পর্যটকদের জন্য আগামীকাল থেকে উন্মুক্ত রেপটাইলস ফার্ম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১ জানুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:২৬ এএম, ৯ অক্টোবর,
বুধবার,২০২৪
ভ্রমনপিপাসুদের জন্য সুখবর৷ আগামীকাল থেকে পর্যটকদের জন্য খুলছে রেপটাইলস ফার্ম ৷ সম্প্রতি ব্যবস্হাপনা পরিচালক এনাম হক তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই সুখবর৷ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলেও মেনে চলতে হবে সতর্কতা বিধি এবং স্বাস্থ্যবিধি।
খামারটিতে প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১৫০ টাকা। শিশু ( ৩ থেকে ৮ বছর ) ১০০ টাকা।
ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে ভালুকার ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশ দিয়ে বামে বাঁক নিলে উথরা বাজার। বাজারের পথ ধরে খানিকটা এগুলে নজরে পড়ে খামার। গরু কিংবা হাঁস-মুরগীর নয়, কুমিরের। খামারে চাষ করা কুমিরেরা কখনো জলে, কখনোবা জল থেকে ওঠে দল ডাঙায় জড়ো হয়ে থাকে।
উথরায় রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেডের যাত্রা শুরু ২০০৪ সালের মাঝামঝিতে। বিশ্ব বাজারে কুমিরের চামড়া, মাংস, হাড়, দাঁতের বেশ কদর, দামও চড়া। ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি কিংবা এশিয়ার চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এগুলোর ব্যাপক চাহিদা।স্থানীয়া প্রায়ই খামারে ঘুরতে আসেন কৌতুহলবশত। তাদের মতে কুমিরের খামার পর্যটনের একটি আকর্ষনীয় কেন্দ্র হতে পারে। আর পর্যটন খাতের থেকে আয়কৃত অর্থ দিয়ে হতে পারে কুমিরগুলোর লালন পালনের খরচের ব্যবস্থা। এভাবে আন্তর্জাতিক মানের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ খামার খোদ বাংলাদেশেই পরিচালিত হতে পারে এমনটাই মনে করছেন ফার্মের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিষদের চেয়ারম্যান নাইম আহমেদ এবং ব্যবস্হাপনা পরিচালক।
কুমিরের খামারে ঢুকতেই চোখে পড়বে বিশাল কয়েকটি পুকুর। এসব পুকুরে চাষ হচ্ছে মাছ। মাছের খাবারে কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার হয় না। পাশেই রয়েছে সবজি ক্ষেত। মৌসুমভেদে শাক ও সবজি ফলানো হয় এখানে। আরও উৎপাদন হয় মৌসুমি ধান ও গম। রয়েছে দেশীয় ফলের সমাহার। আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, ডাব- কী নেই এখানে। পরিকল্পনা রয়েে অবকাশ যাপনের ব্যবস্হা করার। যেখানে আতিথেয়তার আয়োজন থাকবে। থাকবে বিভিন্ন ধরনের ফসল, শাকসবজি, ফলমূল অন্যদিকে পুকুরের মাছ, গরু-হাঁস-মুরগি খামার। বাচ্চারা প্রকৃতি ও গাছপালার সঙ্গে পরিচিত হবে। ফ্রেশ এবং নির্ভেজাল ফলমূল, শাকসবজি, নিজ হাতে গাছ থেকে পাড়বে। যেটি শান্ত, নিরিবিলি আর সবুজে আচ্ছাদিত একটি জায়গা, যেখানে মানুষ দূষণমুক্ত হাওয়ায় তৃপ্তি সহকারে প্রশান্তি অনুভব করতে পারবে।পর্যটকরা বুকিংয়ের মাধ্যমে সেখানে বিনোদনের জন্য দিনভর প্রোগ্রামের যোগ দেবে।
অবশ্যই পর্যটন হিসেবে খামারকে উন্মুক্ত করার আগে কুমিরের প্রজনন স্বাস্থ্য, ডিম পাড়ার সময়ে কোলাহলমুক্ত পরিবেশ রাখা, এমনকি একাধারে দর্শনার্থী ও কুমিরের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সিসিটিভিসহ নানারকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া কথা নিশ্চিত করছ খামারটির প্রান পুরুষ আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কুমির বিশেষজ্ঞ এনাম হক। তার কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক দিক নির্দেশনার জন্য আজ মৃতপ্রায় খামারটির প্রান ফিরতে শুরু করছে। আশা আলো দেখছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।
রেপটাইলস ফার্মে পর্যটনে অপার সম্ভাবনা বিরাজমান। পর্যটনের জন্য প্রয়োজন অবকাঠামো গড়ে তুলতে দরকার সমন্বিত পরিকল্পনা । পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবপক্ষকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে প্রচার-প্রচারণার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। পাশাপাশি পর্যটনে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এনাম হকের হাত ধরে সঠিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে রেপটাইলস ফার্ম অন্যতম ভূমিকা পালন করতে পারবে সকলে আশাবাদী ।
শহরের যান্ত্রিক এক ঘেয়েমি জীবন থেকে প্রাকৃতিক শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে ভ্রমনের রেপটাইলস ফার্মে হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।