ভারতের রাজস্থানে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হল শিক্ষিকাকে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ আগস্ট,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৭ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
স্কুলে যাওয়ার সময়ে হামলাকারীরা ঘিরে ধরেন ৩২ বছর বয়সী দলিত শিক্ষিকা অনিতা রেগরকে। মারধর করা হয় তাকে। পালিয়ে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলাকারীরা পৌঁছে যায়। অনেক মানুষের সামনেই তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়া হয় তাকে।
পুলিশ বলছে, মূল অভিযুক্তরা ওই শিক্ষিকা অনিতা রেগরেরই আত্মীয় এবং তার মতো হামলাকারীদের অনেকেই দলিত শ্রেণীরই মানুষ। ধার দেয়া টাকা চাইতে গেলে ৩২-বছর বয়সী ওই শিক্ষিকাকে আক্রমণ করা হয়, তারপরে পেট্রোল ঢেলে তার দেহে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে মারা যান ওই নারী।
মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা বয়ান এখন ভাইরাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ওই শিক্ষিকা একটি ভিডিও বয়ান রেকর্ড করেন, যেটি তার মৃত্যুর পরে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
অনিতা রেগরের ভিডিও বয়ানটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে
সেখানে তিনি জানান, "১০ই অগাস্ট সকালে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথেই আমার ওপরে হামলা হয়। আমি পালিয়ে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে আশ্রয় নিই। কিন্তু সেখানেও পৌঁছে যায় আক্রমণকারীরা। গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়ার পরেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।"
মিসেস রেগর পুলিশকে ফোনও করেছিলেন, কিন্তু তার অভিযোগ পুলিশ সময়মত পৌঁছয় নি। পরে তার স্বামী তারাচাঁদ খবর পেয়ে ছুটে এসে ৭০% দগ্ধ স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু শেষমেশ বাঁচানো যায় নি তাকে।
কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নি যে নির্মীয়মাণ বাড়িতে মিসেস রেগর আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে হামলার সময়ে আরও অনেকে জড়ো হয়েছিলেন, কিন্তু তার গায়ে যখন পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানো হচ্ছে, তখন কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন নি।
পর পর দুটি দলিত হত্যার ঘটনায় অস্বস্তিতে পরেছে রাজস্থানের কংগ্রেস সরকার দ্বিতীয় এক ভাইরাল ভিডিওতে এটাও দেখা গেছে যে জ্বলন্ত মিসেস রেগরের ভিডিও করছেন কিছু মানুষ, কিন্তু কেউই এগিয়ে আসেন নি তাকে বাঁচাতে।
পুলিশ বলছে, হামলাকারীদের নামে আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন মিসেস রেগর, তার ভিত্তিতে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। কিন্তু যারা গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, তারা এখনও ফেরার।
'পারিবারিক বিবাদ থেকেই এই ঘটনা' জয়পুর গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট ধর্মেন্দ্র যাদব সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, "ওই নারী তার এক আত্মীয়কে কিছু টাকা ধার দিয়েছিলেন যদিও তার কোনও নথিপত্র ছিল না। সেই টাকা শোধ করা নিয়েই একই পরিবারের মধ্যেই ঝামেলা হয় আগে।"
"নিহত নারী অভিযোগ করেছিলেন যে তাকে মারধর করা হয়েছে। সেসময়ে দু'জন নারীকে গ্রেপ্তারও করি আমরা। তার চারদিন পরে দ্বিতীয় একটি অভিযোগ আনেন মিসেস রেগর, তার ভিত্তিতে আরও দু'জন গ্রেপ্তার হন।
"এরপরে দু'পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করে। সেই ঘটনার তদন্ত চলছিলই। তারমধ্যেই ১০ই অগাস্ট এই ঘটনা ঘটে যায়," বলছিলেন ধর্মেন্দ্র যাদব।