ব্যারিস্টার সুমনের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে রনির জীবন, যাচ্ছেন ব্রাজিলে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১১ এপ্রিল,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১০:০৬ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বাবার হাঁড় খাটুনি কষ্টে যে ঘরে তিন বেলা ঠিক মতো খাবার জুটাতে হিমশিম, সেখানে ফুটবল খেলতে বুট কেনার স্বপ্ন দেখা নিতান্তই অবান্তর ভাবনা। শতকষ্টের মাঝেও সাভারের বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার সুভাগ্য হলেও সেই অভাব, বেতন দিতে না পারায় ছাড়তে হয়েছিল সেটিও। তবে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে হবিগঞ্জের কিশোর ফুটবলার রনি মিঞার জীবন। ফুটবলে উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে তিনি এখন যাচ্ছেন রোনান্ডো-নেইমারদের দেশ ব্রাজিলে।
২০১৮ সালে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা দ্য অলিভিয়েরা জুনিয়র বাংলাদেশ থেকে কিশোর ফুটবলারদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্রাজিলে পাঠানোর উদ্যোগটা নেন। তার সহযোগিতা ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের চেষ্টায় ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো চারজন কিশোর ফুটবলার ব্রাজিলে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এবার দ্বিতীয় বারের মতো ১১ জন যাচ্ছে ব্রাজিলে। তাদের মধ্যে একজন হলেন রনি।
তবে রনির এই ফুটবল যুদ্ধ ঠিক গল্পের মতো। বৃদ্ধ বাবা তৈয়ব আলী পাহাড় থেকে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালানোর কষ্ট সহ্য না করতে পেরে সবকিছু বাদ দিয়ে নদীতে বালু তোলার মেশিনে কাজ নিয়েছিলেন রনি। এর আগে সাভারের বিকেএসপিতে ভর্তি হলেও বেতন দিতে না পারায় বিকেএসপি ছাড়তে হয়েছিল রনিকে। ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের এগিয়ে আসায় পাল্টে যায় রনির জীবন।
সবকিছু শুনে এক লাখ টাকা দিয়ে রনিদের বন্ধকী জমি ছাড়িয়ে দেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। একই সাথে ব্যারিস্টার সুমনের একাডেমিতে খেলার সুযোগ পান রনি। সেখানেই খেলছে তিন বছর ধরে।
গত বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনূর্ধ্ব-১৭ গোল্ডকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় সিলেট বিভাগ। সেই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার ছিলেন রনি মিঞা। এছাড়া এলাকায় বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি।
সর্বশেষে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার সেরা ফুটবলার নিয়ে গড়া হয় বিভাগীয় দল, সেখানে জায়গা পান রনি। এরপর দেশের ৮ বিভাগ থেকে সেরা ৪০ ফুটবলারের মধ্য থেকে ব্রাজিল সফরের জন্য ১১ জনকে বাছাই করা নেওয়া হয়। সেই বাছাইয়েও জায়গা পেয়েছেন রনি।
ব্রাজিলে উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়ার পর সংবাদ মাধ্যমকে রনি বলেন, কখনো ভাবিনি যে ফুটবলে ফিরতে পারবো। আমাদের অভাবের সংসার। অথচ ফুটবল খেলতে পেলে-নেইমারদের দেশে যাচ্ছি। কী যে ভালো লাগছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।
রনি খেলেন রাইটব্যাক পজিশনে। বর্তমানে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ফুটবল একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি চুনারুঘাট কাচুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন।