avertisements 2

কুখ্যাত ইনসেন কারাগারে রাজনৈতিক বন্দিদের যে জীবন 

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৫ জুন,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:০৮ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

ছবি: সংগৃহীত 

মিয়ানমারের বেশির ভাগ রাজনীতিবিদ এই কারাগারের নাম জীবনেও ভুলবেন না, ইনসেন। ব্রিটিশ আমলে ১৮৭৭ সালে ইয়াঙ্গুনে বানানো এ কারাগারকে প্রথম থেকেই বর্বরতার প্রতীক হিসেবে মনে করা হতো। আর এ জন্যই নাম দেওয়া হয় 'কুখ্যাত কারাগার'।

ইনসেন কারাগার আবার আগর সেই 'তকমা' ফিরে পেয়েছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার তাদের বিরোধীদের বেশির ভাগকেই এখানে আটকে রেখে শাস্তি দিচ্ছেন। তবে এ কারাগারের ভেতরের পরিবেশ সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। এর কারণ, এখানেই অনেককে জীবনের শেষ সময়গুলো কাটাতে হয় বাধ্য হয়ে। কোনো মাধ্যমে ভেতরের ছবিও প্রকাশ করা যায় না।

সম্প্রতি ইনসেন কারাগারের ভেতরের অনেক ছবি প্রকাশ করেছেন দেশটির এক চিত্রশিল্পী। সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে মাউম পো নামের এই চিত্রশিল্পীকে ৬ মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে। সে সময়কার অনেক ছবি এঁকেছেন তিনি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেসব ছবির প্রদর্শনী চলছে থাইল্যান্ডে।

সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ২০২১ সালে আটক করা হয় প্রকৌশল বিষয়ে অধ্যয়নরত সি থু অংকে। সে সময় আরও ১৯ জনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে বেশির ভাগই সি থু অংয়ের মতো কমবয়সী। এদের পরে বিচারের আওতায় এনে রাখা হয় ইনসেন কারাগারে।

চিত্রশিল্পী মাউম পোর ছবিতে যে পরিস্থিতি দেখা গেছে, তা মিলে যায় সি থু অংয়ের পরিবারের কাছ থেকে শোনা বর্ণনার সঙ্গে। সি থু অংয়ের মা বলেন, কারাগারের অবস্থা এতই খারাপ, সেখানে যে খাবার দেওয়া হয় তা খেয়ে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব। এ কারণে অনেকে বাইরে থেকে কয়েদিদের জন্য খাবার পাঠান। তাতে তার প্রতি মাসে খরচ হয় ১ লাখ ৪০ হাজার কিয়াট (৯ ডলার)।

মাইও মাইন্ট নামের এক ব্যক্তি জানান, তার ছেলেকে ২০২১ সালের অক্টোবরে আটক করা হয়। ১০ মাস ইনসেন কারাগারে ছিল সে। মাইও মাইন্টের ছেলে জানায়, 'আমাদের সেলে ১০০ জন কয়েদী রাখা হয়েছিল। জায়গা মাত্র ৩০ বর্গমিটার। ঘুমানোর সময় অন্য পাশ ফেরার সুযোগও ছিল না। তবে মাসে এক থেকে দেড় লাখ কিয়াট দিতে পারলে থাকার জন্য ভালো জায়গা মিলতো।'

আর যাদের বিশেষ নির্যাতনের ঘরে নিয়ে যাওয়া হতো সেখানে তাদের বর্বর নির্যাতন করা হতো। বেশ কয়েক জন কয়েদি জানান, বেরিয়ে আসার পর সেসব কয়েদিদের কেউই দাঁড়াতেই পারতেন না। চিত্রশিল্পী মাউম পোর ছবিতে এমন একজনকে দেখা যায়, যিনি সবসময় ফ্লোরে শুয়েই থাকতেন। উঠতে পারতেন না। আরেকজন ধরে উঠাতে হতো।


চিত্রশিল্পী মাউম পোর ভাগ্য অবশ্য ভাল ছিল। তাকে যেভাবে ধরে আনা হয়েছিল, তিনি ভেবেছিলেন মেরেই ফেলা হবে। মাউম পোর একটি ছবিতে দেখা যায়, একটি ঘরে শুয়ে আছেন অনেকে। এ ছবির ব্যাপারে তিনি বলেন, 'ওই কক্ষে সর্বোচ্চ দেড় শ মানুষ থাকতে পারেন। কিন্তু সেখানে ছিল প্রায় ৫০০। মাছের মতো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে যেন।'

প্রহরীদের ছবি এঁকে দিয়ে কিছুটা সুবিধা পেতেন পো। বেশির ভাগ সময়ই ছবি আঁকতে হতো আড়ালে থেকে। ৬ মাস পর মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। অনেকের মতো তিনিও পালিয়ে আসেন থাইল্যান্ডে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2