ্টি যখন দেশ শাসনের কুরশির দিকে ঘুরাফিরা করে তখন নিরস্ত্র অসহায় জনতার মুষ্টিবদ্ধ হাত চুপসে গিয়ে বন্ধুকের নলে লাগানো চকচকে বেয়োনেটকে কুর্নিশ করা ছাড়া উপায় থাকে না। একসময় ক্ষমতার দম্ভে উড়নচন্ডী পাক সেনা শাসকগোষ্টী একাত্তরের ঝাল মিটাতে গিয়ে তাদের একসময়ের দোসর জনপ্রিয় বেসামরিক নেতা ভুট্টোকেও ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে কুন্ঠা বোধ করে না। পাকিস্তানে সৃষ্ট তথাকথিত গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সামরিক শক্তি তাদের প্রকাশ্য আচরনেই দেশের কর্তৃত্বের লাগাম এভাবেই নিজ হাতে রেখে তাদের অস্তিত্বের জানান দেয়। বলা হয়ে থাকে দেশের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র নীতি ঠিক হয় পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্টে। এমনকি বেসামরিক রাষ্ট্রপতি, নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদ এবং সিভিল প্রশাসন থাকা সত্বেও পাকিস্তানের প্রশাসনিক গুরুত্বপুর্ণ পদায়নে পোষাকধারীদের আধিক্য চোখে পড়ার মত। শুধু তাই নয় বেসামরিক নির্বাচন ব্যবস্থায় ক্ষমতায়নের বিষয়টিও সামরিক সহমতের সমঝোতায় বন্দোবস্ত করা হয়। সেক্ষেত্রে ব্যারাকের পোষাকী সেনাপতিদের গুডবুকে না থেকে পাকিস্তানের জনকল্যানে রাজনীতি ও রাজ্য শাসন দুটোয় অলীক ব্যাপার বলে বোদ্ধারা বলে থাকেন। বিগত পঁচাত্তর বছরের পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনীতি শাসননীতি ও দেশনীতিতে তাইই বলে।
পাকিস্তানে ইমারান খানের রাজনীতির বয়স খুব বেশী নয়। তবে হাঁটতে চলতে এবং ক্রিকেট খেলার নেতৃত্ব দানের ঘাত প্রতিঘাতে তিনি পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির রাজনীতির অন্দর মহলের পাঠটা সন্তর্পনেই নিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে হয়। সেক্ষেত্রে তার চলন বলনের সুরত হাল বলে যে তিনি মুদ্রার অপর পীঠের সুক্ষ্ম চোরাগলি গুলোকে খুব বেশী ধর্তব্যে নেন নি। বলা হয়ে থাকে তার রাজনীতির সাফল্য গাঁথা এবং ক্ষমতারোহনের পথটি তিনি যথারীতি পোষাকী ঘরানার গ্রীন সিগন্যালেই পেয়েছিলেন। কিন্তু একজন অক্সফোর্ড গ্রাজুয়েট এবং খেলার মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক নিজ দেশের জনগনকে নিয়ে যখন স্বপ্নবাজ হন এবং সে দেশের জনগনের হাকিকি আযাদীর ডাক দেন তখন বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে রাজনীতিকে কতটা স্বচ্ছতায় গ্রহন করলে তিনি জনতাকে সম্পৃক্ত করে এই স্বপ্নের জাল বুনেন। তিনি যে পাকিস্তানী সামরিক প্রেস্ক্রিপসনের গদবাঁধা রাজনীতির মোড়কে বা ছাঁচে আবদ্ধ থাকতে চাইবেন না সে হিসাবটি বোধ হয় ব্যারাকের ক্ষমতাধর অধিনায়করা ঠাউর করতে পারেন নি। ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানের আম জনতা ও তরুন প্রজন্মের বাঁধভাঙ্গা সমর্থনে ইমরান খান হাকিকি আযাদী বা সত্যিকারের স্বাধীনতার মাধ্যমে নতুন পাকিস্তান গড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। তার এই স্বপ্নের বোলচালে পাকিস্তানের আদি বন্ধুর ইশারা এবং ব্যারাকের পোষাকীদের প্রচ্ছন্ন গ্রীন সিগন্যালে পরাজিত সামন্ত প্রভুর দল জোটবেঁধে ইমরানকে একসময় ক্ষমাচ্যুত করে।
পাকিস্তানের মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছিল গত সত্তর বাহাত্তর বছরের এই সামরিক ও আধা-সামরিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায়। বলা হয়ে থাকে সে দেশের মোট জিডিপির ৩০-৩৫ শতাংশই সামরিক বাহিনীর করতলে। অর্থাৎ দেশের শিল্প শিক্ষা স্বাস্থ্য বাণিজ্য থেকে শুরু করে দেশ পরিচালনার সর্বক্ষেত্রে তাদের এই ৬-৭ লক্ষ ফৌজির সগর্ব উপস্থিতি দেশের বিশ কোটি সাধারন মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। তাছাড়া তাদের গুডবুকে থেকে সামন্ত ভূস্বামীর তথাকথিত রাজনীতির চালকেরা গত পৌঁনে এক'শ বছরে দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। আর কাশ্মীর জুজুর অজুহাত তৈরী করে ভারতের সাথে বৈরী আচরনে দেশকে যুদ্ধংদেহী রেখে সাধারন জনগনকে একটা ইসলামী ফোবিয়ার ঘোরে রেখেছেন। ইমরান খান এই শক্ত দেয়াল ভেঙ্গে পাকিস্তানকে প্রকৃত অর্থে জনকল্যান মুলক একটি রাষ্ট্র হিসাবে গড়তে চেয়েছিলেন। জনগনের গনতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে মসৃণ করতে চেয়েছিলেন। ইসলামিক উম্মাহ ও প্রকৃত মদিনা সনদের আলোকছটায় দেশকে এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। সুতরাং গাত্রদাহ তো সর্ব মহলেই শুরু হয়েছিল। ইমরানের এই উত্থানে বিগত সাত দশক ধরে অনৈতিক পথচলায় খেয়ে পরে হৃষ্ট পুষ্ট দেশের প্রতিটি অঙ্গ আজ অশনির শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। ইমরান খানের নেতৃত্বে দেশের তরুন প্রজন্ম ও আমজনতার সামগ্রিক সম্পৃক্ততায় আজ তাদের সাধের দেউয়ানী খাস কাচের ভঙ্গুরতায় খসে পড়ার প্রমাদ গুনছে। ফলে তাদের শেষ অস্ত্র সেই ফিল্ড মার্শাল বা জেনারেল ফ্রাঙ্ক মেসার্ভি সাহেবদের মাথা ও মগজের বড্ড প্রয়োজন। সম্ভবত: সে আয়োজন বোধ হয় আমার এই লেখা প্রকাশের আগেই হয়ে যাবে। এসবের ড্রেস রিহার্সাল তো ৯ মে,২০২৩ থেকেই শুরু হয়ে গেছে।
পৃথিবীর দুর্ধষ্য সেনাবাহিনী ও ভূখন্ডের সামন্ত প্রভুদের বাধা টপকিয়ে রাষ্ট্র নায়ক ও রাজনীতিক হিসাবে ইমরান খান কতটুকু সফল হয়েছেন বা সামনে কতটুকু এগোতে পারবেন তা সময়ই বলে দিবে। তবে একজন সফল রাজনীতিকের বিচক্ষনতায় তিনি যেভাবে একটি জনপদে তাদের আত্ম নিয়ন্ত্রনের অধিকার এবং গনতন্ত্র ও রাজনৈতিক সচেতনেতার উদ্দীপনা সৃষ্টি করে দিলেন তা অবিস্মরনীয় হয়ে থাকবে। মৌলিক অধিকার ও আত্ম নিয়ন্ত্রনের যে শলাকা পাকিস্তানী জনগনের মাঝে তিনি জ্বালিয়ে দিলেন তার উত্তাপ ও আবেদন সূদুর প্রসারী। গত সাত দশক ধরে পাকিস্তানের তথাকথিত ভূস্বামী রাজনীতিক ও পোষাকী ব্যারাকের সিপাহীরা নিজেদের মত করে যে গনতান্ত্রিক মিক্সচার বানিয়ে দেশ শাসনের পাটাতন তৈরী করে রেখেছিলেন তা ভেঙ্গে যাওয়টা এখন সময়ের ব্যাপার। সিপাহী জনতা ভাই ভাই এর অমসৃন ও অগনতান্ত্রিক পাটাতন তৈরী করে যে শাসন ব্যবস্থায় পাকিস্তানকে গত সাত দশক ধরে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত করছে তা থেকে বেরিয়ে আসার আলোকবর্তিকা পাকিস্তানী জনগন পেয়ে গেছেন। পাকিস্তানী জনগন ও ইমরান খানের রাজনীতির পেন্ডুলাম এখন একই সরল রেখায় চলমান এক গন্তব্যের নাম। এই গন্তব্যে পৌঁছানোর শেষ বাঁশির শব্দ শুনার অপেক্ষায় আমরা বিশ্ববাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।