মাথা জোড়ালাগা জন্ম হওয়া সেই মনি-মুক্তার এক যুগ
মাথা জোড়ালাগা জন্ম হওয়া সেই মনি-মুক্তার এক যুগ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:১৪ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মনি-মুক্তা, দুই বোন। ২০০৯ সালের এই দিনে (২২ আগস্ট) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পালপাড়ার জয় প্রকাশ পাল ও কৃষ্ণা রানীর ঘরে জন্ম নেয় ওরা, তবে জোড়া লাগা অবস্থায়। ছয় মাস পর ঢাকার শিশু হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওদের আলাদা করা হয়।
মনি-মুক্তা জানায়, আজ রবিবার তারা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করবে, তিনি যেন পৃথিবী থেকে চিরতরে করোনাভাইরাস তুলে নেন। শুধু তা-ই নয়, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও অনুরোধ জানায় ওরা। দুই বোন ঝাড়বাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। কিন্তু করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় ক্লাস করতে পারছে না। তাই দুজনেরই মন খারাপ। তার ওপর অটো পাস ওদের ভালো লাগেনি। পিইসি পরীক্ষা হলে ভালো হতো বলে জানায় ওরা।
শিশু দুটির বাবা জয় প্রকাশ বলেন, ‘মনি-মুক্তা যখন জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়, তখন আমরা দিশাহারা হয়ে পড়ি। আবার আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের কুকথা। সব যন্ত্রণা কাটিয়ে যখন মনি-মুক্তাকে আমাদের মাঝে সুস্থ অবস্থায় পেলাম, তখন যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। ওদের আমরা না পারছিলাম ফেলে দিতে, না পারছিলাম বাঁচিয়ে রাখতে, আর এখন সেই মনি-মুক্তাই আমাদের ঘরে অফুরন্ত আনন্দের উৎস। তাই শত অভাবের মধ্যেও সেই সময়ের কষ্টগুলোকে ভুলে যেতে আমরা মনি-মুক্তার জন্মদিন পালন করি।’
তিনি বলেন, ‘দুজনেরই একই রঙের জামা পছন্দ। আলাদা রঙের জামা কিনলে কে কোনটা নেবে এটা নিয়ে ঝগড়া বেধে যায়। তাই ওদের জন্য একই রঙের জামা কিনেছি।’ মেয়েদের জামা কেনার জন্য মাটির ব্যাংকে পয়সা জমিয়েছিলেন জয় প্রকাশ। তা দিয়েই বাড়ির পাশের ঝাড়বাড়ী বাজার থেকে জামা কিনেছেন।
জয় প্রকাশ আরো বলেন, ‘মনি-মুক্তার বড় ভাই সজল কুমার পাল ও বোন দিশারী রানী পাল বেলুন, জরি, চিকমিকি কিনে এনেছে বারান্দা সাজানোর জন্য। কেকেরও অর্ডার দেওয়া হয়েছে। ওদের জন্য যতটা সম্ভব ভালো খাবার রান্না করা হবে। সব মিলিয়ে আমাদের বাড়িতে যত উৎসব হয়ে থাকে, তা মনি-মুক্তাকেন্দ্রিক।’