avertisements 2

যশোরের মাটিতে সৌদির আজওয়া খেজুরের চাষ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১০ এপ্রিল,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:০১ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

পেশায় দিনমজুর হয়েও সৌদির আজওয়া খেজুর চাষ শুরু করেছেন বাবুল হোসেন। চার বছর আগে ইউটিউবে সৌদির আজওয়া খেজুর চাষ পদ্ধতি দেখে খেজুর চাষে উদ্বুদ্ধ হন। এরপর এক আত্মীয়ের কাছ থেকে কিছু সংখ্যাক সৌদির আজওয়া খেজুর সংগ্রহ করেন তিনি। পরীক্ষামূলকভাবে খেজুরের বীজ নিজের দুই বিঘা জমিতে রোপণ করেন। গাছ বেঁচে যাওয়ায় এ খেজুরের বাণিজ্যিক চাষের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বাবুল।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের বেড়ারু পানি গ্রামের এই বাবুল হোসেন বর্তমানে তার লিজ নেওয়া দুই বিঘা জমিতে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে পাঁচ শতাধিক খেজুর গাছ রোপণ করেছেন। ইতিমধ্যে কয়েকটি গাছে ফল আসতেও শুরু করেছে। জেলার বাহিরের ব্যবসায়ীদের কাছে ফলন ধরা এক একটি খেজুর গাছের দাম উঠেছে এক লাখ টাকা করে।

বাবুল হোসেন জানান, প্রথমদিকে টাকা খরচ করে লিজ নেওয়া জমিতে খেজুরের বীজ বুনতে দেখে এলাকার লোকজন পাগল বলে উপহাস করতো। অনেকে বলতো ‘টাকা জলে দিচ্ছি’। এরপর দিন যত যায় তত খেজুর গাছের চারা বড় হতে থাকে, পরবর্তীতে আমি আরও চারশতাধিক বীজ রোপন করি। সেগুলোও আশানুরূপ ভাবে বাড়তে থাকে। বর্তমানে চার বছর আগের রোপন করা কয়েকটি গাছে ফল আসতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে একজন ক্রেতা এসে বড় গাছের দাম এক লাখ টাকা বলে গিয়েছেন। তবে আমি বিক্রি করবো না, আমি এখানে খেজুর উৎপাদন ও বাণিজ্যিক চাষ করবো। এখানে গ্রামের আরও লোকের কর্মসংস্থান হবে। ব্যাংক-এনজিও গাছের জন্য লোন দিতে চায় না, সেজন্য সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ যদি এগিয়ে এসে সহায়তা করে তবে যশোরে খেজুরের ব্যাপক চাষ করা সম্ভব। তিনি দাবি করেন আজওয়া খেজুর গাছের পরাগায়ণ কৃষি বিভাগের থেকে করার কথা, তবে কৃষি বিভাগ তা করেনি, ফলে গাছের মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে তাকেই পরাগায়ণ করতে হচ্ছে।

বাবুল হোসেনের প্রতিবেশী মহাসিন আলম বলেন, বাবুল হোসেন যখন প্রথম সৌদি খেজুরের বীজ রোপন করে তখন গ্রামের মানুষেরা অনেক উপহাস করেছে। তবে তিনি আজ সফল, তার খেজুর গাছে খেজুর আসতে শুরু করেছে। কৃষি বিভাগ একটু নজর দিলে তার পক্ষে খেজুর চাষ আরও সহজলভ্য হবে।

নাভারণের বাসিন্দা আশরাফুল আলম বলেন, পার্শবর্তী উপজেলায় আজুয়া খেজুরের চাষ হচ্ছে শুনে দেখতে এসেছি। আসলে যশোর জেলা খেজুর গাছের জেলা, এ জেলায় সৌদির খেজুর চাষ করা সম্ভব যদি সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা সহায়তা করেন। এ ছাড়া গ্রামের বেকার যুবকেরা এ চাষে ঝুকলে যশোরের মাটিতে সৌদির আজুয়া খেজুরের ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি গ্রামের এক শ্রেণির মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এ বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তারা বাবুল হোসেনের আজুয়া খেজুরের বাগান পরিদর্শন করেছেন, আমরা তাকে সার্বিক সহোযোগিতা করার জন্য চেষ্টা করবো।

বাবুল হোসেনের দেখাদেখি অনেকেই স্বপ্ন বুনছেন যশোরের মাটিতে খেজুরের বাণিজ্যিক চাষ করার। তবে ব্যাংক এনজিও এ খাতে লোন দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ হস্তক্ষেপ করলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে এ খেজুর চাষ, এমনটাই মনে করছেন কৃষি খাতে জড়িতরা।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2