avertisements 2

এখন প্রকাশ্যেই ভরাট হচ্ছে খুলনার ময়ূর নদী

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:২৮ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ১০:৫৪ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

জলাবদ্ধতা খুলনা শহরের প্রধান প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। একটু বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় খুলনার ছোট বড় বিভিন্ন সড়ক। এর প্রধান কারণ হচ্ছে পানি অপসরণের পথগুলো ভরাট ও অবৈধ দখল। গত বছর খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খুলনার ময়ূর নদী ও ২২ খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম চালু হলেও মাঝ পথে ঝিমিয়ে গেছে এ কার্যক্রম। এখন প্রকাশ্যেই ভরাট হচ্ছে খুলনার ময়ূর নদী। 

স্থানীয় প্রভাবশালীরা স্রোতহীন ময়ূর নদীতে খুব সহজেই পাটা ও বাঁধ দিয়ে প্রতিদিনই দখল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পৈত্রিক সম্পত্তির মতো গাছপালা লাগানো ও চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা, এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পাকা বাড়ি-ঘর ভবন নির্মাণ করেছে অনেকে।

গত বছর (২০১৯) ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনার ময়ূর নদীসহ মহানগরের অভ্যন্তরীণ ২২ খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কার্যক্রম শুরু করে জেলা প্রশাসন। এ সময় নগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার গল্লামারি ব্রিজের পশ্চিম পাশে ময়ূর নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে নদীর দুই পাড়ের অবৈধ কাঁচা, সেমিপাকা, পাকা স্থাপনা ক্রেন ও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। 

এ সময় উচ্ছেদ কার্যক্রমে গঠিত ৪টি কমিটি ময়ূর নদী ও ২৬টি খালে জরিপ চালিয়ে ৪৬০ জন দখলদারের তালিকা করা হয়। তবে আইনের ফাকফোকর দিয়ে তারাও ধরা ছোয়ার বাহিরে।

২০০৯ সালে খুলনা মহানগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে ময়ূর নদী ও ২৬টি খালের দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে সিটি করপোরেশন। কিন্তু অভিযান শুরুর পরপরই ওই বছরের ১১ জুলাই দুর্বৃত্তদের গুলিতে উচ্ছেদ কার্যক্রমে সক্রিয় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শহীদ ইকবাল বিথার নিহত হন। এর ফলে ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৬ সালে ময়ূর নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে খুলনা সিটি করপোরেশন। কিন্তু তাতেও নদীটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। 

এ অবস্থায় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে বর্তমান মেয়র খুলনাকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে নদী খননসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন। মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের পরই তিনি নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে ৮৪৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ময়ূর নদীসহ পার্শ্ববর্তী ৯টি খাল পুনর্খনন ও নগরীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেন নির্মাণ।

দুই যুগ আগেও ময়ূর নদীতে পালতোলা নৌকা চলাচল করতো। অনেক জেলে পরিবারের জীবিকার মূল উপজীব্য ছিল এ নদী। গোসল ও তৈজসপত্র ধোয়ার কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতো। অথচ এখন দখল ও দূষণে আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়ূর নদীর সঙ্গে আগে রূপসা নদীর সরাসরি সংযোগ ছিল। দখলে নদী হারিয়েছে নিজস্বতা।

এ ব্যাপারে সামাজিক সংগঠন গ্লোবাল খুলনার আহবায়ক শাহ্ মামুনুর রহমান তুহিন বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন গত বছর ময়ূর নদীসহ ২২ খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে বন্ধ হয়েছে সেই কার্যক্রম। এর আগে এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এ নদী খননের কাজ করেছিলো, তবে কি কাজ করেছে তা কখনোই দৃশ্যমান হয়নি। খুলনার যতই উন্নয়ন হোক ময়ূর নদীসহ ২২ খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খনন না হলে কোন উন্নয়নই দৃশ্যমান হবে না। এ বিষয়টি খুলনার সাধারণ মানুষের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আহবান জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2