মা-বাবা-বোনকে হত্যার পর ৯৯৯- এ ফোন দিয়ে স্বামী ও সন্তানকে হত্যার হুমকি
মা-বাবা-বোনকে হত্যার পর ৯৯৯- এ ফোন দিয়ে স্বামী ও সন্তানকে হত্যার হুমকি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ জুন,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৪৭ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বাবা, মা ও বোনকে হত্যার পর ৯৯৯-এ ফোন দিয়েছিলেন ঘাতক মেহজাবিন ইসলাম মুন। এরপর পুলিশকে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। অন্যথায় স্বামী ও সন্তানকেও মেরে ফেলার হুমকি দেন।
ওয়ারী জোনের ডিসি ইফতেখারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মেহজাবিন হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে ফোন দেয়। পুলিশ দ্রুত না গেলে তার স্বামী ও সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছে।
ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, সঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে না গেলে দ্বিতীয় স্বামী শফিকুল ইসলাম ও আগের ঘরের মেয়ে তৃপ্তিয়াকে হয় তো মেরে ফেলতেন তিন খুনে অভিযুক্ত মেহজাবিন।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতে বাবা-মা ও বোনকে হত্যা করেন মেহজাবিন। এরপর সকাল ৮টার দিকে ৯৯৯-এ ফোন করেন তিনি। এ সময় তিনি জানান, পুলিশ দ্রুত না আসলে স্বামী ও সন্তানকে তিনি মেরে ফেলবেন।
এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। আর আহত অবস্থায় তার স্বামী ও মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
শনিবার সকালে কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার ২৮, লালমিয়া সরকার রোডের ছয় তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে মেহজাবিনের মা মৌসুমী ইসলাম (৪০) বাবা মাসুদ রানা (৫০) ও বোন জান্নাতুলের (২০) লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান মেহজাবিন। সবাই অচেতন হয়ে পড়লে মা-বাবা ও বোনকে রশি দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। স্বামী ও শিশু সন্তানকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। তবে তারা অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন।
কদমতলী থানার ওসি জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মরদেহগুলো হাত পা বাঁধা অবস্থায় পেয়েছি। গতকালকে রাতে তাদের হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করেছে তাদেরই আরেক মেয়ে। সেই মেয়েকে আটক করা হয়েছে।’
এদিকে নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কেরানিগঞ্জে মেহজাবিনের প্রথম বিয়ে হয়েছিল। সেই স্বামীকে খুনে দায়ে তার জেল হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি তারা।
ঘাতকের চাচাতো বোন শিলা যুগান্তরকে বলেন, মেহজাবিন তার পরিবারের সবাইকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। সে তার আগের ঘরের স্বামীকেও খুন করেছিল। সেই মামলায় মেহজাবিনসহ তার নিহত বাবা-মা ও বোনের জেল হয়েছিল। পাঁচ বছর জেল খেটে তারা জামিনে ছাড়া পায়।
তিনি আরও বলেন, গত দুদিন আগে স্বামী সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে মেহজাবিন। এসেই তার ছোট বোনের জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর পরকীয়া রয়েছে বলে বাবা-মাকে অভিযোগ করে। এ নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরেই হয়তো এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এছাড়া প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, জায়গা সম্পত্তি নিয়েও পরিবারের সঙ্গে বিরোধ ছিল মেহজাবিনের। সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য বাবা-মাকে অনেক চাপ দিত। এ নিয়ে এর আগে বৈঠক শালিস হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শফিকুল যুগান্তরকে বলেন, শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। গতকাল রাতে খাবার ও চা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার মেয়েও অচেতন হয়ে যায়।