avertisements 2

রেজা কিবরিয়াকে পাত্তা দিচ্ছেন না কূটনীতিকরা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৩৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

কদিন আগেই রেজা কিবরিয়া ছিলেন কূটনীতিতে ব্লু আইড বয়। বিভিন্ন কূটনীতিক মহলে তাকে দাওয়াত দেওয়াতে হতো। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং তিনি কি করতে চান সে সম্পর্কে তার জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা শুনত।

কূটনীতিকদের এই আশকারায় উদ্বেলিত হয়েছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রীর পুত্র। তিনি এই উৎসাহেই ইংরেজিতে বক্তৃতা দেওয়া শুরু করেছিলেন বিভিন্ন জনসভায়। তার প্রধান লক্ষ্য ছিল যে কূটনীতিকদের আকৃষ্ট করা।

আর এ কারণেই তিনি নতুন রাজনৈতিক দলের নেতা হয়েছিলেন। যদিও রাজনীতির তৃণমূল থেকে তার উঠে আসার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এমনকি নিজের কখনোই সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। বরং অর্থনীতিবিদ এই ব্যক্তি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করাতে অভিজ্ঞ ছিলেন।

২০১৮ এর নির্বাচনের আগে রেজা কিবরিয়া গণফোরামের টিকিট নিয়ে গণফোরামে যোগ দেন এবং গণফোরামের টিকিট নিয়ে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে তার ভরাডুবি হয়েছিল। নির্বাচনের পর পর কূটনীতিকদের আগ্রহের কারণে ডঃ কামাল হোসেন তাকে কাছে ডেকে নেয় এবং গণফোরামের নেতা করেন।

কিন্তু ডঃ কামাল হোসেন শীঘ্রই বুঝতে পারেন যে রেজা কিবরিয়াকে দিয়ে আর যাই হোক রাজনীতি হবে না। এরপর গণফোরামে তিনি পরিত্যক্ত হয়ে যান। তবে গণফোরামে তার স্বল্প মেয়াদের রাজনৈতিক জীবন গণফোরাম কে ভাঙ্গনের পথে নিয়ে যায়।

ডঃ কামাল হোসেনের দীর্ঘদিনের শুভাকাঙ্ক্ষী এবং রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে পরিচিত মোস্তফা মহসীন মন্টু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর মত লোকেরা গণফোরাম থেকে বেরিয়ে যান রেজা কিবরিয়ার কারণেই। এরপর রেজা কিবরিয়া নূর চৌধুরীর নতুন রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে যোগদান করেন এবং বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে এই যোগদানের পিছনে কূটনীতিকদের হাত ছিল।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে একটি বিকল্প ধারার সূচনা করতে চাইছিল। এমন একজন রাজনৈতিক নেতাকে তারা খুঁজছিলেন যারা সুশীল সমাজের আস্থাভাজন হবেন এবং সুশীল সমাজকে লাইমলাইটে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। সেদিক থেকে উচ্চশিক্ষিত অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া তাদের প্রথম পছন্দ ছিল।

এ কারণে রেজা কিবরিয়াকে বিভিন্ন জায়গায় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো, কূটনৈতিক বিভিন্ন চা চক্রে তিনি মিলিত হতেন, এমন কি দূতাবাসগুলোর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও তাকে আমন্ত্রণ জানানো হতো। কিন্তু খুব শীঘ্রই দেখা যায় যে, রেজা কিবরিয়া নতুন রাজনৈতিক দল যেটি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের উদ্যোগে গঠিত হয়েছে সেই রাজনৈতিক দলে একজন অলংকার মাত্র। রেজা কিবরিয়ার সিদ্ধান্ত এবং মতামত ছাড়া একাই নুর নতুন এই রাজনৈতিক দলটি পরিচালনা করছিলেন।

এর ফলে রেজা কিবরিয়া মধ্যে হতাশা দেখা দেয়, তিনি বিদেশে পাড়ি দেন। কিন্তু সেখান থেকে তিনি আবার দেশে ফিরে এসে রাজনীতিতে সরব এবং সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতদিনে ঝানু কূটনীতিকরা বুঝে ফেলেছেন যে, রেজা কিবরিয়া রাজনীতিতে তেমন সাফল্য অর্জন করতে পারবেন না। রাজনীতিতে তাঁর ভবিষ্যৎ নেই। এই কারণেই এখন রেজা কিবরিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে কূটনীতিকরা।

এখন রেজা কিবরিয়া নিজেই উপযাচক হয়ে বিভিন্ন কূটনৈতিক মহলে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। কিন্তু অধিকাংশ দূতাবাস থেকেই তাকে তেমন কোনো সাদর অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে না। বরং দূতাবাসগুলো তাকে এই বলে এড়িয়ে যাচ্ছে যে, আমরা এখন ব্যস্ত আছি, অন্য কাজে ব্যস্ত ইত্যাদি নানা অজুহাত তুলে রেজা কিবরিয়াকে এড়িয়ে যাচ্ছেন তারা।

কূটনীতিকরা বুঝতে পেরেছেন যে, রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্ব নেয়ার মত বা বিকল্প রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার মত সক্ষম ব্যক্তি নন। বরং একজন পরিশীলিত ব্যক্তি, যিনি তিনি সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুশীল সমাজের মত করে বক্তব্য রাখবেন, তেমন কাজের জন্যই রেজা কিবরিয়া পারদর্শী।

যেমন বলা হয় বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে, তেমনি রেজা কিবরিয়া সুশীল সমাজের মধ্যে শোভিত থাকলে তাকে মানায়। তাকে রাজনীতির চড়াই-উতরাইয়ের যেমন টেকসই মনে করছেনা কূটনীতিকরা তেমনি জনগণ ও জনগণের কাছে তার খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা হবে বলে তাঁরা মনে করছে না। এ কারণেই কূটনীতিকদের কাছে এখন অপাংক্তেয় পরিণত হয়েছেন রেজা কিবরিয়া।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2