উগ্র মৌলবাদীদের তৎপরতা সম্পর্কে সরকার কি সতর্ক হবে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:১১ পিএম, ২৯ নভেম্বর,রবিবার,২০২০ | আপডেট: ১১:৪৩ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
দেশে এখন রাজনীতি নেই। কোভিড-১৯-এর কারণে সভা-সমাবেশ হতে পারছে না। বিএনপি কচ্ছপের মতো খোলসের ভেতর থেকে মুখটা বের করে আবার লুকিয়ে ফেলেছে। এই লুকোবার আগে ১০টি বাস তারা পুড়িয়েছে। জামায়াতিরা খেলাফত মজলিশের সাইনবোর্ডের আড়ালে ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার একটি ক্ষুদ্র সমাবেশ থেকে ঐ এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠায় বাধাদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
সবচাইতে বড় খবর হলো, হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্ব দলের কট্টরপন্থিদের হাতে গেছে। হেফাজত এতদিন ছিল জামায়াতের মতো ধর্মীয় রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি সাধারণ ধর্মীয় দল। ইসলাম শিক্ষা ও ইসলাম প্রচার ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। এখন হেফাজতের আদি ও পুরোনো নেতৃত্ব পরিবর্তিত হয়েছে। শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের নেতৃত্ব দখল করার পর দলটিতে কট্টরপন্থিদের আধিপত্য বিস্তার লাভ করেছে।
এই যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্তঃসলিলা পরিবর্তন, তা অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয়েছে। রাজনীতিতে এই মেরুকরণটি ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এতকাল দেশে রাজনীতি সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক—এই দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। আগে আমরা মুসলিম লীগ ও বিএনপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি দেখেছি। এই রাজনীতিও অনেক সময় গণতন্ত্রের বাধ্যবাধকতা মেনে চলে। যেমন ভারতে বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দল ক্ষমতায় আছে। তারা গণতন্ত্রের বিধিব্যবস্থা এখনো মেনে চলছে। কিন্তু বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলের পরিবর্তে যদি শিবসেনা বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক উপদলের মধ্যে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসে, তাহলে ভারতের অবস্থা কী দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমেয়।
আমরা বাংলাদেশে বিচারপতি সাত্তার ও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অঘোষিত সাম্প্রদায়িক দল বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখেছি। প্রথম দফা এই সরকার তার সাম্প্রদায়িক চরিত্র সত্ত্বেও গণতন্ত্রের বাধ্যবাধকতা অনেকটাই মেনে চলেছে। তা আমরা দেখেছি। কিন্তু যখনই ধর্মান্ধ দল জামায়াত বিএনপির সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় বসেছে, তখনই দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, নারী নির্যাতন প্রচণ্ডভাবে বেড়েছে এবং ধর্মীয় স্বৈরাচারের প্রতাপে সব ধর্মের মানুষই তাদের নাগরিক অধিকার, স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে। দেশে সন্ত্রাস দশ গুণ বেড়েছে।
এক ভারতীয় সাংবাদিক এ ব্যাপারে চমত্কার মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সহজেই যুদ্ধ করা যায়। কারণ মানুষকে বোঝানো যায়, এরা জনগণের শত্রু, কিন্তু ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা অসম্ভব। কারণ, ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্টরা তাদের সব কাজই ধর্মের নির্দেশে বা ধর্মের মর্যাদা রক্ষার জন্য করছেন বলে দাবি জানান। তখন আল্লাহ-খোদার ভয়ে মানুষ সহজে ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চায় না।
একটা উদাহরণ দিই, ধর্মান্ধতা কীভাবে মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোধকে হত্যা করে। লাহোরের কাছে এক গ্রামে কুয়ো থেকে পানি তুলতে গিয়ে এক খ্রিষ্টান নারীর সঙ্গে এক মুসলমান নারীর তর্ক বাধে। যিশু, না মোহাম্মদ (স.)—কে বড়? দুজন নারীই অশিক্ষিত। খ্রিষ্টান নারী দাবি করে, তাদের নবি যিশু মুসলমানদের পয়গম্বরের চাইতে অনেক বড়। এটি একটি গ্রাম্য ঝগড়া। কিন্তু এই ঝগড়ায় খ্রিষ্টান নারী রসুলুল্লাহ (স.)-এর অবমাননা করেছে বলে আদালতে ফাঁসির দণ্ড লাভ করে। তার প্রাণরক্ষার জন্য স্থানীয় শিক্ষিত নারী সমাজ আন্দোলন শুরু করে। তখন পাঞ্জাবের গভর্নর ছিলেন এক উদারহূদয় প্রবীণ মুলসমান। তিনি খ্রিষ্টান রমণীর প্রাণদণ্ডের আদেশ নাকচ করেন।
অমনি তার বিরুদ্ধে জামায়াত, নেজামে ইসলাম প্রভৃতি ধর্মান্ধ দল গর্জে ওঠে। গভর্নরকে মুরতাদ, কাফের, আল্লাহর শত্রু ঘোষণা করা হয়। অবশেষে ঐ গভর্নরকে তারই এক দেহরক্ষী গুলি করে হত্যা করে। এই হত্যাকারীকে পাকিস্তানের কোনো আদালত খুনের অপরাধে শাস্তি দিতে পারেনি। তাকে মাথায় নিয়ে হাজার হাজার জনতা আদালত প্রাঙ্গণেই নৃত্য করে এবং তাকে খেতাব দেওয়া হয় ‘মুজাহিদে ইসলাম’।
ধর্মান্ধতা কী ভয়ংকর তা আমরা আফগানিস্তানে দেখেছি। মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় জিহাদিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত তথাকথিত ‘ইসলামিক খেলাফতেও’ দেখেছি। ভারতের মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যে শিবসেনা ও বজরংয়ের দ্বারা দলিত ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর যে ভয়াবহ অত্যাচার চলেছে, তাও দেখেছি। একজন দরিদ্র মাংস বিক্রেতা তার দোকানে গরুর মাংস না রাখা সত্ত্বেও শিবসেনারা তাকে পরিবারসহ হত্যা করে।
ধর্মান্ধতা কোনো পবিত্র ধর্মেরই পোষকতা করে না। তা ধর্মের নাম ভাঙিয়ে অন্য ধর্ম ও মতের মানুষের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালনোর হাতিয়ার। সাধারণ ফ্যাসিবাদের চাইতেও ধর্মান্ধ ফ্যাসিবাদ মানবতার আরো বড় শত্রু। অতীতে ইহুদি ও খ্রিষ্টান মৌলবাদীরা তাদের নিজ নিজ ধর্মের নাম ভাঙিয়ে মানুষের ওপর চরম অত্যাচার চালাত। জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে ঈশ্বরদ্রোহিতার নামে শুধু পুরুষদের নয়, নারীদেরও পুড়িয়ে মারত।
ইসলামের নবি (স.) এসব কথা জানতেন বলেই তার বিদায় হজের ভাষণে মুসলমানদের বারবার হুঁশিয়ার করেছেন, ‘তোমরা ধর্ম নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি কোরো না। তোমাদের আগে বহু জাতি ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি করে ধ্বংস হয়ে গেছে।’ ইসলামের তাগিদা হলো, ‘কোনো মুসলমানকে তুমি অমুসলমান বলিও না, যতক্ষণ সে তার কাজকর্ম ও আচরণ দ্বারা প্রমাণ করে সে অমুসলমান।’
আমরা পবিত্র ধর্মের এসব স্পষ্ট নির্দেশ অমান্য করে যখন মুসলমান-অমুসলমাননির্বিশেষে সবারই শিরশ্ছেদ করি ধর্মের দোহাই পেড়ে, তখন তা কি ধর্ম, না ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ? এই ফ্যাসিবাদই আজ পৃথিবীর সর্বত্র ওয়াহাবিজম নামের আড়ালে জিহাদিদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এই উগ্র ওয়াহাবিজমকে ইসলামের খোলস পরিয়ে প্রচার করছিল জামায়াতিরা। জামায়াত পাকিস্তান আমলেই নিজেকে রাজনৈতিক দল বলে ঘোষণা করে এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসে নেতৃত্ব দেয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ হওয়ায় ধর্মান্ধ সন্ত্রাসী দল জামায়াতকে অন্যান্য ধর্মীয় দলসহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
খলনায়ক জিয়াউর রহমান রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করার পর সামরিক ফ্যাসিবাদ জামায়াতসহ ধর্মান্ধ ফ্যাসিবাদকে আবার দেশে মাথা তুলতে দেয়। পলাতক জামায়াতি নেতারা দেশে ফিরে আসে এবং জিয়াউর রহমানের স্ত্রীর সাহায্যে রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারিত্ব লাভের সুযোগ পায়। ক্ষমতায় বসে এবং ক্ষমতার বাইরে থাকার সময়ও জামায়াত দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের গণহত্যায় সাহায্যদানকারী জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেন এবং তাদের সন্ত্রাস দমন করেন। মনে হয়েছিল বাংলাদেশ ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের কবলমুক্ত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের এই আশা সত্য প্রমাণিত হয়নি। দেশে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসের রাজনীতির সময় হেফাজত ছিল একটি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামি শিক্ষা আন্দোলন। রাজনীতির সঙ্গে তার কোনো যোগ ছিল না বলা হতো। জামায়াত দেশের মানুষের কাছে ঘৃণ্য ও প্রত্যাখ্যাত রাজনৈতিক দল হওয়ার পর তাদের একদল সম্ভবত হেফাজতে ঢুকে পড়ে এবং হেফাজতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের চেষ্টা চালায়।
’৭১-এর ঘাতক ও দালালদের বিচারে ফাঁসি দেওয়ার সময় হেফাজতের রাজনৈতিক চরিত্র প্রকাশ পায়। ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের যাতে বিচারে চরম দণ্ড দেওয়া হয়, সেজন্য শাহবাগ চত্বরে লাখ লাখ যুবজনতার সমাবেশ শুরু হয় এবং গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে ওঠে। তখন এর পালটা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জামায়াত ও বিএনপি চক্রান্ত চালায়। হাজার হাজার মাদ্রাসাছাত্র এনে হেফাজতি অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে।
এর পেছনে জামায়াত ও বিএনপি সক্রিয় ছিল। তার প্রমাণ, ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতি সমাবেশের পক্ষে বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্য সমর্থন ও সহযোগিতা ঘোষণা করেন এবং শেখ হাসিনাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে দেশত্যাগের আলটিমেটাম দেন। এ সময় শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলকে চার্চিলের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন কৌশলের সঙ্গে তুলনা করা যায়। চার্চিল জানতেন, হিটলার ফ্রান্স দখল করার পর সরাসরি ব্রিটেন আক্রমণ করবে। যদি তাই হয়, ব্রিটেন আত্মরক্ষা করতে পারবে না। চার্চিল যুগে ব্রিটিশ রাজনীতিক স্যার স্টাফোর্ড ক্রিপসকে মস্কো সফরে পাঠান এবং বিশ্বময় এমন ধারণা তৈরি করেন যে ইঙ্গ-মার্কিন শক্তির পরম শত্রু সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের পরম মৈত্রী তৈরি হয়েছে। স্ট্যালিন ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে অর্ধেক দখল করে নেওয়ায় হিটলারের সন্দেহ আরো বৃদ্ধি পায়। তিনি দেড়শ মাইল জুড়ে সেনা সমাবেশ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মোড় ঘুরে যায়। ব্রিটেন রক্ষা পায়।
বাংলাদেশে হেফাজতিদের উত্থানের মুখে শেখ হাসিনার চার্চিলিয়ান রাজনৈতিক কৌশল ছিল অভিনন্দন ও সমর্থনযোগ্য। তিনি দেশে গণতন্ত্রকে মৌলবাদী হামলা থেকে রক্ষার জন্য মৌলবাদী শক্তিকে দ্বিধাবিভক্ত করে দেন। তিনি হেফাজতের প্রয়াত আমির আল্লামা শফির সঙ্গে আপস করেন এবং হেফাজত ও মাদ্রাসা শক্তিকে জামায়াত ও বিএনপির খপ্পর থেকে সরিয়ে আনেন।
এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল, কিন্তু তারপর হেফাজতিদের খুশি করার জন্য অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া ঠিক হয়নি। এই অতিরিক্ত ছাড় পাওয়ার ফলে হেফাজতের ভেতরের উগ্রপন্থিরা শক্তিশালী হয়েছে। হেফাজতের দাবিতে পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্যসূচি পরিবর্তন, সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণ একটি সেকুলার, গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য ভয়ানক ভুল কাজ হয়েছে। এই কাজের জন্য শেখ হাসিনা সম্পর্ণ দায়ী তা আমি মনে করি না। দুর্ভাগ্যক্রমে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় কিছু হেফাজতি বা হেফাজতিমনা মন্ত্রী ঢুকে পড়েছেন। যারা আওয়ামী লীগার সেজে এসব করছেন। বিদেশে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে ঢাকার যে বাংলা ছবি, তাকে তারা দেশে প্রদর্শনের ছাড়পত্র দেয় না এই অজুহাতে যে এই ছবি দেখে মৌলবাদীরা উত্তেজিত হবে।
হেফাজতিদের তুষ্ট রাখার জন্য সরকারের যে পশ্চাত্পসরণ নীতি, তাই আজ সরকারের জন্য বুমেরাং হয়েছে। হেফাজতের আমির আল্লামা শফির মৃত্যুর পর নতুন আমির হয়েছেন বাবুনগরী। তিনি উগ্রপন্থি বলে পরিচিত। দলের ভেতরে ক্যু ঘটিয়ে তিনি আমির হয়েছেন। আমির হয়েই তিনি জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি দিয়েছেন। তিনি কোথা থেকে এসব হুমকি দেওয়ার সাহস ও শক্তি পাচ্ছেন? অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, এর পেছনে গোপনে শক্তি জোগাচ্ছে জামায়াত, বিএনপি এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র অথচ উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী।
শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক বুদ্ধি ও পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা আমি রাখি না। প্রমাণিত হয়েছে, প্রায় আমার মেয়ের বয়সি প্রধানমন্ত্রী আমাদের চাইতে রাজনৈতিক বুদ্ধি ও কৌশল অনেক বেশি রাখেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও তার কূটনৈতিক বুদ্ধির সাফল্য আজ প্রশংসিত। তবু কথায় বলে, ‘গরিবের কথা বাসি হলে ফলে।’ এই প্রবাদ অনুসরণ করেই প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয়ে জানাই, মৌলবাদীদের আর ছাড় দেওয়া উচিত হবে না। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ব্যাপারে সরকার কঠোর হোক। ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের উচিত সভা-সমাবেশ করা এবং মূর্তি ও ভাস্কর্য্য যে এক নয়, তা সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে বলা এবং পবিত্র ইসলামের নাম ভাঙিয়ে এরা যে ধর্মের অবমাননা করছে তাও সাধারণ মানুষকে জানানো। দেশে অনেক সত্ আলেম-ওলামা আছেন, সরকার চাইলে এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের মুখোশ খুলে দিতে এগিয়ে আসবেন তারা।
সরকারের প্রতি আমার আরেকটি সতর্কবাণী। সরকার যদি মনে করে থাকেন এই উগ্রবাদীদের মন জুড়িয়ে চলে তাদের রাজনৈতি সমর্থন পাবে, তাহলে দারুণ ভুল করবে। আগামী নির্বাচনে আগেই দেখা যাবে বিএনপি ও জামায়াতের মরা ঘোড়াকে এই হেফাজতিরাই ঘাস খাওয়াচ্ছে। গুজব শুনছি, আগামী নির্বাচনে যে বিরোধীদলীয় জোট গঠিত হবে, তার নাম হবে ইসলামি জনতার জোট। কৌশলগত কারণে বিএনপি এই জোটের সামনে থাকবে না। একটি মৌলবাদী দলকে সামনে খাড়া করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। সরকার সময় থাকতে ভেবে দেখুক, এই প্রস্তাবিত সামনের মৌলবাদী দলটি কারা হতে পারে?