পল্টনে ব্যারিস্টার মওদুদের জানাযায় লাখো মানুষের ঢল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:০০ এএম, ২০ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২১ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদের জানাজায় দলটির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। শুক্রবার সকাল এগারোটায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রখ্যাত এই আইনজীবীর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা উপলক্ষে বিএনপির নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা পৌনো এগারোটায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের লাশ নিয়ে আসা হয় নয়া পল্টন কার্যালয়ের সামনে। বেলা এগারোটায় জানাজা শেষ হয়। জানাজা শেষে প্রিয় নেতার লাশ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নয়া পল্টনের জানাজায় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শুধু একজন রাজনৈতিক ছিলেন না, তিনি একজন কিংবদন্তি ছিলেন। তার দীর্ঘ জীবনে তিনি অনেক পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রতিটি পরিবর্তনেই তার মূল লক্ষ ছিলো একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
ফখরুল বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক, আইনজীবী ও নেতা হিসেবে বর্ণাঢ্য জীবন শেষ করে প্রায় ৮১ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
ব্যারিস্টার মওদুদের এই চলে যাওয়া শুধুমাত্র বিএনপির জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য, জাতির জন্য একটা অপূরণীয় শুন্যতার সৃষ্টি করলো।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একজন অভিভাবক ছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও আমাদের দল অত্যন্ত নিজেদেরকে শুন্য মনে করছি এবং তার অভাব অনুভব করছি। আজকে আপনারা সবাই দেখেছেন এই বরেণ্য ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষ এসেছেন। তারা শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। আমরা পরম করুণাময় আল্লাহ তায়লার কাছে এই দোয়া করবো, আল্লাহ তায়ালা যেনো তার সকল গুনাহ মাফ করে দিয়ে তাকে বেহেশত নসিব করেন।
জানাযা শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমান, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান সালাউদ্দিন, ঢাকা জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নীরব, মোরতাজুল করিম বাদরু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন,কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মো. মাইনুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
এরপর হেলিকপ্টারে করে মরহুমের লাশ নোয়াখালী নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে নোয়াখালী বসুরহাট ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা মাঠে নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক করব স্থানে বাবা মা'র কবরের পাশে দাফন করা হবে।
এর আগে সকাল ১০ টায় প্রিয় কর্মস্থল হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রধান বিচারপরতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি নুরুজ্জামান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর (বীর উত্তম), আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ঢাকা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ সহ কয়েক হাজার আইনজীবী জানাযায় অংশ নেয়।
জানাযা শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কাফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকাল ৯টায় মরহুমের লাশ সর্বস্তরের জনগণের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হলে সেখানে সর্বস্তরের মানুষ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর লাশ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমেদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার লাশ দেশে নিয়ে আসা হয়।