অর্থাভাবে মালয়েশিয়ার মর্গে পড়ে আছে বাংলাদেশির লাশ, স্ত্রীর আকুতি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ মার্চ,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৫ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী আঃ কাইয়ুম (৫৫) নামে ১ বাংলাদেশির লাশ মালয়েশিয়ার একটি হসপিটালের মর্গে পড়ে আছে। এই অবস্থায় মরদেহটি দেশে ফেরত পাঠাতে হলে যে লাখ টাকার প্রয়োজন সে অর্থ পরিবারের পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। লাশ দেশে ফেরত পাঠাতে সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করাসহ কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম দেশ বিদেশের সকল বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মৃত আঃ কাইয়ুম ২০০৮ সালের কলিং ভিসায় চাকুরী নিয়ে মালয়েশিয়ায় যান। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার মাঝিকারা গ্রামের বাসিন্দা এবং তার পিতার নাম মোঃ কফিল উদ্দিন। আঃ কাইয়ুম গত শনিবার দুপুর ১২ টায় অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা গেছেন। তিনি কুয়ালালামপুর দামানসারা উতমা এলাকায় বসবাস করতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ রাসেল শিকদার প্রতিবেদককে বেলন, আমি কাইয়ুমের হার্ট অ্যাটাকের খবর পেয়ে তার বাসায় গিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। তিনি আরো বলেন, এর আগের দিন করোনা পরীক্ষা করা হলে তার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।
কাইয়ুমের স্ত্রী ও ২ মেয়ে সন্তান রয়েছে। মালয়েশিয়া চাকুরী করে বিভিন্ন কারণে প্রতারিত হয়ে তিনি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেননি। এমনকি কি দেশের বাড়িতে নিজের কোন ভিটার জায়গা বা জমি নেই। ভিসা করতে না পারায় মারা যাওয়ার সময়ের তার বৈধ ভিসা ছিল না। এজন্য তার মরদেহটি দেশে পাঠাতে দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে। মালয়েশিয়ায় তার নিকট কোন আত্মীয় না থাকায় যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করণে এগিয়ে এসেছে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা এসোসিয়েশন ও মালয়েশিয়া প্রবাসীবৃন্দ।
কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর পর আমি এখন খুবই অসহায়, ১২-১৩ বছর প্রবাসে থেকেও নিজের থাকার বাড়িটিও করতে পারেনি। সে বিএ পাশ ছিল এবং ভারী কোন পরিশ্রমের কাজ করতে পারতো না, আমার কোন ছেলে নেই এখন ২ মেয়ে নিয়ে আমি কোথায় যাব কি করবো?।
তিনি বলেন, কাইয়ুমের একসময় জায়গা জমি সবই ছিল এখন কিছুই নেই, আমি এখন আমার বাপের বাড়িতে থাকি। কাইয়ুমের এখনও ৭-৮ লাখ টাকার ঋন আছে এগুলো কিভাবে পরিশোধ করবো চোখে মূখে অন্ধকার দেখছি, তাই সকলের কাছে আন্তরিক সহযোগিতা চাই।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এসোসিয়েশন এর সভাপতি মোঃ নাজমুল ইসলাম বাবুল বলে, আসলে একসময় কাইয়ুমের আর্থিক অবস্থায় ভাল ছিল বিভিন্ন কারণে তার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বর্তমানে তার পরিবারের অবস্থা খুবই দরিদ্র, তাই আমাদের সংগঠনের সদস্যসহ সকল প্রবাসীর কাছে অর্থ সহযোগী চাওয়া হয়েছে। তার মরদেহটি দেশে ফেরত পাঠাতে ১ লাখ টাকার প্রয়োজন, তাছাড়াও তার পরিবার কে চলার মত কিছুটা সহযোগিতা করা প্রয়োজন।