দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণ মন্ত্রী-নেতাদের দুর্নীতি: মির্জা ফখরুল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৪০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সর্ব সাধারণের ক্রয় ক্ষমতায় নাগালে রাখার দাবিতে করা সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। রবিবার (০৬ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে এই ছাত্র সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তারা দুর্নীতি করে ফুলেফেপে বড় হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে কেনো? কারণ সয়াবিন তেলের যারা ব্যবসা করে তারা বেশিভাগই হচ্ছে আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আজকে এই গ্যাসের বাড়ছে কেনো? কারণ যে এলপিজি গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করে নিয়ে আসছে, তাদের (সরকার) একমাত্র শিল্প উপদেষ্টা এর সঙ্গে জড়িত। সুতরাং মূল্যবৃদ্ধির একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে- এই সরকারের দুর্নীতি, দুর্নীতি এবং দুর্নীতি। সেই সাথে তাদের অযোগ্যতা অপদার্থতা।
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা তখনই সম্ভব হবে, যখন একটা গণতান্ত্রিক সরকার হবে। মানুষের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে তখনই, যখন একটা গণতান্ত্রিক সরকার আসবে। আর, সে সরকার হবে জনগণের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে।’
পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। এটাই হবে একাত্তর সালের চেতনাকে বাস্তবায়ন করা।’
এ ছাড়া ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশে যা কিছু হয়েছে কল্যাণকর, সবকিছু ছাত্রদের হাত ধরে এসেছে। আবার জেগে উঠতে হবে। এ ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আসুন আমরা সে লক্ষ্যে এগিয়ে চলি।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘দেশকে আওয়ামী লীগ সরকার এমন জায়গায় নিয়ে গেছে, যেখানে মানুষ বেঁচে থাকার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। মানুষ এখন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যে খাবারটা দরকার, সে খাবারটা সে পাচ্ছে না। তার বেঁচে থাকার জন্য যে নিরাপত্তা দরকার, সে নিরাপত্তাটুকু সে পাচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দুর্ভাগ্য আমাদের, যারা এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম। একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম—এখানে সব মানুষ মোটা কাপড় পরবে, মোটা ভাত খেয়ে বেঁচে থাকবে, শান্তিতে থাকবে, নিরাপদে থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকার যত বার ক্ষমতায় এসেছে, তারা মানুষের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।’
১৯৭৫ সালের বাকশালের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ সে একই ঘটনা ঘটছে। স্বৈরশাসকেরা অনেক সময় ভালোভাবে দেশ চালায়, আইয়ুব সরকারও চালিয়েছিল। কিন্তু, এ সরকার দেশটাও চালাতে পারে না। মানুষকে খাবার দিতে পারে না। মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারে না। কর্মসংস্থান নেই, তাই বেকার ছেলেদের চাকরি দিতে পারে না।’
এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে আটক করে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, কথা বললেই ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা যখন দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সারা দেশে আন্দোলন শুরু করেছি, তখন তাদের টনক নড়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এ ভয়াবহ সরকার, যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, তারা টিকে আছে। তাদের হটাতে হবে। গভীর চক্রান্ত রয়েছে, সে চক্রান্ত হচ্ছে এ দেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে, তারা একটা রাজতন্ত্র চালাবে।’