রতন কুণ্ডু
দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা
প্রকাশ: ১০:২৩ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২০ | আপডেট: ১১:৫২ এএম, ৬ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বঙ্গবন্ধু তনয়া বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা | বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া
বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া এই ক্ষণজন্মা মহিয়সী নারীর জন্মদিনে জানায় প্রানঢালা অভিনন্দন ও অফুরান শুভেচ্ছা |
১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্টের কালো রাত্রিতে এক বোন ছাড়া বাবা-মাসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছিল ঘাতকরা- সেই শোক বুকে নিয়ে দেশের মাটিতে পা রেখে হন্তারকদের বিচারের প্রত্যয় জানিয়েছিলেন; যে বাঙালির মুক্তির জন্য বাবা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তাদেরকে ‘হারানো স্বজনদের’ জায়গায় বসিয়ে এই জাতির উন্নয়নে নিজেকে সঁপেছিলেন।
১৯৮১ সালে দেশে ফিরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করে দেশের রাজনীতির পটপরিবর্তনের সূচনা করেন এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাসীন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কাজ সমাধা করে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলেন | জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন তার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৮০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা খবর পান, ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে।
১৭ মে শেখ হাসিনা যেদিন দেশে ফেরেন, সেদিন প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার জনতা জড় হয়েছিল তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরে। সেদিন বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সভাপতি - ড. রতন কুণ্ডু ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদকঃ জনাব রফিক উদ্দিন ও সে কাফেলায় সামিল হয়েছিলেন |
পঁচাত্তরের পর থেকে বাংলাদেশকে যেভাবে দেখেছি, গণতন্ত্র বেয়নেট বুলেটে যেভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল, রক্তাক্ত হয়েছিল; সে দেশে বাস্তব অর্থে জীবন-মৃত্যুকে তুচ্ছ মনে করে এ দেশের নিপীড়ত মানুষকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে তিনি পা রেখেছিলেন। চট্টগ্রামের লালদিঘীর ময়দান, নাটোরের সমাবেশে, বঙ্গবন্ধু এভেন্যুতে একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা করে তাঁকে বারবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিলো | শেখ হাসিনার উপর হামলাসহ তার জেল-জুলুম, কারা-নির্যাতন, এসব শুধু তার পথ চলার পাথেয় নয়, বলতে গেলে প্রতিক্ষণের সঙ্গী। কিন্তু নিজের উপর আক্রমণের বিচার কিন্তু হয়নি। তার প্রতিজ্ঞা এত সুকঠিন ছিল যে তিনি তা থেকে এক চুলও নড়েননি।
শেখ হাসিনার সে প্রতিজ্ঞা ছিল, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের মধ্যে তিনি যে শুধু পিতৃহত্যার বিচার করেছেন, তা নয়। তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে আইনের শাসন বাংলার মানুষ ভুলেই গিয়েছিল। সে বিচার করেছেন কোন আদালতে? সাধারণ মানুষ যে আদালতে গিয়ে পিতা হারানোর বিচার চায়, সেই আদালতেই। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র এসেছে, এটা কার লড়াইয়ের বিনিময়ে বাংলার মানুষ জানে।
একজন কন্যা তার অন্তহীন যাত্রা… ঝড়-জল-আঘাত-বুলেট-গুলি…রক্তাক্ত ও কণ্টকাকীর্ণ পথ যাকে কোনো অবস্থাতে দমাতে পারেনি। নবম জাতীয় সংসদে নির্বাচনে জিতে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
ডিজিটাল বাংলাদেশের নানা সুফল যখন জনগণ এখন পেতে শুরু করেছে | মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে অভূতপূর্ব বিজ্ঞানমনস্কতা, আজকে উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে আমরা সারা পৃথিবীর সঙ্গে সহজে নিজেদের যুক্ত করতে পারছি।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীণ নেতা যোগ দিয়েছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভায়। যারা যোগ দেননি, তাদের কেউ জেলে, কেউ পালিয়ে বেড়িয়েছেন |১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত যেসব কাজ সম্পূর্ণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন, দলের ভেতরে-বাইরে সব বৈরিতা মোকাবেলা করে তিনি যে পুরো পথটা হেঁটেছেন, সেদিন তিনি যে অঙ্গীকার করে করেছিলেন, তার অধিকাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন বলে আমরা মনে করি | ১৭ মের সংগ্রামের আরেকটা রূপ আমরা দেখি ২০০৭-০৮ সালে বন্দি হওয়ার আগে তিনি যেমন বলেছেন, বাংলার মানুষ আন্দোলন করে, সংগ্রাম করে আমাকে অবশ্যই মুক্ত করবে, এ সরকার অবশ্যই নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে এবং সে নির্বাচনে বাংলার জনগণ নৌকাকে জয়ী করবে।
“এই যে প্রত্যয়, আমার মনে হয় না এটি তার আশা ছিল, এটি ছিল তার স্বপ্ন, এটি তিনি বিশ্বাসও করতেন। আমার কাছে মনে হয়, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার গভীরতা থাকলে, সে ধরনের ইতিহাসবোধ থাকলে, মানুষের সাথে সম্পৃক্ততা থাকলে ভবিষ্যৎ দেখবার দৃষ্টি মানুষের তৈরি হয়।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া এই মহান নেত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করছে |