৫০ হাজার টাকার উচ্চ বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে নারী পাচার
৫০ হাজার টাকার উচ্চ বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে নারী পাচার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ আগস্ট,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২৪ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ছবি প্রতীকী
মোছা. শামীমা আক্তার, শংকর বিশ্বাস, শেখ হানিফ মিয়া ও জুয়েল হোসাইন। ওরা উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সহজসরল ও সুন্দরী নারীদের দুবাই পাচার করত। কেউ রাজি হলে চক্রের সদস্যরাই নিজ খরচে পাসপোর্ট ও ভিসা করে নারীদের দুবাইয়ে নিয়ে যেত।
দুবাইয়ে গিয়ে এসব নারীকে জোরপূর্বক অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত চক্রটি। র্যাব রবিবার এ চার সদস্যকে গ্রেফতার করে। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৩-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রাণী দাস। তিনি বলেন, রাজধানীর ডেমরা, কেরানীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এলাকা থেকে নারী পাচারকারী চক্রের এই চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার। তবে এ চক্রের হোতার অবস্থান দুবাইয়ে। র্যাব তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনতেও কাজ করছে।
এক ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শামীমা আক্তার ভুক্তভোগীর বান্ধবী। শামীমার সঙ্গে দুবাই প্রবাসী অপুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব ছিল। অপু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে বেড়াতে এলে সুমাইয়া (ছদ্মনাম) ও শামীমার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় দেখা করে। অপু তখন ভুক্তভোগীকে দুবাই শপিংমলে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখায়। অপুর প্রস্তাবে সুমাইয়া রাজি হলে অপু ভুক্তভোগীকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে।
উচ্চ বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে নারী পাচার
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, শামীমা গোপনে সুমাইয়ার পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। এরপর অপু নারী পাচার চক্রের হোতা দুবাই প্রবাসী কামাল হোসাইনের মোবাইল নম্বর সুমাইয়াকে দেয়। কামাল সুমাইয়াকে রাজধানীর পল্টন মেসার্স মেহরাব এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্টের টিকিট ম্যানেজার শেখ হানিফ মিয়ার কাছে পাসপোর্ট জমা দিতে বলে।
বীণা রাণী দাস বলেন, গ্রেফতারকৃত জুয়েল হোসাইন দুবাই প্রবাসী। সে শেখ হানিফ মিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুবাই প্রবাসী চক্রের হোতা কামাল জুয়েলেরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ঘটনার সময় জুয়েল দুবাই ছিল। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসে। কামাল দুবাই থেকে জুয়েলের মাধ্যমে সুমাইয়ার দুবাই যাওয়ার খরচ বাবদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হানিফের কাছে পাঠায়। হানিফ ও তার কর্মচারী গ্রেফতারকৃত শংকর সুমাইয়ার তিন মাস মেয়াদি দুবাইয়ের টুরিস্ট ভিসা এবং বিমানের টিকিট করে দেয়। এরপর কামাল সুমাইয়াকে জানায় তার ভিসা ও টিকিট তৈরি হয়ে গেছে এবং ২৮ এপ্রিল দুপুরে হানিফের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়। ভুক্তভোগী তার মা ও বোনকে কিছু না জানিয়ে গত ৩০ এপ্রিল রাতে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছলে কামাল সুমাইয়াকে তার বাসায় নিয়ে তার পাসপোর্ট কেড়ে নেয়। এরপর কামাল ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করায়। সুমাইয়া তাতে রাজি না হলে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। ভুক্তভোগী নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানান।
এরপর সুমাইয়ার মা র্যাব-৩-এ তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য অভিযোগ জানান। অপু প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে তোলেন। এরপর তাদের উচ্চ বেতনে দুবাইয়ে চাকরির প্রলোভন দেখান। প্রলোভনে রাজি হলে কামাল নিজ খরচে বিভিন্ন মেয়েদের টুরিস্ট ভিসায় দুবাই নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে। বর্তমানে সুমাইয়ার সঙ্গে তার মা যোগাযোগ করতে পারছেন না। গ্রেফতারকৃতদের নামে পল্টন থানায় মামলা