avertisements 2

ছয় জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৫ | আপডেট: ১০:২৫ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৫

Text

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের আরও ছয়জন জিম্মিকে গতকাল শনিবার মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিনিময়ে এদিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। তবে পরবর্তী ধাপের বন্দীদের আনুষ্ঠনিকতা ছাড়া মুক্তি দেওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ তথ্য জানান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা, সিবিএস নিউজ, গার্ডিয়ানসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গতকাল (শনিবার) যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’

যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, শনিবার ইসরাইলের ছয়জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ছয় ইসরাইলি জিম্মির বিনিময়ে ৬২০ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, দিন পেরিয়ে রাত হয়ে গেলেও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয়নি ইসরাইল। অপেক্ষায় থেকেও ফিলিস্তিনিরা ছাড়া না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তাদের স্বজনরা। 

এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্দী মুক্তি না দেওয়াকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার কৌশলের অভিযোগ তুলেছে। 

হামাসের মুখপাত্র বলেছেন, নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও ইসরাইল সপ্তম দফায় বন্দীদের মুক্তি না দিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চরম লঙ্ঘন করেছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার বন্দী বিনিময়ের সপ্তম দফায় ৬ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। এদের মধ্যে চারজন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অভিযানে আটক হয়েছিল। বাকি দুজন ১০ ও ১১ বছর ধরে গাজায় বন্দী ছিলেন। এর বিনিময়ে ৬ শতাধিক ফিলিস্তিনির মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। যাদের মধ্যে ৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিল। তবে শর্ত অনুযায়ী এখনো তাদের মুক্তি দেয়নি ইসরায়েল।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। 

এদিকে শর্ত মানলে এক ধাপে বাকি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে হামাস প্রস্তুত রয়েছে বলে সংগঠনটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি ও বন্দীবিনিময়ের সব ধাপ বাস্তবায়নে হামাসের আন্তরিকতার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিনের। এই সময়ে মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরুর কথা রয়েছে। 

তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন নেতানিয়াহু। বেশিরভাগ জীবিত জিম্মি মুক্তি পাওয়ায় গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরু করতে সরকারের উগ্রপন্থী শরিকেরা তার ওপর চাপ দিচ্ছে।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2