বিবাহবিচ্ছেদের শহরে ৫০ বছর সংসার করে ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ জুলাই,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:৩২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার উত্তরে একটি শহরের নাম কানো। শহরটি বিবাহবিচ্ছেদের শহর হিসেবে মানুষের কাছে বেশি পরিচিত। কারণ, এখানে কারও বিয়ে বেশি দিন টেকে না। অনেকেই বহুবিবাহ করেন। কিন্তু সেখানেই এক জুটি একসঙ্গে ৫০ বছর পার করে সবার নজর কেড়েছেন। বিবিসি জানিয়েছে, সম্প্রতি এ দম্পতি তাঁদের ৫০তম বিবাহবার্ষিকী পালন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারকা হয়ে গেছেন।
মাহমুদ কবির ইউসুফ ও রাবিয়াতু তাহির তাঁদের সুখী দাম্পত্য জীবনের গোপন রহস্য নিয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের সেই ভিডিও বিবিসি প্রচার করার পর তা নিয়ে অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
নিজের স্ত্রীর প্রশংসা করে ৭৬ বছর বয়সী ইউসুফ বলেন, ‘তিনি খুবই নিঃস্বার্থ ব্যক্তি। আমাদের এই সুখী দাম্পত্য জীবনের পেছনে তাঁর অবদান অনেক।’
স্বামী ইউসুফের কথায় রাবিয়াতু তাহিরের মুখে হাসি ফোটে। এই দম্পতির ১৩ সন্তান। তিনি স্বামী ইউসুফের প্রশংসা করে বলেন, সংসারজীবনের কঠিন সময়েও তাঁর স্বামী ধৈর্য রেখেছেন ও শান্ত থেকেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি খুব ধৈর্যশীল ব্যক্তি। আমি মনে করি, এটাই আমাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র।’
সংসারজীবনে ইউসুফ ও তাহিরের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সম্মান রয়েছে। তাঁরা এখনো পরস্পরের সান্নিধ্য উপভোগ করেন। এ সাক্ষাৎকারের সময়ও তাঁরা নানা কথায় হেসে ওঠেন।
অন্যদিকে হাসানা মাহমুদ তাঁর জীবনের অন্য দিক তুলে ধরেন। ৩৯ বছর বয়সী এই ডিভোর্সির পাঁচবার বিয়ে হয়েছিল। তিনি বলেন, এই দম্পতির সুখী জীবন দেখে তিনি খুশি। তিনি বলেন, ‘আমার বিবাহিত জীবনে শুধু একজনের সঙ্গে চার বছর সংসার করতে পেরেছি। তাই এ দম্পতিকে একসঙ্গে ৫০ বছর উদ্যাপন করতে দেখাটা অনেক আনন্দদায়ক।’
হাসানা বলেন, ‘আমার স্বামীরা বিয়ের আগে সবাই ভালো আচরণ করত। কিন্তু বিয়ের পরপরই তারা বদলে যায়। যখন কেউ কানো সম্পর্কে নাইজেরিয়ার বিবাহবিচ্ছেদের নগরী বলে তখন খুব খারাপ লাগে। আমি আশা করি, সবকিছু পরিবর্তন হবে।’
নব্বইয়ের দশক থেকে কানো শহরে বিবাহবিচ্ছেদ বাড়তে শুরু করে। কিন্তু এই বদনাম আর ঘোচাতে পারেনি শহরটি। নাইজেরিয়ার জনবহুল এ শহরে প্রতি মাসে কয়েক শ বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে বিবিসি ২০২২ সালে এক গবেষণা করে দেখে, শহরটিতে ৩২ শতাংশ বিয়ে তিন থেকে ছয় মাস টেকে। সেখানে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে তৃতীয়বার বিয়ে সেরে ফেলেছেন।