নোয়াখালীর ঘটনায় শাস্তি না হলে উত্তাল হবে দেশ: হেফাজতের হুশিয়ারি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:০৬ এএম, ৬ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ০৬:৩৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নোয়াখালীতে নারীকে বিবস্ত্র করে বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হলে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
সোমবার সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদিস ও শিক্ষাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ হুশিয়ারি দেন। এসময় তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
হেফাজত মহাসচিব বলেন, সম্প্রতি সময়ে দেশে ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়েছে। সংবাদপত্রের ভাষ্য অনুযায়ী নোয়াখালীর এ ঘটনা আইয়্যামে জাহিলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। এ ঘটনার বিবরণ শুনে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। মানুষ কিভাবে এতটা হিংস্র হতে পারে! বর্বরোচিত কায়দায় এভাবে কোন মা-বোন নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর চুপ করে ঘরে বসে থাকা যায় না।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, এ ঘটনায় এক মাস পার হয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লম্পটদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি তা বড়ই দুঃখজনক। অবহেলার এ দায় স্থানীয় প্রশাসন এড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, দেশে একের পর ধর্ষণের ঘটনার পরও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে না। যার দরুন ধর্ষণ আজ মহামারির আকার ধারণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, পর্দা নারীর মৌলিক অধিকার। পর্দাতেই নারী সর্বাধিক নিরাপদ। নারীকে নিরাপদে রাখতে পারলে তখন ব্যক্তি, দেশ, জাতি, সমাজ ও সংসার সবকিছুই নিরাপদ। ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এসব রোধে পর্দা বাধ্যতামূলক করার বিকল্প নেই।
জুনায়েদ বাবুনগরী হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নোয়াখালীর বর্বোরোচিত ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না করলে এর প্রতিবাদে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠতে পারে।
২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জে নিজ ঘরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা করে আসামিরা। তারা এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করে। গত এক মাস ধরে এ ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল আসামিরা। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, ঘটনার ৩২ দিন পর গত রবিবার দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল করে দেয় তারা।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নির্যাতনকারীরা ওই গৃহবধূর পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন এবং হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন, তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু, তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি, বরং হামলাকারীদের একজন তার মুখে লাথি মারে ও পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেয়। এরপর একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে।
বারবার আকুতি জানানোর পরও নির্যাতন করা বন্ধ করেনি তারা। এ সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার উল্লাস প্রকাশ করে ‘ফেসবুক’ ‘ফেসবুক’ বলে চেঁচায় আরেকজন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী গত রবিবার রাত পৌনে ১২টায় পৃথক দুটি মামলা করেন। একটি মামলা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও অন্যটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে। দুই মামলায় নয়জনকে আসামি করা হয়।
ওই নারীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা ‘প্রভাবশালী হওয়ায়’ এতদিন ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস হয়নি তাদের।