avertisements 2

নাটকের নায়ক, বাস্তবের খলনায়ক আকবর

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:১৬ পিএম, ১৩ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ১১:২৪ পিএম, ৬ মার্চ, বুধবার,২০২৪

Text

গত রোববার পুলিশের নির্যাতনে নিহত হন রায়হান। এই ঘটনায় বন্দর ফাঁড়ির ইরচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুরো সিলেটবাসীর কাছে এখন খল নায়কে পরিণত হয়েছেন আকবর। যদিও এর আগে সিলেটের লোকজনের কাছে তিনি নায়ক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।

জানা গেছে, আকবর সিলেটের গ্রীনবাংলা নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে অভিনয় করতেন। তার অভিনয় দেখে অনেকেই মুগ্ধ হতেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ফেসবুকে বাড়তে থাকে তার ফলোয়ার সংখ্যাও। তবে এক নিমিষেই সব মাটিতে মিশে গেল। নাটকের নায়ক আকবর বাস্তবের খল নায়ক!

রায়হান ইসলাম নিহতের ঘটনায় আকবর ছাড়া বরখাস্ত হওয়া অন্য তিনজন হচ্ছেন- এএসআই তৌহিদ মিয়া, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদ। আর প্রত্যাহার করা তিনজন হলেন- এএসআই আশীক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী, কনস্টেবল সজীব হোসেন।

এর আগে রোববার ভোরে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন নামে এক যুবক নিহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তার স্বজনরা। নিহত ওই যুবক সিলেটের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করেছে। রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার রাত আড়াইটার দিকে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না করে আসামিদের অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।

বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিনের মতো গত শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে রায়হান আহমদ নিজ কর্মস্থল নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটের ডা. গোলাম কিবরিয়া ও ডা. শান্তা রানীর চেম্বারে যান। পরদিন রোববার (১১ অক্টোবর) ভোর ৪টা ৩৩ মিনিটে ০১৭৮৩৫৬১১১১ মোবাইল নম্বর থেকে রায়হানের মা সালমা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিলে সেটি রিসিভ করেন রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ।

এ সময় রায়হান আর্তনাদ করে বলেন, তিনি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আছেন। তাকে বাঁচাতে দ্রুত টাকা নিয়ে বন্দর ফাঁড়িতে যেতে বলেন রায়হান। এ কথা শুনে রায়হানের চাচা ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে রায়হান কোথায় জানতে চাইলে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য বলেন, সে ঘুমিয়ে গেছে। আর যে পুলিশ সদস্য রায়হানকে ধরে নিয়ে এসেছেন তিনিও চলে গেছেন। এ সময় হাবিবুল্লাহকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাঁড়িতে আসার কথা বলেন ওই পুলিশ সদস্য।

পুলিশের কথা মতো হাবিুল্লাহ আবারও সকাল পৌনে ১০টার দিকে ফাঁড়িতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জানান, রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর রায়হানের চাচা ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, রায়হানকে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। এ সময় হাবিবুল্লাহ পরিবারের অন্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনকে খবর দিলে তারা গিয়ে ওসমানীর মর্গে রায়হানের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ দেখতে পান।

এজাহারে মামলার বাদী উল্লেখ করেন, আমার স্বামীকে কে বা কারা বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে রেখে হাত-পায়ে আঘাত করে এবং হাতের নখ উপড়ে ফেলে। পুলিশ ফাঁড়িতে রাতভর নির্যাতনের ফলে আমার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন।

উৎসঃ   দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস

বিষয়: খলনায়ক

আরও পড়ুন

avertisements 2