‘লকডাউন’ মানবেন না পাবনার ব্যবসায়ীরা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:৩১ পিএম, ৪ এপ্রিল,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২২ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ রোধে শর্ত সাপেক্ষে সারা দেশে চলাচল ও কাজে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার তা না মানার ঘোষণা দিয়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ব্যবসায়ীরা।
পাবনার ভাঙ্গুড়া বাজারের বস্ত্রহাট গার্মেন্টের স্বত্বাধিকারী ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল মতিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন ‘প্রতিটি ব্যবসায়ী সংগঠনকে অনুরোধ করছি, আপনার যার যার অবস্থান থেকে লকডাউনের প্রতিবাদ করুন। প্রয়োজনে আমরা সবাই মিলে মাঠে নামবো। আমাদেরকে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে। আমরা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো মুখাপেক্ষী হয়ে বাঁচতে চাই না।’
আরেক গার্মেন্ট ব্যবসায়ী রানা আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘লাখো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মধ্যবিত্তের নীরবে আত্মহত্যার কারণ হবে লকডাউনের সিদ্ধান্ত।’
লকডাউন গুঞ্জনের শুরু থেকেই ভাঙ্গুড়ার ক্ষুদ্র ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন। তারা দ্রুত এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান। ক্ষুদ্র ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন উপজেলার ব্যবসায়ী নেতারাও।
ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হাফিজ উদ্দিন বাহার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘লকডাউন চাই না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের যে কর্মচারী আছে তাদের দায় আর কতদিন তারা বহন করবে। কাজেই সরকার লকডাউন দিলে এই সমস্ত কর্মচারীদের বেতন সরকারকেই দিতে হবে। এফবিসিসিআই সভাপতিকে বিষয়টা দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। না খেয়ে মরার চেয়ে খেটে খেয়ে মরা ভালো।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। সোমবার থেকে দেশ এক সপ্তাহ লকডাউনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায় পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ব্যবসায়ীরা লকডাউনের এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
তাদের দাবি, লকডাউনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে হবে। যাতে ক্ষুদ্র ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা অর্থকষ্টে না ভোগে। তবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ অন্যান্য নির্দেশনা কঠোরভাবে পালনের ব্যবস্থা করে এটি করতে হবে।
এমনকি লকডাউন বাতিল না করলে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।
ভাঙ্গুড়া বাজার দোকান মালিক ও বণিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শহীদুজ্জামান বলেন, ‘গত বছর ঈদের আগ মুহূর্তে লকডাউনের কারণে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই এবছর আবার ঈদের আগে লকডাউনের ঘোষণায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা তাদের জীবিকার প্রয়োজনে আমাদের কাছে উপজেলা পর্যায়ে লকডাউন না দিতে দাবি জানিয়েছেন। তাই আমরাও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবির বিষয়টি তুলে ধরব। যেন স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালনের ব্যবস্থা করে উপজেলা শহরে লকডাউন না দেওয়া হয়। কারণ লকডাউন হলে আর্থিক দৈন্যতায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়বেন। আশা করি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারের সর্বোচ্চ মহল বিষয়টি দেখবেন।’