করোনার সঙ্কটকালে দেখা নেই জনপ্রতিনিধিদের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩০ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০১:১৩ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
মাত্র কয়েকমাস আগেও যারা জনগণের পরম বন্ধু হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছিলেন তাদের দেখা মিলছে না করোনার কবলে পড়া দুস্থদের পাশে। জনপ্রতিনিধিদের এমন কর্মে হতাশ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। জানা যায়, বিগতদিনে নির্বাচনের আগে বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক লোকরা নিজেদেরকে সমাজসেবক হিসেবে প্রচার করে সাহায্য-সহযোগিতা করেন।
গেল বছর করোনার সময়ও তারা মাস্ক বিলি করে সুনাম কুড়িয়েছেন। আবার বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই সরকারি চাল, ডাল ও তেল দুস্থদের মাঝে বিলিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নিজেই সামান্য কিছু অনুদান দিয়ে সমাজসেবা করেছেন। তবে এবার সরকারি কোনো সহযোগীতা না আসায় নেই কোনো তৎপরতা।
মেহেরপুর গাংনীর জুগিরগোফা গ্রামের স্কুল শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম বলেন, কয়েকমাস আগেও যারা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বাজার ঘাট ও গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন। দোয়া চেয়েছেন আমাদের। কোনো বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার হাত মাথায় রেখে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন। আবার চায়ের দোকানে গণহারে চা পান করিয়ে আপ্যায়ন করেছেন, তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না এ বিপদের সময়ে।
একই গ্রামের চায়ের দোকানি সুন্নত বলেন, মাসখানেক আগেও চেয়ারম্যান মেম্বার প্রার্থীরা এসে জনগণকে চা পান করিয়েছেন। আজ সে জনপ্রতিনিধিদের দেখাই যাচ্ছে না। হাড়াভাঙ্গা গ্রামের ভিক্ষুক রমজান আলী বলেন, গত বছর করোনার সময় চাল, ডাল, তেল ও আলু পেয়েছেন। অনেকেই সাহায্য করেছেন। তবে এবার আর কোনো সাহায্য পাননি। চেয়ারম্যান-মেম্বার কেউ কোনো খোঁজই নেননি।
একই কথা জানালেন ভিক্ষুক গোয়াল গ্রামের খোদেজা বেগম। তিনি আরো জানান, আগে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা দেখা হলে হাতে টাকা গুজে দিয়ে কত কথা জিজ্ঞেস করতেন। এখন দেখা হলেও কোনো কথা বলেন না তারা। কিছু দেয়ার ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নেন। মটমুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ বলেন, সরকারি সহযোগিতা এখনও আসেনি। তাই দেয়া হচ্ছে না। ব্যক্তিগত সাহায্য কতটুকুই বা করা সম্ভব?
তবে আসন্ন ঈদে গরীবদের জন্য কিছু করা হবে বলেও জানান তিনি। একই কথা জানালেন তেতুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান। সকল ইউপি চেয়ারম্যান সরকারি বরাদ্দের দিকে চেয়ে আছেন। ষোলটাকা ইউপির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলবার হোসেন বলেন, করোনাকালীন সময়ে কাউকে সহযোগিতা করা হয়নি। তবে ঈদ উপলক্ষে কিছু সাহায্য করা হবে।
অপরদিকে উল্টো অবস্থানে রয়েছেন গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। করোনা রোধে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রচার প্রচারণা এবং মাস্ক বিতরণ করছেন। সারা শহরে জীবানুনাশক পানিও ছিটাচ্ছেন তিনি। এছাড়া খেটে খাওয়া মানুষদের ব্যক্তিগতভাবেও সহযোগিতা করছেন তিনি।