শেখ হাসিনা আমার গুমের জন্য দায়ী : মাইকেল চাকমা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৮:৩২ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
মাইকেল চাকমা
গুমের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা।
গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। এখন থেকেই তাঁর অভিযোগের তদন্ত শুরু করব।
’
এর আগে সকালে অভিযোগ করতে ট্রাইব্যুনালে আসেন মাইকেল চাকমা। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও শহিদুল আলমের স্ত্রী অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ।
মাইকেল চাকমার পক্ষে অভিযোগ, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন। পরে মাইকেল চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে ইউপিডিএফ ও এর সহযোগী সংগঠন, প্রগতিশীল ও মানবাধিকার সংগঠন, শিক্ষক-নাগরিক সমাজসহ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে মাইকেল চাকমার সন্ধান দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের ও মাইকেলের সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলেও তাঁকে উদ্ধারে বিগত সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট দীর্ঘ পাঁচ বছর তিন মাস অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান মাইকেল চাকমা। ওই দিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাঁকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেমড় দেওয়া হয়।
চিফ প্রসিকিউটরের কাছে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরার পর মাইকেল চাকমা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কল্যাণপুর থেকে সাদা পোশাকধারী অন্তত সাত-আটজন আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমার চোখ বেঁধে একটি মাইক্রোবাসে তুলেছিল। আমি গাড়ির ভেতর একটি ওয়াকিটকি শনাক্ত করতে পেরেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে তারা আমাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে এবং পরে আরো দুটি কক্ষে নিয়ে যায়।
সেখানে আমাকে নির্যাতন করা হয়। ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার খাগড়াছড়ির সমাবেশে অংশ নেওয়ার সময় কেন সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল, তারা আমাকে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। সমাবেশের দিন আমাদের ছাত্রসংগঠনের সমর্থকরা একটি সড়ক অবরোধ করলে সমাবেশ কয়েক ঘণ্টা বিলম্বিত হয়। সেদিন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, যারা সমাবেশে বাধা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ সময় বিশিষ্ট আলোকচিত্রী, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিক শহিদুল আলম এবং অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ মাইকেল চাকমার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।