সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কে চলছে পিচ ঢালা আর ওঠানোর খেলা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:২৫ পিএম, ১৫ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৫৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাটকেলঘাটা ওভারব্রিজ এলাকা থেকে শাকদাহ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের কাজে চলছে অনিয়ম। একবার সড়কে পিচ দেওয়া হয়, ১৫ দিন পর সে পিচ তুলে আবার দেওয়া হয় নতুন পিচ। এভাবেই চলছে দেড় বছর।
এদিকে এই সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। সরেজমিনে দেখা যায়, সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার সামনে ওভারব্রিজ থেকে শাকদাহ পর্যন্ত বর্তমানে সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেওয়া পিচ নতুন করে তুলে ফেলা হচ্ছে।
খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজহার এন্টারপ্রাইজ সড়ক সংস্কারের কাজটি করছে। ঘটনাস্থলে গেলে সড়কের পিচ তুলে ফেলার ছবি ও ভিডিও ধারণে বাধা দেন এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। এমনকি তাদের নাম পরিচয়ও গোপন করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা পাটকেলঘাটা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন জানান, সড়ক সংস্কারের সময় যেটুকু গর্ত করে বালু খোয়া দিয়ে টেম্পারিং করার কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেটি দেয়নি। কোনো রকমে পিচ ঢেলে সংস্কার কাজ শেষ দেখিয়ে দেয়।
কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। সড়কে পিচ দেওয়ার কিছুদিন পরই দেখা যায় গর্ত হয়ে গেছে। তখন সেই পিচ তুলে আবার নতুন করে পিচ দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই চলছে বলে জানান তিনি।
ওভারব্রিজের উপর ভাড়া মোটরসাইকেল চালকদের স্ট্যান্ড। মোটরসাইকেল চালক সোহাগ হোসেন বলেন, আমি এই পর্যন্ত চার বার দেখলাম পিচ দিতে। পিচ দেয় ১০-১৫ দিনের মধ্যে আবার সড়কে গর্ত হয়ে যায়। তখন কয়েক মাস পরে সেই পিচ তুলে আবার নতুন করে পিচ দেয়।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাতক্ষীরার প্রধান অফিস সহকারী রবিউল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের সাড়ে ২০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। ৮৯ কোটি টাকার কাজটি করছেন খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজহার এন্টারপ্রাইজ। ২০১৮ সালের ৩ মার্চ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ।
মোজহার এন্টারপ্রাইজের নির্বাহী পরিচালক খোকন জানান, সড়কের কাজে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তবে শাকদাহ ও পাটকেলঘাটা এলাকায় একটু টেকনিক্যাল সমস্যা হয়েছে। তাই পিচ তুলে আবার দেওয়া হচ্ছে।
তিন বছরে কয়েকবার দিয়েছি। অনেক সময় দেখা যায়, কিছু ত্রুটিপূর্ণ মালামাল চলে গেছে। তখন এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে সেগুলো আমরা পুনরায় ঠিক করছি বলেন তিনি।
সড়কটির সংস্কারের কাজ তদারকি করছেন সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সেকশান-১) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না। নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেন।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামউদ্দীন আহম্মেদ জানান, ঠিকাদার একবার ওই জায়গাটুকু ঠিক করেছে সেটি যথাযথ মনে হয়নি। তাই আবার ঠিকাদারকে দিয়ে তুলে নতুন করে দিতে বলেছি। এটাকে আপনারা যেভাবে বোঝেন সেভাবে বুঝে নেন। আমি আপনাকে বোঝাতে পারবো না। অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে কিনা এই প্রশ্নে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এটাকে দুর্নীতি বলা যাবে না। তবে কাজটি ঠিকঠাক হচ্ছে না।