ভয়ংকর সেই সিডরের মতোই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘মোখা’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ মে,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:৪২ এএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ফাইল ছবি
বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় মোখা ক্রমশ উপকুলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় এবং এর তীব্রতা বাড়তে থাকায় কক্সবাজারে দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট বেশি উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
শনিবার (১৩ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. আসাদুর রহমান জানান, ‘ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডরের মতোই শক্তিশালী মোখা। তবে সিডর দেশের মাঝ বরাবর দিয়ে গিয়েছিল। আর মোখা পাশ দিয়ে যাচ্ছে। উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মোখা গতি সঞ্চার করতে থাকবে। প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে মোখা।’
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিডর প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। ঝড়টি ভূমিতে আছড়ে পড়ার সময় প্রথম এক মিনিটে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার, যা একে সাফির-সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি-৫ এর সাইক্লোনে পরিণত করে। দমকা হাওয়ার বেগ উঠছিল ঘণ্টায় ৩০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। সিডরের প্রভাবে উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
আসাদুর রহমান আরও জানান, সেন্ট মার্টিন, টেকনাফ, উখিয়া অঞ্চলে মোখার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। এটি যখন তীরে আছড়ে পড়বে তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৬০ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রভাবে যে বৃষ্টি হবে, তাতে পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে। একটানা আট ঘণ্টার বেশি প্রবল বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে। প্রবল বৃষ্টির হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। সিলেটেও প্রভাব থাকবে তবে, ঢাকায় কম হবে।
তিনি বলেন, মোখার প্রভাব সিলেট পর্যন্ত থাকবে। বর্তমানে এর ডায়ামিটার ৫০০-৫৫০ কিলোমিটার। ডায়ামিটার যদি ২৫০ কিলোমিটারও থাকে, তাও তো কম না। তীর থেকে ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে এলে এর গতি থাকবে ১৬০-১৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু এটা আরও গতি সঞ্চার করতে পারে। এই গতিতে এগিয়ে এলে কাল (রোববার) সকাল ১০টা থেকে ঝড়ো হাওয়ার পরিমাণ বাড়বে।
সামুদ্রিক ঝড়গুলোর শক্তির বিচারে সর্বোচ্চ ধাপে রয়েছে ‘সুপার সাইক্লোন’। যখন কোনো ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার ছাড়ায়, তখনই তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।
এই পর্যন্ত যত তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে বঙ্গোপসাগরের ঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার ছাড়াতে পারে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।
সুপার সাইক্লোন না হলেও এর ধ্বংস ক্ষমতা কম হবে, এমন ভাবার কোনো সুযোগ নেই বলে সতর্ক করছেন আবহাওয়াবিদরা।