মৃত্যুর আগে মানুষের চোখের সামনে পুরো জীবনের চিত্র ভাসতে থাকে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ অক্টোবর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৪ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মৃত্যুর আগে মানুষের চোখের সামনে তার পুরো জীবনের চিত্র ভাসতে থাকে। বিজ্ঞানীরা এমন বিষয়ে আগে থেকে কোনো পরিকল্পনা না করেই দুর্ঘটনাবশত এমন তথ্য জানতে পেরেছেন। বিজ্ঞানীদের একটি দল ৮৭ বছর বয়সী একজন রোগীর মস্তিষ্কের তরঙ্গ পরিমাপ করতে কাজ করছিলেন। ওই রোগী মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, স্নায়বিক রেকর্ডিংয়ের সময় একটি মারাত্মক হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন ওই রোগী। সেই সময়ে একটি মৃত মস্তিষ্কের অপ্রত্যাশিত রেকর্ডিং পান বিজ্ঞানীরা।সেখানে ৩০ সেকেন্ড আগে ও পরের মস্তিষ্কের রেকর্ডে দেখা গেছে যে, মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গগুলো স্বপ্ন দেখা বা স্মৃতি স্মরণ করার মতো একই প্যাটার্ন অনুসরণ করেছে।
এই ধরনের মস্তিষ্কের কার্যকলাপে বোঝা যায় যে, একজন ব্যক্তি শেষ মুহুর্তে চূড়ান্ত 'জীবনের স্মরণ' করছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং নিউরোসায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার সহ-লেখক ডঃ আজমল জেম্মার বলেছেন যে, কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে অবস্থিত দলটি দুর্ঘটনাক্রমে যা পেয়েছিল তা ছিল মৃত মস্তিষ্কের প্রথম রেকর্ডিং।
তিনি বলেছিলেন, 'এটি আসলে সম্পূর্ণভাবে ঘটনাক্রমে হয়েছিল, আমরা এই পরীক্ষাটি করার বা এই সংকেতগুলো রেকর্ড করার পরিকল্পনা করিনি।'
তাহলে আমরা কি মৃত্যুর আগে প্রিয়জনদের এবং অন্যান্য সুখ স্মৃতির এক ঝলক দেখতে পাব? ডাঃ জেম্মার বলেন, এটা বলা অসম্ভব।
ডাঃ জেমার এখন লুইসভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিউরোসার্জন। তিনি বলেন, রোগীর হৃদয় মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করার ৩০ সেকেন্ড আগে তার মস্তিষ্কের তরঙ্গগুলো একই প্যাটার্ন অনুসরণ করে। যেমন মনোযোগ দেওয়া- স্বপ্ন দেখা বা স্মৃতি স্মরণ করা। রোগীর হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বন্ধ হওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকে। এরপর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তিনি বলেন, 'এটি সম্ভবত আমাদের জীবনের অভিজ্ঞতার স্মৃতিগুলোর একটি শেষ স্মরণ হতে পারে এবং সেগুলো আমাদের মৃত্যুর আগে শেষ সেকেন্ডে মস্তিষ্কের খেলা করে।'
এই গবেষণায় দেখা গেছে যে, ঠিক কখন জীবন শেষ হয়, কখন হৃৎপিণ্ড স্পন্দন বন্ধ করে বা মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে।
ডাঃ জেমার এবং তার দল সতর্ক করে দিয়েছেন যে, একজনের গবেষণা থেকে বিস্তৃত সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। রোগীর মৃগীরোগ ছিল, তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং স্ফীত হওয়ার বিষয়টি আরও জটিল করে তোলে।
২০১৬ সালে প্রথম রেকর্ডিংয়ের পর তিনি কয়েক বছর ধরে এই বিষয়ে গবেষণার জন্য এমন আরও রেকর্ড করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।