avertisements 2

দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন সুশীলরা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২১ আগস্ট,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫৩ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। এই শোক দিবসে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটে সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপি-জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত কয়েকজন মানবাধিকারকর্মী। কোন বিবেচনায় কেন কিভাবে তাদেরকে নেয়া হলো, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। কারণ, এই আমন্ত্রণে এমন ব্যক্তিদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যারা সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা রকম অপপ্রচারে লিপ্ত এবং কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার কারণে তাদের বৈধতাও বাতিল হয়েছে।

গুজব ছড়িয়ে এদের কেউ কেউ কারাবরণও করেছে। তারপরও এ ধরনের ব্যক্তিদেরকেই শুধু কেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলো, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। এটি সরকারের একটি দুর্বলতা বটে। সরকারের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। সেই মানবাধিকার কমিশন কেন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যে সংগঠনগুলো কাজ করে তাদেরকে চিহ্নিত করলো না এবং তাদেরকে পাঠালো না সেটিও একটি বড় প্রশ্ন।

এই বৈঠকে যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো তাদের মধ্যে রয়েছে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া অধিকার উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নিবার্হী আদিলুর রহমান, যিনি বিএনপি-জামায়াতের আমলে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ছিলেন, একজন বিএনপিপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। হেফাজতের তাণ্ডবের সময় তিনি ভুয়া মৃত্যুর সংবাদ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রচার করেছিলেন এবং এজন্য তাকে কারাবরণও করতে হয়েছিলো।

এছাড়াও এই সভাতে আমন্ত্রণ জানানো হয় পরিবেশ আইনবিদ সমিতির নির্বাহী প্রধান সৈয়দ রিজওয়ানা হাসানকে। পরিবেশের সঙ্গে মানবাধিকারের সম্পর্ক একটি জটিল বিষয় এবং উন্নত দেশগুলোই এ সম্পর্ক সরলীকরণ করতে পারে না। সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে আলোচনায় বেলার প্রধান নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ রিজওয়ানা হাসানকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হলো সেটি নিয়ে একটি বড় রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, বেলা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে না, তারা পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে কাজ করে।

বেলার প্রধান নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান একজন স্বাধীনতাবিরোধীর পরিবারের সন্তান। বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম অপপ্রচারের ক্ষেত্রে বেলার প্রধান নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যেটি তার ম্যান্ডেট নয়, যে বিষয় নিয়ে তারা কাজ করেন না সেই বিষয়ে তিনি বারবার কথা বলেন। যেমন- গুম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সংখ্যালঘু নিপীড়ন ইত্যাদি।

বুঝাই যায় যে, সরকারকে বিব্রত করার জন্যই তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এছাড়াও বিএনপি নিয়ন্ত্রিত মায়ের ডাককেও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং সেখানে মায়ের ডাকের পক্ষ থেকে গুমের নানারকম হিসেব-নিকেশ ইত্যাদি উপস্থাপন করা হয়েছে, যেই তথ্যগুলোকে এর আগেই সরকারের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে। মায়ের ডাকের ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট আপত্তি রয়েছে। এছাড়াও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে ব্যারিস্টার সারা হোসেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সারা হোসেন কোনো রকম মানবাধিকারের কোনো কর্মকাণ্ড করেছেন বলে কারো জানা নেই।

একমাত্র ড. কামাল হোসেনের কন্যা, এটি তার পরিচয়। সেই পরিচয় দিয়ে তিনি মানবাধিকারের বিষয়ে নানারকম সবক দিয়ে থাকেন। ব্যারিস্টার সারা হোসেনের স্বামী ডেভিড বার্গম্যমান যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বাংলাদেশে কাজ করেছিলেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারের তিনি একজন অন্যতম ব্যক্তি।

এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের পত্নী মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামকে। এই চক্রটি হলো এক-এগারোর কুশীলব, যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে স্থগিত রেখে সুশীল সমাজের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিলো। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়গুলো যে, এই অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসেছিলেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কোন বিবেচনায় মানবাধিকারবিষয়ক বৈঠকে উপস্থিত হন, তা নিয়ে সকলেই বিস্মিত।

যারা এই আমন্ত্রণ করেছেন তাদের সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য ছিলো এবং তা ছিল যে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মনগড়া অভিযোগ উস্কে দেওয়া। শুধু সরকারের বিরুদ্ধে নয়, ওই অনুষ্ঠানে তারা এই সমস্ত প্রতিনিধিরা যে সমস্ত বক্তব্য দিয়েছেন তা আসলে দেশের বিরুদ্ধেই চলে গেছে। দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করে, দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে কার লাভ? যদিও তর্কের খাতিরে ধরে নেই, যে সমস্ত রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট সুশীলরা মানবাধিকার বিষয়ে কথা বলেছেন তাদের বক্তব্য আমলে নিয়ে যদি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাংলাদেশ সম্পর্কে কোন নেতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করেন তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশের সাধারণ জনগণ। সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে সুশীলদের এত রাগ কেন সে প্রশ্নও বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে এবং এই তালিকা কারা কিভাবে তৈরি করলো সেই প্রশ্নটিও বেশ জোরালোভাবে উঠেছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2