পুলিশের সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে, ভিকারুননিসার ছাত্রীর পাশে পুলিশ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩১ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:২০ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
রাজধানীর ভিকারুননিসানুন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অপেক্ষমাণ অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক ছাত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হয়েছে। সার্টিফিকেট অনুযায়ী বিয়ের বয়স হয়নি মেয়েটির। তবে, মেয়ের বাবা মা যে বায়োডাটা দেখিয়েছেন তাতে মেয়েকে তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ভাল পাত্র পাওয়া গেছে; তাই, এক প্রকার হুট করেই বিয়ে। ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণ শেষ করে মাত্র কাজে যোগ দিয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা জানান, মেয়েটির বিয়ের ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু পরিবারের চাপ ও ভয়ে পাত্র পক্ষের সামনে বিয়েতে অমত করতে পারেনি। নানাভাবে তার অমত জানিয়েছিল পরিবারকে। তবে, তার বাবা, চাচা ও পরিবার তার মতকে কোনো গুরুত্বই দেয়নি। চাপা পড়েছে তার স্বপ্ন ও সম্ভাবনা।
বিয়েটা পারিবারিকভাবে অনেকটা মেয়ের পরিবারের আগ্রহেই হয়েছে। তাদের একটাই কথা, সবসময় ভাল পাত্র পাওয়া যায় না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাই বিয়ে করতে হয়েছে। পাশে দাঁড়ানোর মতো কাউকে পাচ্ছিল না মেয়েটি। একা লড়াই করার শক্তিও তার ছিল না। তার, এই অসহায়ত্বের কথা বন্ধু-বান্ধব কাউকে বলারও সুযোগ পায়নি সে। হুট করেই হয়েছে বিয়েটা। তার মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তার সব স্বপ্ন ভেঙে চুড়ে দিয়েই হয়েছিল বিয়েটা।
বিয়ের দু’দিন পর মেয়েটি সুযোগ পেয়েছে তার কোনো এক বন্ধুকে বিষয়টি জানাতে। সেই বন্ধুর থেকে জেনেছে অন্যরা। কিন্তু, কি আর করা! বিয়ে তো হয়েই গেছে। তবুও, একজন কি মনে করে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে জানালো বিষয়টা। মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং লালবাগ থানার ওসি কে এম আশরাফউদ্দিনকে নির্দেশনা দেয় দ্রুত মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করতে এবং মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে যে কোনো প্রকার কার্যক্রম থেকে সংশ্লিষ্টদেরকে বিরত রাখতে। মেয়েটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয় ওসিকে।
ওসি লালবাগ অত্যন্ত তৎপরতার সাথে মেয়েটির বাড়িতে পুলিশের একটি টিম পাঠান। পুলিশের উপস্থিতিতে মেয়েটি সাহসী হয়ে ওঠে। বাড়িতে তার নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে পুলিশের সাথে চলে আসে সে। মেয়েটির সাথে কথা বলে মিডিয়া উইং। তাকে সাহস দেয়। আশ্বাস দেয়, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার উপর কোনো সিদ্ধান্ত কেউ চাপিয়ে দিতে পারবে না। সুযোগ ও সাহস পেয়ে মেয়েটি সেই পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদের ইচ্ছা ব্যক্ত করে।