চীনা বিজ্ঞানীর দাবি উহানের ল্যাবেই করোনার উৎপত্তি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬:২৮ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ০৭:৩৯ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
চীনের উহানের সরকারি ল্যাবেই নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে। এ সংক্রান্ত সব তথ্যপ্রমাণও হাতে আছে। সম্প্রতি এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন চীনা ভাইরোলজিস্ট লি-মেং ইয়ান। এক সময় হংকংয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথে সংক্রামক রোগ বিষয়ে গবেষণারত এই বিজ্ঞানীর দাবি, প্রাণের ভয়ে সম্প্রতিই তিনি পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
গত শুক্রবার গোপন কোনও স্থান থেকে একটি ব্রিটিশ টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়ান দাবি করেন, ভয়ঙ্কর সংক্রামক এই ভাইরাস নিয়ে তিনি অনেক আগেই চীনের সেন্টার ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। বরং বিশ্বের কাছে পুরো বিষয়টা চেপে রেখেছে বেজিং। বাইরে এ নিয়ে মুখ খুললে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় তাকে।
বেজিংয়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র-সহ বেশ কিছু দেশও চীনের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি এই ভাইরাসের উৎপত্তি চীনের কোন ল্যাবেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও প্রথম থেকেই এই ভাইরাস ছড়ানোর জন্য চীনকে দোষারোপ করে আসছেন।
এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একই দাবি করেছিলেন। কোভিড-১৯ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বা অন্য কোনও দেশকে বেইজিং যথাসময়ে সতর্ক করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও পরে মার্কিন গোয়েন্দারা তাদের বিভিন্ন রিপোর্টে জানিয়েছে, বেইজিংকে করোনা-সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার বিষয়ে গাফিলতি ছিল স্থানীয় উহান প্রশাসনের।
তবে চিনা বিজ্ঞানী ইয়ান বলছেন, সরকার নিয়ন্ত্রিত ল্যাবেই করোনার উৎপত্তি। করোনা ছড়ানোর পেছনে উহানের এক পশু কেনা-বেচার বাজারের কথাই প্রথম থেকে বলে এসেছে চীন। কিন্তু ইয়ানের দাবি, এই ভাইরাস কোনভাবেই প্রাকৃতিক নয়।
তিনি বলেন, ‘আমি গবেষণা করে যা বুঝেছি, তাতে হয়তো বাদুড় বা ওই জাতীয় কোনও প্রাণীর থেকে ভাইরাল স্ট্রেন নিয়ে তাকে রাসায়নিক ভাবে আরও শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে। যাতে তা মানবশরীরে ঢুকে মুহূর্তে বিভাজিত হয়ে অসংখ্য প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, শুরুতে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ভাইরাসবাহিত রোগ’ বলে কোভিড-১৯কে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল চীন।
জুলাই থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ইয়ানকে বলতে শোনা গিয়েছিল, কীভাবে তাকে খুনের হুমকি এবং মেরে ফেলার চেষ্টাও করে হচ্ছে। ইয়ানের দাবি, তার কম্পিউটার হ্যাক করে গবেষণা তথ্য মুছে ফেলার চেষ্টাও হয়েছে বহু বার।
একটি ব্রিটিশ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইয়ান জানান, উহান শহরে ‘নতুন নিউমোনিয়া’ এবং এক ‘অজানা ভাইরাসের’ সংক্রমণের খবর পেয়ে গত ডিসেম্বর থেকে গবেষণা শুরু করেন তিনি। আক্রান্তের নমুনা পরীক্ষা করে তিনি বুঝতে পারেন, এই ভাইরাস কিছুটা সার্স বা সাধারণ করোনাভাইরাসের মতো হলেও, অনেক বেশি সংক্রামক এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল।
প্রথমে তিনি এই রিপোর্ট দেন তার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা যিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন পরামর্শদাতা। শুরুতেই ইয়ানকে এ বিষয়ে মুখ খুলতে বারণ করা হয়। সরকারিভাবে একই ‘উপদেশ’ দেয় বেইজিংও। এরপর থেকেই হত্যার হুমকি আসতে থাকে। বাধ্য হয়েই যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান ইয়ান।