avertisements 2

অস্তিত্ব রক্ষায় সরকারের কাছে ইসলামী ব্যাংকের ধরনা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারী, বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:১৫ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪

Text

তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অগ্রিম প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা তারল্য সুবিধা চাইছে সম্প্রতি ঋণ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনির মাওলা সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি চারটি খাতের সরকারি কোষাগার থেকে ব্যাংকের পাওনার বিপরীতে এই তারল্য সুবিধা চেয়েছেন।

ব্যাংক সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ বিবেচনায় তারল্য সুবিধার অনুরোধ জানিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি দেন ইসলামী ব্যাংকের এমডি। চিঠিতে বলা হয়, দেশে বিরাজমান মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমায় ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের চাহিদা বেড়েছে। আবার মানুষের হাতে নগদ টাকা ধরে রাখার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে ব্যাংক খাতে নগদ প্রবাহে এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে।

চিঠিতে ইসলামী ব্যাংক সারের ভর্তুকি বাবদ ৭ হাজার ৭৪ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বাবদ ৪০০ কোটি টাকা, আর্থিক প্রণোদনা বাবদ ১৪৪ কোটি টাকা ও রেমিট্যান্স প্রণোদনা বাবদ ৩৩৭ কোটি টাকা চেয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের পক্ষে কেবল ৪৮২ কোটি টাকা দেয়া সম্ভব, কারণ বাকি ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ইসলামী ব্যাংককে দেওয়ার জন্য বিদ্যমান কোনো নীতি কাঠামো নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি মুদারাবাহ লিকুইডিটি সাপোর্ট (এমএলএস) চালু করেছে, নগদ সংকটে পড়া শরিয়াহ-ভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়ার একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে এই নীতি। নতুন এই নীতির অধীনে, ব্যাংকগুলো কোলাটেরাল অব ফান্ড প্রদানের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেসবাহউল হক জানান, এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাংক নতুন নীতির অধীনে এ ধরনের তারল্য সহায়তা চায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বর্তমানে সার ও জ্বালানি ভর্তুকিতে কোনো ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেয়ার মতো কোনো নীতি নেই। তবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের (ইসলামী ব্যাংক) অনুরোধটি মূল্যায়ন করবে এবং এটি বিবেচনা করার সুযোগ আছে কিনা তা দেখবে।

ইসলামী ব্যাংক বলছে, কোভিডকালে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে মুনাফা ভর্তুকি বাবদ ১৪৪ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে ব্যাংক। এছাড়া, রেমিট্যান্সের বিপরীতে সরকারি ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা বাবদ ৩৩৭ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাওনা রয়েছে।

গত নভেম্বরে ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কিছু ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের খবর প্রকাশিত হলে ইসলামী ব্যাংকসহ অধিকাংশ ইসলামী ধারার ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ কমতে থাকে। যার বড় প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডেও।

জানা গেছে, অসাধু চক্র ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে গত বছর এ অর্থ নেয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেয়া হয় ১ থেকে ১৭ নভেম্বর। যার পরিমাণ ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা।

এই  ঋণ কেলেঙ্কারির অস্থিরতায় বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক থেকে আমানত উঠিয়ে নিতে শুরু করে গ্রাহকরা। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য সংকটে থাকা শরীয়াহ্ ভিত্তিক এসব ব্যাংকগুলোকে ১৪ দিন মেয়াদে নগদ অর্থ ধার দেয়া শুরু করে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2