এইচএসসি ফলপ্রকাশেও ভিড় নেই মিষ্টির দোকানে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:৩৭ পিএম, ৩১ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:২৭ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
দেশের অন্যান্য জেলাগুলোর মতো কুষ্টিয়াতেও এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২০ এর ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে অনলাইনে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় সরকার অটোপাস ফলাফল প্রকাশ করেছে। বিগত বছরগুলোর মতো কুষ্টিয়ায় কোনো আনন্দ উৎসবের চিত্র এবং শিক্ষার্থীদের উল্লাস চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কুষ্টিয়ার কোনো আনন্দ উল্লাসের চিত্র দেখা যায়নি। শহরের মিষ্টির দোকানেও কোনো ভিড় নেই। মজমপুরের শিল্পী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, নিউ দধি ভান্ডার, এনএস রোডের মৌবন, বড়বাজার এলাকার অশোক দধি ভান্ডার সহ বিভিন্ন মিষ্টির দোকান ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। দোকানগুলোতে চলছে সপ্তাহের অন্য দিনের মতোই বেচা-বিক্রি। বিগত বছরগুলোর মতো মিষ্টির দোকানে ভিড় চোখে পড়েনি।
মজমপুর এলাকার নিউ দধি ভান্ডারের মালিক মিঠুন ঘোষ বলেন, এর আগে রেজান্টের দিন ক্রেতাদের ভিড় থাকতো। আমরাও পূর্বপ্রস্তুতি নিতাম। এবার ওঠ মাসের কারণে আমরা কোনো প্রস্তুতি নেইনি ক্রেতার ভিড় নেই। করোনায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস-উল্লাস বন্ধ।
তিনি আরও বলেন, আগে যেকোনো পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরপরই ক্রেতার ভিড় লেগে যেতো মিষ্টির দোকানে। আগে ফলাফলের দিন টানা বেচা-বিক্রি হতো। করোনা ভাইরাস ও অটোপাসের জন্য কোন ক্রেতা এখনো পর্যন্ত মিষ্টি নিতে আসিনি।
শিল্পী হোটেলের মালিক নিতাই চন্দ্র সাহা বলেন, আগের বছরগুলোতে যেকোনো রেজাল্টের দিন বড় বড় উৎসবের মতো আমরা প্রস্তুতি নিতাম। ফল প্রকাশের পর থেকে মিষ্টি ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকত। কিন্তু এবার কোনো ভিড় নেই আমাদেরও কোনো প্রস্তুতি নেই। এসময়ে মিষ্টি বিক্রির জন্য দোকানে অতিরিক্তি কর্মচারী রাখা হতো। তবে এবার মোটেই বেচা-বিক্রি নেই। অটোপাসের জন্য কোন উৎসবও নেই।
অশোক দধি ভান্ডারের ম্যানেজার বলেন, ফলাফলের দিন মিষ্টি বিক্রির ধুম পড়ে যেতো। সারাদিন মিষ্টি ওজন দিতে দিতেই পার হতো। এবার অটোপাস, কোন উৎসব উল্লাস নাই। এর আগে যে কোনো পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা মানেই মিষ্টি খাওয়ানোর ধুম পড়তো। আমাদের দোকানগুলোতেও চলতো ভালো বিক্রি।
পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসিতে এ গ্রেড পেয়েছে তানভীর হাসান। তিনি বলেন, এসএসসি যখন পাস করি তখন পরীক্ষা দিয়ে পাস করছিলাম। রেজাল্টের দিন উল্লাস করেছিলাম। সে সময় একটা উৎসব তৈরি হয়েছিল। এবার আমাদের কলেজ করোনার জন্য বন্ধ। পরীক্ষাও হয়নি। অটো পাস দিয়েছে। এজন্য আগের মত আনন্দ নেই।
কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী রবিন বলেন, আগের বছরগুলোতে ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দিন উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হতো। এবার করোনার জন্য স্কুল কলেজ বন্ধ। অটোপাস দিয়েছে সরকার। এই অটোপাসের জন্যই আনন্দ-উল্লাস নেই।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার এ প্লাস পাওয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, অটোপাশে আবার মিষ্টি কীসের অন্যবার ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে পড়ালেখা করে পাস করতো। স্কুল-কলেজ করোনার জন্য বন্ধ সেজন্য কষ্টও করেনি। অটোপাসে কোন আনন্দ উৎসব নেই। কষ্টের ফল মিষ্টি হয়। কিন্তু এবার কষ্ট করেননি, রেজাল্টের জন্য আনন্দ ও মিষ্টিও বিতরণ করা হচ্ছে না।
কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জায়েদুর রহমান ও জেলা শিক্ষা কল্যান অফিসার ফয়জুল হাসান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের কোন তথ্য দিতে পারেনি।