নান্নু ভাই ‘দেশদ্রোহী’ বলায় কষ্ট পেলেন আশরাফুল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ জানুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৩৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর মুখ থেকে ‘দেশদ্রোহী’ ও ‘ফিক্সার’ মন্তব্য শোনে মর্মাহত দেশের ক্রিকেটের প্রথম ‘পোস্টার বয়’ আশরাফুল। বিষয়টিতে কষ্ট পেয়েছেন জানিয়ে আশরাফুল বলেন, গণমাধ্যমের সামনে তাকে নিয়ে নান্নুর এমন মন্তব্য দুঃখজনক। সম্প্রতি যমুনা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেছিলেন, ক্রিকেট দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্যদের কাজের মেয়াদ ৩ থেকে ৪ বছর হলে ভালো হয়।
আশরাফুলের এমন বক্তব্যের পর ক্ষেপে যান নির্বাচক নান্নু। একই টেলিভিশনের এক লাইভ অনুষ্ঠানে আশরাফুলকে ‘দেশদ্রোহী ও ফিক্সার’ বলে আখ্যা দেন তিনি।
নান্নু বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার একজন প্রধান নির্বাচক কত বছর কাজ করেছে সেটি বোধহয় আশরাফুলের ধারণা নেই। প্রায় ৯ থেকে ১২ বছর একনাগারে কাজ করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া কি ক্রিকেট থেকে পিছিয়ে গেছে? যেসব খেলোয়াড় দেশদ্রোহী হয়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়, ওদের কাছ থেকে ভালো পরামর্শ আশা করা কঠিন।’ নান্নুর এমন বক্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ বলে মনে হয়েছে আশরাফুলের। রোববার রাতে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে এ বিষয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করেন আশরাফুল। তিনি জানান, নির্বাচক প্যানেল নিয়ে করা তার সেই বক্তব্যে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর নাম উচ্চারণ করেননি তিনি। তার ওই মন্তব্য নান্নুর উদ্দেশে ছিল না। এর পরও ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হলেন।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘আমি কোনো ব্যক্তির নাম বলিনি, আমি ওই দায়িত্বের কথা বলেছি। নান্নু ভাই যমুনার লাইভে এসে সরাসরি আক্রমণ করলেন আমার নাম ধরে। এটি আসলে খুবই দুঃখজনক। আমি যে কথাটি বলেছি, সেটি নান্নু ভাইকে নিয়ে বলিনি বা কারও নাম ধরে বলিনি। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমার মতামত দিয়েছি শুধু। আমি কিন্তু উনার নাম বলিনি যে নান্নু ভাইকে সরানো উচিত বা এমন কিছু। আমার মনে হয়েছে নির্বাচক পদ কোনো পেশা হতে পারে না যে, আমি এখানে সারাজীবন থাকব, ১০-১২ বছর ধরে। এটি একটি সম্মানের জায়গা হবে, ৩-৪ বছর থাকবেন। কিন্তু উনি খুব সুন্দর করে অস্ট্রেলিয়ার একজনের উদাহরণ দিলেন।’
এর পর নির্বাচক নান্নুকে উদ্দেশ্য করে আশরাফুল ক্ষোভ ঝাড়েন, ‘আপনার সাক্ষাৎকারেই বোঝা যাচ্ছে আপনার গুড বুকে আমি নেই বলেই এখন সুযোগ পাচ্ছি না। সেন্স ভাই আমাদের কম নেই। আল্লাহর রহমতে আমাদেরও মোটামুটি সেন্স আছে। খেলা নিয়ে আমরাও সারাদিন চিন্তা করি। ছোটবেলা থেকে এখনও ঘুম থেকে উঠে সারাদিন ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করি। ’
২০১৩ সালের সেই ফিক্সিংকাণ্ডের বিষয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমি সাদাকে সাদা বলব, কালোকে কালো বলব। অন্যায় করেছি স্বীকার করি। আমার আত্মবিশ্বাস আছে বলে এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি। নান্নু ভাই যেভাবে নাম ধরে দেশদ্রোহী, ম্যাচ ফিক্সার বললেন— এটি তো ২০১৩ সালে হয়েছে। আমি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছি, শাস্তিও হয়েছে। যেভাবে আক্রমণ করলেন, কষ্ট লেগেছে। আমি তো উল্টাপাল্টা কিছু বলিনি। ’
প্রসঙ্গত, বয়স ৩৭ পেরিয়ে গেলেও আশা ছাড়েননি মোহাম্মদ আশরাফুল। জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্নে এখনও বিভোর তিনি। দেশের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলেই অবসর নিতে চান তিনি। কিন্তু জাতীয় দল তো দূরের কথা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেই (বিপিএল) সুযোগ পেলেন না তিনি।