৪১ বছরে ৫০০ সন্তানের বাবা, থামতে বললেন এক সন্তানের মা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ এপ্রিল,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নেদারল্যান্ডসে ৪১ বছর বয়সেই এক ব্যক্তি পাঁচ শতাধিক সন্তানের বাবা হয়েছেন বলে দাবি করেছে দেশটির ডোনারকাইন্ড ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা। সংস্থাটি মূলত শুক্রাণু দানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের উৎস খুঁজতে সহায়তা করে।
দেশটির দেহ হাগ-ভিত্তিক সংস্থা ডোনারকাইন্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি একজন ‘ক্রমিক দাতা’, দেশে ও বিদেশে শুক্রাণু দিতেন। সম্প্রতি ওই ব্যক্তির এক সন্তানের মা তাঁর শুক্রাণু দান বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকে যেন আর শুক্রাণু দানের অনুমতি দেওয়া না হয় এই আরজি জানিয়ে একজন নারী দেশটির একটি আদালতে আবেদন করেছেন।
নেদারল্যান্ডসের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসারে, একজন শুক্রাণুদাতা সর্বোচ্চ ২৫ জন সন্তানের বাবা হতে পারবেন। শিশুর মানসিক সমস্যা এড়াতে এই সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তবে শুক্রাণু দানের মাধ্যমে এর চেয়ে বেশি সন্তানের জন্ম দিলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে না।
কর্তৃপক্ষ বলছে, জোনাথন এম নামের ওই শুক্রাণুদাতাকে ২০১৭ সালেই ডাচ সোসাইটি অব অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গাইনোকলজি (এনভিওজি) আর শুক্রাণু না দিতে সতর্ক করেছিল। সেই সময় পর্যন্ত তিনি ১১টি হাসপাতালে মোট ১০২ সন্তানের বাবা হয়েছিলেন। আর সতর্কবার্তা পেয়েও তা নাকচ করে তিনি নিয়মিতভাবে শুক্রাণু দান করে গেছেন।
জোনাথনের দাবি, একজন সংগীত শিল্পী হিসেবে তিনি তাঁর জেনেটিক অবদান সচল রাখার জন্য দেশে-বিদেশে শুক্রাণু দান করেন।
ডোনারকাইন্ড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান টাইস ভ্যান ডার মীর বলেন, তাঁর সংস্থা চলতি সপ্তাহে ৩০ জনেরও বেশি মায়ের একাধিকবার ফোন কল পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ওই সব মায়েরা বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ফোন করেছিলেন। তাঁদের সন্তান একই দাতার শুক্রাণু থেকে হচ্ছে কিনা-এই নিয়ে তাঁরা সবাই চিন্তিত।’
টাইস ভ্যান ডার মীর বলেন, ‘জোনাথন তাঁর সন্তানের সত্যিকারের সংখ্যা উল্লেখ করেননি। তিনি নিজে জোনাথনের ৫০০ সন্তানের কিছু মায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন।’
দুই বছর আগে অচেনা দাতার কাছ থেকে শুক্রাণু নিয়ে কন্যা সন্তানের মা হয়েছিলেন নেদারল্যান্ডসের ইনেস এম নামের ৩৮ বছর বয়সী এক নারী। তিনি বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে লড়াই করে যেতে হবে। এই বিষয়টি কতটা কষ্টের তা আমি কল্পনা করতে পারি।’ ১৬ বছর বয়স হলে তাঁর মেয়ে ওই শুক্রাণু দাতার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডোনারকাইন্ড ফাউন্ডেশন বলছে, ‘বর্তমানে দাতার পরিচয় গোপন রাখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। কারণ এতে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য শিশুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা খুব জটিল হয়ে দাঁড়ায়। টাইস ভ্যান ডার মীর বলেন, ‘অজ্ঞাতনামা’ শিশুর অধিকারের বিরুদ্ধে যায়।
ডোনারকাইন্ড ফাউন্ডেশন নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষকে জোনাথনের ইতিমধ্যে সংরক্ষিত নমুনা ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে যেসব নারী জোনাথনের শুক্রাণু নিয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এবং তাঁদের সন্তানকে আরও একটি ভাইবোন দিতে চান, কেবল তাঁদেরকে ওই সংরক্ষিত নমুনা থেকে তা দেওয়া যেতে পারে। প্রতিবার শুক্রাণু দানের জন্য দাতাকে ১০ থেকে ২০ ডলার পর্যন্ত দেয় নেদারল্যান্ডসে সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালগুলো।