‘আ.লীগ ক্ষমতা হারালে প্রথম রাতেই ৩ লাখ নেতাকর্মী মারা যাবে’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:১৩ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন ফরাজী। ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন ফরাজী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী না থাকেন তাহলে অবস্থাটা কী হবে, সেটা ভেবে দেখেন। যদি রাজাকারের দল ক্ষমতায় আসে তাহলে প্রথম রাতেই আওয়ামী লীগের কমপক্ষে তিন লাখ নেতাকর্মী মারা যাবে।’
আজ বুধবার বিকেলে ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. শাহাবুদ্দিন ফরাজী এ মন্তব্য করেন।
মো. শাহাবুদ্দিন ফরাজী বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের এ দেশে রাজনীতি করার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছিলেন। গোলাম আযমদের পাকিস্তান থেকে এ দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া ৯১ সালে ক্ষমতায় এসে রাজাকার আলবদরদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। তিনি মুজাহিদ আলবদরদের মন্ত্রী বানিয়ে এ দেশের স্বাধীনতাকে অপমান করেছেন। অপমান করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের, অপমান করেছেন আমাদের জাতীয় পতাকাকে। যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকেন, তাহলে অবস্থাটা কী হবে সেটা ভেবে দেখেন। আবারও যদি রাজাকারের দল ক্ষমতায় আসে, তাহলে প্রথম রাতেই কমপক্ষে আওয়ামী লীগের তিন লাখ নেতাকর্মী মারা যাবে। সেই তিন লাখের মধ্যে আমি-আপনি সবাই। কাজেই নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিতে হবে।’
শাহাবুদ্দিন ফরাজী আরও বলেন, ‘নেতাকর্মীরা যদি এক ও অভিন্ন থাকে তাহলে বাংলাদেশে এমন কোনো রাজনৈতিক শক্তি নাই, যারা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমি কী পেলাম আর কী পেলাম না, সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো শেখ হাসিনাকে আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবার এই দেশে সরকার গঠন করবে—এটাই আমাদের শপথ।’
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যখন পকিস্তানের প্রেতাত্মারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে নেমেছে, ঠিক সেই সময়ে ঘিওরের এই সম্মেলন অনেক গুরুত্ব বহন করে। বিগত দিনে যারা দলের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছে, তারাই দলে আসবে। কোনো অনুপ্রবেশকারী বসন্তের কোকিলের ঠাঁই হবে না।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি আজ রাজাকার, আলবদরদের ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দেয়। তারা এই দেশটাকে পাকিস্তান বানাতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের একজন নেতাকর্মী বেঁচে থাকতে তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মির্জা আজম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিএনপি ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সব খুনিরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ঘ্রাণ পাচ্ছি। ‘আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করে এমন কোনো রাজনৈতিক দল, এমন কোনো শক্তি বাংলাদেশে নেই। তাই আমাদের রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়েই আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে ইনশা আল্লাহ।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ নিরাপদে ও শান্তিতে থাকে মন্তব্য করে মির্জা আজম বলেন, আওয়ামী লীগ বটগাছের মতো দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ছায়া দিচ্ছে।
উপজেলার ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের শুরু হয়। দীর্ঘ আট বছর পর ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব।
সম্মেলনে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম মিয়া মিন্টু। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিকেলে দ্বিতীয় অধিবেশনে আব্দুল আলিম মিন্টু সভাপতি ও হামিদুর রহমান আলাই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি মির্জা আজম। সম্মেলনে জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।