‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ বিরুদ্ধে থানায় আহত শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৭ মার্চ,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:৪৪ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল চত্বরে শিক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনায় ‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা সাদিয়া আফরোজ খান।
রোববার (২৭ মার্চ) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ২৪ জনকে দায়ী করে এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ফয়সাল আহমেদ সাকিব, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের তবারক মিয়া ও ফারহান লাবিব। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও দর্শন বিভাগের অর্ণব খান, মার্কেটিং বিভাগের মোহাম্মদ শোভন ও বিপ্লব হাসান জয়। কবি জসীম উদ্দিন হল ও নৃ বিজ্ঞান বিভাগের নাইমুর রহমান দুর্জয়, কবি জসীম উদ্দিন হল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজেমেন্টের সিফরাত সাহিল। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সমাজকল্যাণ বিভাগের হেদায়েতুন নুর ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র মাহিন মনোয়ার ও তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাদমান তাওহিদ বর্ষণ, একই হলের আব্দুল্লাহ আল আরিফ। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবু রায়হান। জগন্নাথ হলের ও লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রত্যয় সাহা। জসীমউদ্দিন হলের রহমান জিয়া, চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের ফেরদৌস আলম ইমন, ফাইন্যান্স বিভাগের মোশারফ হোসেন। জগন্নাথ হলের জয় বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা সাদিয়া আফরোজ খান অভিযোগে লিখেছেন, আমার ছেলে এবং তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা ডাক দেওয়ার পরও গাড়িটি থামেনি। এরপর আমার ছেলে ও তার বন্ধুরা ইফতার শেষ করে কার্জন হলের দিকে যাচ্ছিল। বাংলা একাডেমি পার হওয়ার পর তিন নেতার মাজারের সামনে ওই গাড়িটা দেখে তারা চিনতে পারে। চালককে জিজ্ঞেস করে, এভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলে কেন। পরে গাড়ি থেকে পাঁচজন ছেলে বের হয়। আমার ছেলে এবং তার বন্ধুরা দেখে যে তারা ক্যাম্পাসের ছাত্র। পরে অভিযুক্তদের একজন তাদের কথা না বাড়িয়ে চলে যেতে বলে। ক্যাম্পাসের ভেতরে কেউ এভাবে গাড়ি চালায় কি না, জানতে চাইলে অভিযুক্তরা উত্তেজিত হয়ে যায়। এ নিয়ে আমার ছেলে এবং তার বন্ধুদের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়।
এদিকে কথা-কাটাকাটির পর আমার ছেলে কবি জসীম উদ্দিন হলের দিকে চলে যায়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় একটি অপরিচিত মুঠোফোন নম্বর থেকে তাকে ফোন দিয়ে সে কোথায় আছে জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে আমার ছেলে তার অবস্থান জানায়। কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্তরা জোবায়েরকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্ট্যাম্প, রড, বেল্ট ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে মাথা ও চোখে গুরুতর জখম হয়। ছিঁড়ে যায় ডান পায়ের লিগামেন্ট। তবে মারধরের সময় জোবায়েরের বন্ধুরা তাঁকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরও এলোপাতাড়ি পেটান অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। প্রাণনাশের হুমকিসহ দেখানো হয় ভয়ভীতি। মারধরে জোবায়ের চেতনা হারিয়ে ফেললে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে জোবায়েরকে তার বন্ধুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
সাদিয়া আফরোজ বলেন, আমার ছেলে জুবায়ের ইবনে হুমায়ুন এ এফ রহমান হলের ছাত্র ও অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্ট্যাম্প, রড, বেল্ট ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে অভিযুক্তরা। এতে মাথা ও চোখে গুরুতর জখম হয় সে। ছিঁড়ে যায় ডান পায়ের লিগামেন্ট।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ জানান, রোববার রাতে এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী জানান, রোববার রাতে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। কবি জসীমউদ্দিন হলও একটি তদন্ত কমিটি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার হল চত্বরে মারধরের ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কবি জসীমউদ্দিন হল প্রশাসন।