পরীক্ষা বন্ধ-লকডাউনসহ ১২ সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদফতরে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ১৮ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩২ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
দেশে করোনা সংক্রমণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এ কারণে দেশের সব পাবলিক পরীক্ষা বন্ধসহ ১২ দফা সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সম্প্রতি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে জরুরি সভা হয়। সেখানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রমণ রোধে বৈঠকে ১২টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এসব প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও এনসিডিসি শাখার পরিচালক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে এ সুপারিশগুলো মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে যেহেতু পলিসির নানা সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে, সরকার পরবর্তীতে যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেভাবে স্বাস্থ্য অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যে ১২টি সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হলো-
১। সম্ভব হলে সম্পূর্ণ লকডাউনে যেতে হবে। না হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমন্বয় রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
২। কাঁচাবাজার, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, শপিংমল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, রমজান মাসের ইফতার মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে।
৩। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। অন্যান্য কার্যক্রমও সীমিত করতে হবে।
৪। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা (বিসিএস, এসএসসি, এইচএসসি, মাদ্রাসা, দাখিলসহ) নেওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
৫। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
৬. যারা রোগীদের সংস্পর্শে আসবে তাদর কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। বিদেশ থেকে বা প্রবাসী যারা আসবেন তাদের ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
৮। আগামী ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা যেতে পারে।
৯। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আইন আরও জোরালোভাবে কার্যকর করতে হবে।
১০। পোর্ট অব এন্ট্রিতে জনবল আরও বাড়াতে হবে এবং নজরদারির কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
১১। সব ধরনের সভা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে করার উদ্যোগ নিতে হবে।
১২। পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করতে হবে।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও মারা গেছেন ৯ হাজার ৭১২ জন এবং একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ৮৪৫ জন।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫ হাজার ৪৯৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৮৩২ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ কোটি ৮১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৪৪ জন।
অন্যদিকে বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় মহামারি করোনা ভাইরাসে দেশে মারা যান আরও ১১ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৬০৮ জনে।
এছাড়া নতুন করে করোনা শনাক্ত হয় ১ হাজার ৮৬৫ জনের শরীরে। যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত দাঁড়ায় ৫ লাখ ৬২ হাজার ৭৫২ জন। এর আগে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮৭৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এছাড়া সুস্থ হন আরও ১ হাজার ৫১০ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১৫ হাজার ৯৮৯ জন।