জমি লিখে নিয়ে বৃদ্বা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলো সৎ ছেলে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:২৮ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বৃদ্ধা রহিমন নেসা
প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর রহিমন নেসাকে বিয়ে করেন আনসার আলী। দীর্ঘদিন সংসার করার পরও রহিমন নেসার কোনো সন্তান হয়নি। দ্বিতীয় স্ত্রী রহিমন নেসা, ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে ছিল আনসার আলীর সংসার। ১৫ বছর আগে রহিমন নেসার স্বামী আনসার আলী মারা যান। সৎ ছেলে ও মেয়েদের নিয়েই থাকতো রহিমন নেসা। মৃত্যুর পর স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদ ছিল তার শেষ ভরসা।
কিন্তু সেই সম্পদই বৃদ্ধা বয়সে রহিমনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর সৎ ছেলে আফাজ উদ্দিন ও নাতি মোস্তফা তার অংশের জমি লিখে নিয়েছে বৃদ্ধ বয়সে দেখভাল করার কথা বলে। কিন্তু দেখভাল তো দূরের কথা ছয় মাস আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তার সৎ ছেলে ও নাতি। প্রতিবেশীরা রহিমনকে আশ্রয় দিয়েছিল, কিন্তু আশ্রয়দাতাকে হুমকি দেয়ায় এখন প্রতিবেশীরাও তাকে আশ্রয় দিচ্ছে না।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
৭০ বছর বয়সী রহিমন নেসা উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আনসার আলীর স্ত্রী। তিনি তার সৎছেলে আফাজ উদ্দিন (৬০) ও নাতি মোস্তফা কামালের (৪০) বিরুদ্ধে জমি লিখে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ এনেছেন।
ভুক্তভোগী রহিমন নেসা জানান, স্বামী যখন তাকে বিয়ে করে বাড়িতে আনেন তখন ওই সন্তানরা অনেক ছোট। তিনি আগের ঘরের এক ছেলে ও তিন মেয়েকে নিজ সন্তানের মতো করে বড় করেছেন। কিন্তু শেষ বয়সে তার সঙ্গে এমন আচরণ করবে তা তিনি ভাবতেও পারেননি। সৎ ছেলে আফাজ উদ্দিন ও নাতি মোস্তফা বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর পাড়া-প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন বাড়িতে থাকছেন, একবেলা খাবার জুটলেও আরেক বেলা না খেয়ে থাকতে হয়।
তিনি জানান, সম্প্রতি রহিমনকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর উদ্যোগ নেন সৎ ছেলে আফাজ। এনিয়ে তারা বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানায়, বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হলে কোভিড সনদ থাকতে হবে। তাই শনিবার আরেক নাতনি শারজিন রিকশা যোগে কোভিড ভ্যাকসিনের টিকা দেয়ার কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে বের হন। টিকা দেওয়ার কথা বলে রহিমনকে অন্য কোথাও ছেড়ে আসতে পারেন তারা এমন সন্দেহ হয়। তাই গ্রামের লোকজন বাধা দিয়েছে। এনিয়ে ছেলে আফাজের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, জমি লিখে নিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া খুবই অমানবিক। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি বিষয়টি জেনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পাশাপাশি বৃদ্ধাকে সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।