avertisements 2

থাকার জায়গা নেই, খোলা আকাশের নিচে ভর্তীচ্ছুরা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩১ মে, বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:১৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

রাত সাড়ে ৩টা। বেঞ্চে শুয়ে আছেন এক ছেলে। পাশে মশার কয়েল জ্বলছে। পাশে থাকা একটি চেয়ারে মশার কামড়ে গুটিসুটি হয়ে বসে আছেন আরেক ভর্তীচ্ছু ছাত্রী। চোখে ঘুম ঘুম ভাব। কাছে গিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে বললেন, ‘ভাইয়া আমার বাসা সাতক্ষীরায়। লোকাল ট্রেনে আসছি। তাই আসতে দেরি হয়েছে।

থাকার জায়গা নেই, তাই এই দোকানদার ভাই জেগে আছে দেখে দোকানের পাশে আছি।’ 
তাদের সঙ্গে আলাপ থেকে জানা যায়, ছাত্রীটি ‘এ’ ইউনিটের (মানবিক) ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থী জান্নাতুল তাসনিম। সকাল ১১টায় তার পরীক্ষা। খুলনা থেকে এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায় লোকাল ট্রেনে রাজশাহীতে এসেছেন।

সঙ্গে আছেন তার ভাই হবিবুর রহমান। সকাল ১১টায় খুলনার মহানন্দা লোকাল ট্রেনে চড়ে র‌ওনা দেন তারা। রাত ১২টায় রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছান। এত রাতে কোথায় থাকবেন, কার কাছে যাবেন তা ভেবে নিরুপায় হয়ে ক্যাম্পাসের পরিবহন চত্বরের সাদ্দামের দোকানের পাশে বসে ছিলেন। এক পর্যায়ে রাত গভীর হতে শুরু করলে তাসনিমের ভাই ঘুমিয়ে পড়েন।

পরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, তাসনিমের মতো কয়েক শ শিক্ষার্থী গভীর রাতে ক্যাম্পাসের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর ঘিরে দাঁড়িয়ে কিংবা কেউ বসে আছেন। কেউ বা বুদ্ধিজীবী চত্বরে, একাডেমিক ভবনের সামনে, আবার অনেকের ঠাঁই হয়েছে কেন্দ্রীয় মসজিদে। অনেক অভিভাবক ঠাঁই নিয়েছেন তাদের পাশাপাশি এসব জায়গায়।

ক্যাম্পাসের বুদ্ধিজীবী চত্বরের কাছে আসতেই কথা হয় মাওলানা আবুল কালামের সঙ্গে। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে এসেছেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে। বাড়ি সিলেটে। তিনি জানতে চান, ‘বাবা ওয়াশরুমটা কোথায়?’ নিরুপায় হয়ে উত্তর দিলাম, ‘আংকেল আশপাশে ছাত্রীদের কোনো ওয়াশরুম নেই, হলে যেতে হবে।’ 

টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে বাস ভাড়া করে এসেছেন একটি কোচিংয়ের ৫০ জনের মতো ভর্তীচ্ছু। তাদের মধ্যে কথা হয় স্বপ্না বিশ্বাস ও প্রাণকৃষ্ণ পণ্ডিতের সঙ্গে। তারা জানান, ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরে হলে এত কষ্ট করে আসা লাগত না। ভোর সাড়ে ৪টায় ক্যাম্পাসে পৌঁছেছেন তারা। বাসে ঘুমাতে পারেননি। জানেন না ক্লান্ত শরীরে পরীক্ষা কেমন হবে।

রাবিতে মেয়ে হীরামণিকে নিয়ে এসেছেন অভিভাবক রুস্তম আলী‌। বাড়ি নরসিংদী সদরে। তিনি বলেন, ‘গতকাল নরসিংদী সদর থেকে ৫টার দিকে র‌ওনা দিয়েছি। এখানে পৌঁছেছি সোয়া ৪টায়। দীর্ঘ বাসযাত্রায় শরীরটা ক্লান্ত লাগছে। সঙ্গে ওর মা‌-ও আছে। মেয়েটার ৯টায় পরীক্ষা, জানি না ভালো হবে কি না।’ তিনি জানান, ঢাবির মতো যদি রাবিতেও বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার আয়োজন করা হতো, তাহলে অনেক ভালো হতো তাদের জন্য।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2