জামায়াত নেতার পুত্রবধূ হলেন আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:১২ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জাতীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-জামায়াত সম্পর্কে অহি-নকুল পরিস্থিতি বিরাজ করলেও কক্সবাজারের স্থানীয় রাজনীতিতে এর প্রভাব একেবারেই গৌন করে তুলেছে আলোচিত একটি বৈবাহিক সম্পর্ককে ঘিরে। সম্প্রতি দল দুটির শীর্ষ দুই নেতার ছেলে মেয়ের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে জেলার প্রায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সরব উপস্থিতি এবং একত্রিত হবার দৃশ্য প্রাণ সঞ্চার করেছে উভয় দলের নেতা কর্মীদের মাঝে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশকিছু স্থিরচিত্র দেখে মনে হবে আওয়ামী লীগ-জামায়াতে কখনোই কোনো ধরণের বিরোধ ছিলো না। বিষয়টি বেশিরভাগ নেটিজেন ইতিবাচক ভাবে নিলোও কেউ কেউ করেছেন তীব্র সমালোচনাও।
সম্প্রতি টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাফর আলমের মেয়েকে বধু করে ঘরে তুলেছেন জেলা জামায়াতের নেতা এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী। তিনি উখিয়ার একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এবং জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি।
শনিবার তাঁর আইনজীবী পুত্র হাসানুল বান্নার সাথে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের মেয়ে সুফিয়ার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়।
এই বিয়েকে ঘিরে শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের তারকামানের হোটেল সী-গালে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের মিলনমেলা বসে। সেখানে অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মজিবুর রহমন, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, সাংসদ কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নূর আহমদ আনোয়ারী, উখিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী।
বিয়েতে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও এবি পার্টির নেতারা একাত্মা হয়ে উঠেন। এক সঙ্গে খাবার গ্রহণের পর সবাই মিলে জমকালো আড্ডা দিয়েছেন রাজনীতির মাঠে মুখ দেখাদেখি বন্ধ এসকল রাজনীতিকরা।
প্রাণবন্ত ওই আড্ডায় উঠে আসে পুরনো দিনের রাজনৈতিক অনেক স্মৃতি এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলাপ হলেও পরিবেশ ছিল অত্যন্ত হাস্যোজ্জল ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। সেখানে আলোচনা হয় বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনে গঠিত সার্চ কমিটি নিয়েও। এনিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা হলেও না কারো কোন গোসসা দেখা যায়নি।
রাজনীতিতে চির বিরূপ থাকলেও সামাজিক অনুষ্ঠানে জেলার সকল রাজনীতিকদের এমন সৌহার্দপূর্ণ ভাব দেখে অনুষ্ঠানের সাধারণ অতিথিরা অবাক হয়েছেন।
এ নিয়ে সাধারণ অতিথিরা মন্তব্য করে, বিয়ে অনুষ্ঠানের মতোই যদি আমাদের সমাজ ও দেশের পরিবেশটা হতো! সব দলের নেতারা একসাথে বসে যদি আমদের সমাজ এবং দেশটা পরিচালনা করতে পারতেন, তাহলে কতই না ভালো হতো!
জানা গেছে, আগেই আকদ সম্পন্ন হয়েছিলো হাসানুল কন্যা ও সুফিয়ার। কিন্তু করোনার কারণে বিবাহত্তোর সংবর্ধনা করতে পারেননি। শনিবার কক্সবাজার শহরে তারকা হোটেল সী-গালে সীমিত পরিসরে করা হয় আনুষ্ঠানিকতা।
এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টিসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও আইনজীবী, সাংবাদিক, আলেম ওলামা ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ এবং পারিবারিক আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।