avertisements 2

হঠাৎ দেবে গেল ৪০ হাজার বর্গফুট ভূমি

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:৫৫ পিএম, ১১ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০৪:৪৮ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীপাড়ের দস্যু নারায়ণপুর এলাকায় ফের ৪০ হাজার বর্গফুট ভূমি দেবে গেছে। এতে কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুই উপজেলার ব্যস্ততম সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

কাপাসিয়া সদর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কের দস্যু নারায়ণপুর বাজারসংলগ্ন দাসপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ মূল সড়কের প্রায় ২শ’ ফুট দীর্ঘ ও ৩০ ফুট চওড়া, ১০ ফুট গভীরে দেবে গেছে। সড়কের পাশে ২ বিঘা ফসলি জমি ও পাশের শীতলক্ষ্যা নদীর দিকে দেবে গেছে। সড়কের সামনে ও পেছনে সবই ঠিক আছে, কিন্তু মাঝখান থেকে হঠাৎ সড়কের অংশ দেবে দুইদিক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সড়কের পাশের দাসবাড়ির রতন দাস জানান, শুক্রবার ভোরে ঘুম থেকে জেগে বাহিরে এলে দেখি সড়কটি প্রায় ১০ ফুট নিচে দেবে রাস্তাটি ভেঙে পড়েছে। পাশে তাদের ফসলি জমিও নদীর দিকে দেবে গেছে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মফিজউদ্দিন জানান, এর আগেও একই স্থানে আরও তিনবার ভূমি দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।

খবর পেয়ে কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

গাজীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। সড়কটি দেবে যাওয়ার কারণ জেনে দ্রুত তা মেরামত করা হবে। আগামীকাল শনিবারের মধ্যে সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য রাস্তাটি খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

স্থানটি সর্ব প্রথম ১৯৬৮ সালে দেবে গিয়েছিল। দীর্ঘ সময় পরে দ্বিতীয় দফায় ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাস্তা ও একটি বাড়িসহ এই বিশাল এলাকা প্রায় ১৫ ফুট নিচে দেবে গিয়েছিল। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একই এলাকায় বেশ কিছু গাছপালা, কলাবাগান ও রাস্তাসহ প্রায় ১০ ফুট নিচে দেবে যায়।

২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-তত্ত্ব বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল স্থানটি পরিদর্শন করে। তারা মাটির নমুনা পরীক্ষা করে জানায়, এখানকার মাটির গভীরে অতিমাত্রায় কাদামাটি ও পিট কয়লা জাতীয় পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে গেলে এগুলো শুকিয়ে শূন্যতা তৈরি হয় এবং এর ফলে দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। ওই সময় ভূ-তাত্ত্বিক অধিদফতর পরিদর্শন করে জানায়, পাশের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে এ ভূমি দেবে যাবার ঘটনা ঘটে।

সম্প্রতি সড়ক ও জনপদ বিভাগ রাস্তাটির উত্তরপাশে নিচ থেকে বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে মজবুত করে নির্মাণ করে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার প্রায় ছয় মাসের মাথায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই এলাকায় রাস্তার মাঝ বরাবর ফাটল দেখা দিয়ে প্রায় ৪ ইঞ্চি পরিমাণ দেবে যায়। পরে সেখানে পিচ ঢালাই দিয়ে মেরামত করা হয়েছিল এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ আশঙ্কাজনক এ রাস্তার দুইপাশে ‘সয়েল সেটেলমেন্ট পর্যবেক্ষণ চলিতেছে’ লেখা সাইনবোর্ড স্থাপন করে দেয়। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীরা ওই স্থানে গিয়ে সাবধানে চলাচল করত। চতুর্থবারের মতো গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সড়কসহ একই এলাকা প্রায় ১০ ফুট নিচে দেবে যায়।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2