avertisements 2

হঠাৎ মাঠে আওয়ামী লীগ বাড়ছে উত্তেজনা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ নভেম্বর, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০১:১৩ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪

Text

বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে হঠাৎ নগরী এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী একযোগে মিছিল-সমাবেশ করায় নগরীতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীর ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রচার মিছিলে বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে বিএনপির ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। দুপুরে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি চলাকালে বানারীপাড়ার উত্তর বাজারে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহামুদ মাহাবুব মাস্টার। এ ছাড়া সোমবার উজিরপুর উপজেলার ইচলাদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লিফলেট বিতরণকালে ছাত্রলীগের হামলায় বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন খান অভিযোগ করেন, গণসমাবেশ উপলক্ষে মঙ্গলবার বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী বন্দরে বিএনপির লিফলেট বিতরণ ও গণমিছিল কর্মসূচি ছিল। লিফলেট বিতরণ শেষে বন্দরে গণমিছিল শুরু করা হলে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আলাউদ্দিন মিলনের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। লাঠিচার্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হারুন জমাদ্দার, কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনছুর সিকদার, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক এনায়েত হোসেন খানসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি বলেন, কলসকাঠী বন্দরে বিএনপির দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় দুই গ্রুপকে বন্দর এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলা হলে তারা স্বেচ্ছায় চলে যায়। লাঠিচার্জ করার অভিযোগ অসত্য।

পরে দুপুরে বানারীপাড়া বন্দরের উত্তর বাজারে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি চলাকালে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহামুদ মাহাবুব মাস্টারকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের ৮-১০ জন কর্মী-সমর্থক এসে তাঁর হাত থেকে লিফলেট ছিনিয়ে নেয় এবং লাঞ্ছিত করে। তবে এ অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা। উজিরপুরে সোমবার ইচলাদি বাসস্ট্যান্ডে গণসমাবেশের লিফলেট বিতরণকালে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর হামলায় বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন উজিরপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদ খান। তবে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী বলেছেন, হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, বরিশাল নগরীতে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ সক্রিয় হয়েছে আওয়ামী লীগ। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে মিছিল ও সমাবেশ করে দলটি। মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় যুবলীগের মহাসমাবেশ এবং ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে স্থানীয় নেতাকর্মী সংগঠিত করতেই এই মিছিল-সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এখন থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে মিছিল-সমাবেশ করার নির্দেশনা দিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, শনিবার বরিশাল নগরে বিএনপির বড় জমায়েত ঘিরে আওয়ামী লীগের এ ধরনের কর্মসূচি সংঘাত ও অস্থিরতাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই দুই পক্ষেরই উচিত নিজেদের সহিষুষ্ণ করে দলীয় কর্মসূচি পালন করা।

স্থানীয় রাজনীতি-সচেতন মহল মনে করে, আগামী ৫ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে দলটির নেতাকর্মী- সমর্থককে চাপে রাখতে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মাঠে নামানো হয়েছে।
তবে নগরীতে আওয়ামী লীগের এ কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই জানিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, 'বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা যুবলীগের মহাসমাবেশে ১০-১২ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে যাব। তাই নিজেদের সংগঠিত করার জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মসূচি দিয়েছি।
মহানগর আওয়ামী লীগের হঠাৎ এই মিছিল-সমাবেশের কর্মসূচিকে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবি করে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুামান ফারুক বলেন, আমাদের গণসমাবেশ ব্যাহত করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একের পর এক চক্রান্ত করছে। এসব করে কোনো লাভ হবে না।

বরিশালে বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতেই পারে। তবে আশা করব, তারা সহনশীল পরিবেশ বজায় রাখবে। যদি তারা গণসমাবেশের জনস্রোত বাধাগ্রস্ত করতে মহড়া দিয়ে, বাধা দিয়ে, মারধর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, তাহলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2