প্রাচুর্য দারিদ্র্যের চেয়ে ভয়াবহ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:৪৯ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
একজন ব্যক্তির পক্ষে তার নিজের অথবা পরিবারের জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়ের মতো মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করতে না পারাকে দরিদ্রতা বলা হয়। বিশ্ব ব্যাংকের ‘ভাষায়’ দরিদ্রতা হলো ক্ষুধা। দরিদ্রতা হলো প্রয়োজনীয় বাসস্থান না থাকা। দরিদ্রতা হলো রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে অক্ষমতা। দরিদ্রতা হলো বিদ্যালয়ে প্রবেশাধিকার না থাকা এবং পড়তে না পারা। দরিদ্রতা হলো বেকারত্ব, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা।’ সামগ্রিক বিবেচনায় দরিদ্রতা হলো এমন একটি অর্থনৈতিক অবস্থা যখন একজন মানুষ জীবনযাত্রার ন্যূনতম মান অর্জন এবং সামান্য আয়ের কারণে জীবনধারণের অপরিহার্য দ্রব্যাদি ক্রয়ের সামর্থ্য হারায়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শোষণ, দুঃশাসন, বাড়তি জনসংখ্যা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা প্রভৃতি দরিদ্রতার কারণ। ইসলামের দৃষ্টিতে দরিদ্রতা হচ্ছে এমন এক অবস্থা যা মানবজীবনের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অপর্যাপ্ততা।
দরিদ্রতার কারণে একজন মানুষ নীতি ও নৈতিকতা চ্যুত হয়ে চুরি, রাহাজানি, ছিনতাই প্রভৃতিতে জড়িয়ে পড়ে। দরিদ্রতার পেছনে ক্ষেত্রবিশেষে প্রাকৃতিক কারণ থাকলেও সমাজ ও রাষ্ট্রের যারা অধিপতি তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড দরিদ্রতা সৃষ্টিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। দরিদ্রতাকে অনেকে অভিশাপ হিসেবে দেখলেও সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থাই দরিদ্রতার পেছনের কারণ।
দরিদ্রতার বিপরীত অবস্থান হলো প্রাচুর্য। প্রাচুর্য হলো প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে বিলাসপূর্ণ জীবনযাপন। একজন ব্যক্তির হেফাজতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থের সমাগম ঘটলে তিনি প্রাচুর্যের অধিকারী হন। সৎ ও বৈধভাবে উপার্জনের মাধ্যমে যেমন একজন ব্যক্তি প্রাচুর্যের অধিকারী হতে পারেন অনুরূপ অসৎ ও অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমেও প্রাচুর্যের অধিকারী হওয়া যায়। যারা সৎ ও বৈধ উপার্জনের মাধ্যমে প্রাচুর্যের অধিকারী হন তারা মাত্রাতিরিক্ত বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেন না, অপর দিকে অসৎ ও অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে প্রাচুর্যের অধিকারীরা মাত্রাতিরিক্ত বিলাসিতা ছাড়াও মদ, জুয়া, নারী প্রভৃতিতে আসক্ত হয়ে পড়েন। এদের স্ত্রী ও সন্তানরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ হাতে পেয়ে বেপরোয়া জীবনযাপনের পথে পা বাড়ান। এসব পরিবারের কর্তাব্যক্তি নিজেকে নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে নিজ স্ত্রী ও সন্তানরা কিভাবে দিনযাপন করছে তার খোঁজখবর রাখার ফুরসত পর্যন্ত এদের নেই।
পিতার অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে প্রাচুর্যের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা সন্তানদের অনেকেই প্রতিনিয়ত আনন্দ-ফুর্তিতে মত্ত থাকতে চায়। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের দেখা যায় ডিজে পার্টি, নাইট ক্লাব, শিশা বার, হোটেল বা বিদেশে বান্ধবীদের সাথে অন্তরঙ্গভাবে ভোগবিলাসে লিপ্ত। এদের মধ্যে যারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
দরিদ্রতার চেয়ে প্রাচুর্য যে ভয়াবহ তা সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি ঘটনা দেশ ও সমাজের ভিতকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। একটি ঘটনায় দেখা গেছে পুলিশ দম্পত্তির ইংরেজি মাধ্যমে পড়–য়া একমাত্র কন্যা বাবা-মায়ের অগোচরে যে ডিজে পার্টি ও নাইট ক্লাবে যাতায়াত করত সে বিষয়ে তারা খোঁজখবর রাখত না। কিন্তু কন্যার বেপরোয়া জীবনযাপনের চাহিদা মিটানোর অর্থ জোগানে তারা যে খুব একটা বাদ সাধতো এমনটি লক্ষণীয় ছিল না। বাবা-মায়ের তদারকি ও নজরদারির অভাবে মেয়েটি যে এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল তাদের কাছে এর কোনো খোঁজখবর ছিল না। নিজ একমাত্র কন্যা সন্তানের হাতে বাবা-মাকে প্রাণ দিতে হবে তা তারা কখনো ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি। মেয়েটি যখন দেখলো তার বাবা-মা সে যে পথে চলতে চায় সে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন সে নিজ হাতে বাবা-মাকে হত্যা করতে এতটুকুও কুণ্ঠাবোধ করেনি। হত্যা পরবর্তী এ মেয়েটিকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হলে এবং অতঃপর বিচারের সম্মুখীন করা হলে তার আচরণে এমন লোমহর্ষক ঘটনার জন্য সে যে অনুতপ্ত এমন কিছু অনুভূত হয়নি।
ঢাকা শহরে একাধিক জুয়েলারি শপ ও একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তিন ভাইয়ের যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হয়ে আসছিল। স্বল্প সময়ের মধ্যে এ পরিবারটি বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হন। তিন ভাইয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠজনের হাতে অগাধ সম্পদ আসার পর তার জীবনযাপন প্রণালীতে দ্রুত পরিবর্তন আসে। তার স্ত্রী-পুত্র-কন্যা থাকার পরও তিনি পরনারী ও মদ-জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। প্রতিদিনই তার ভোগবিলাসের জন্য তিনি দেশে অবস্থানকালীন ঢাকা শহরের বিভিন্ন হোটেলে অথবা অভিজাত এলাকার সুরম্য ও বিলাসবহুল অট্টালিকায় নারীভোগ ও মদ পানের আসর বসত। ব্যবসার কারণ দেখিয়ে তাকে প্রায়ই বিদেশে যেতে দেখা যেত। বিদেশে ব্যবসার কাজে তিনি যতটুকু না সময় দিতেন তার চেয়ে অধিক সময় দিতেন সাথে নিয়ে যাওয়া অথবা সেখান থেকে জুটানো নারী সাহচর্যে। তার এ ধরনের বেপরোয়া জীবনযাপন উঠতি বয়সি তার একমাত্র পুত্রের জীবনধারার ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছেলেটি স্কুলে অধ্যয়নকালীনই দেখা গেল তার মেয়ে বান্ধবীরা তার বাসায় এসে তাকে সঙ্গ দিচ্ছে এবং তার সাথে অবাধে মেলামেশা করছে। উঠতি বয়সী ছেলের সাথে তার মেয়ে বান্ধবীদের এ ধরনের খোলামেলা আচরণ তার মায়ের কাছে বিষম ঠেকলেও তার পিতার আশকারায় ঙমায়ের আপত্তি কখনো সন্তানের চলার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে একসময় দেখা গেল এ ছেলেটি নিত্যনতুন নারী সঙ্গীদের নিয়ে বিভিন্ন হোটেল ও অভিজাত এলাকার বিলাসবহুল বাড়িতে রাতযাপন করছে। ছেলের এ ধরনের জৌলুশপূর্ণ ভোগবিলাসে অর্থের জোগান দিতে তার পিতার পক্ষ হতে অপারগ হওয়ার ঘটনা কেউ প্রত্যক্ষ করেছে এমনটি শুনা যায়নি। এ ছেলেটি নিজ পছন্দে জনৈক মডেল কন্যাকে বিয়ে করলে তার মা বিয়েটি মেনে নিলেও ঠুনকো ও অলীক আভিজাত্যের আবরণে আচ্ছাদিত পিতার কাছে মেয়েটি তার পুত্রের জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়নি। মডেল কন্যাটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় অলীক আভিজাত্যের বেশধারী পিতা এ বিয়েটিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি। পিতার প্ররোচনায় ছেলেটি অবশেষে মেয়েটির সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায়।
এরপর দেখা গেল ছেলেটি প্রতি রাতেই বিভিন্ন হোটেলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে একাধিক নারীর সঙ্গ উপভোগ করছে। ছেলেটি ও তার বন্ধুরা এভাবে যেসব নারীর সঙ্গ উপভোগ করত তারা পরবর্তীতে সেসব নারীদের কাছে পেতে চাইলে তাদের ডাকে যেন সাড়া না দেয়ার কোনো উপলক্ষ্য না ঘটে এমন উপলব্ধি হতে উপভোগের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখত। একদা ছেলেটির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আগত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া দুটি মেয়েকে হোটেল কক্ষে রাত্র যাপনে বাধ্য করে উপভোগের দৃশ্য ধারণ করা হলে ঘটনার আকস্মিকতায় মেয়ে দুটি হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এ মেয়ে দুটি ছেলেটির তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সহায়তায় থানায় মামলা করলে ঘটনাটির সূত্র ধরে তার এবং তার পিতার অনৈতিক এবং বেপরোয়া জীবনযাপনের কাহিনী জনসম্মুখে ফাঁস হয়। এ মামলা সংশ্লেষে ছেলেটি তার পিতা ও দুই চাচাসমেত কারান্তরীণ হয়েছিল। এ ঘটনাটির কারণে পরিবারটির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যায়। একদা প্রাচুর্যের আতিশয্যে নিমগ্ন এমন একটি পরিবার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে তা এ পরিবারটি কি কখনো ভেবে দেখেছিল?
ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত অঢেল সম্পদের মালিক একটি পরিবারের বিদেশে পড়ুয়া কৈশোর উত্তীর্ণ একমাত্র পুত্র সন্তানের বেপরোয়াভাবে বিলাসবহুল গাড়ি চালানোর সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে জনৈক পথচারী মুমূর্ষু অবস্থায় উপনীত হলে নির্বোধ ছেলেটি গাড়িটি ব্যাক গিয়ারে দিয়ে দ্রুত দুর্ঘটনাস্থল হতে পালানোর সময় পুনঃমুমূর্ষু পথচারীটির ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে নির্মমভাবে পথচারীর মৃত্যু ঘটে। ঘটনাটি সংঘটন পরবর্তী জনৈক মোটরসাইকেল আরোহী ও অপর একটি প্রাইভেট কারের আরোহীরা ছেলেটির গাড়িটিকে অনুসরণ করতে থাকে। ছেলেটি নিজ এলাকায় প্রবেশ করলে তার আচরণে উন্মত্ততা দেখা দেয় এবং এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্য অনুতপ্ত না হয়ে বরং তাকে মোটরসাইকেল আরোহী ও প্রাইভেট কার আরোহীদের প্রতি চড়াও হতে দেখা যায়। ছেলেটি তার পিতার নামে বরাদ্দকৃত আবাসস্থলের এলাকাধীন নিরাপত্তা প্রহরীদের সহায়তায় অনুসরণরত মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার আরোহীদের মোবাইলে ধারণকৃত চিত্র মুছে ফেলে এবং মারধর করে তাদের এলাকা হতে বিতাড়িত করে।
বিলাসবহুল গাড়িটির নাম্বার প্লেটের সূত্র ধরে গাড়িটির মালিকানা শনাক্ত হলে জনসম্মুখে ছেলেটির পিতৃ ও মাতৃ পরিচয়ের প্রকাশ ঘটে। ঘটনা সংশ্লেষে অজ্ঞাতনাম উল্লেখে মামলা করা হলেও পত্রপত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছেলেটির নাম জানাজানি হয়ে যায়। ঘটনা সংঘটন পরবর্তী ছেলেটি যেমন নিজেকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, তার রাজনীতি সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাও দেখা গেল ছেলেটির অপরাধের দায় তাদের একাধিক গাড়ি চালকের একজনের ওপর চাপিয়ে দিয়ে পরিত্রাণ লাভে সচেষ্ট। যে মামলা হয় তার ধারা আপস অযোগ্য হলেও ছেলেটির পিতা ও মাতা তাদের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিহত পথচারীর পরিবারের সদস্যদের সাথে আপসরফা করেন।
অতি সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাস্থ একজন সংসদ সদস্যের পুত্র তার পিতার সংসদের স্টিকার সম্বলিত গাড়িতে করে তার সহযোগী ও দেহরক্ষীসমেত যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে স্ত্রীসমেত ভ্রমণরত নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তার সাথে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে তাকে মারাত্মকভাবে জখম করেন এবং তার স্ত্রীকেও নিগৃহীত করেন। ঘটনা পরবর্তী ভুক্তভোগী নৌকর্মকর্তা থানায় মামলা দায়ের করলে শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংসদ সদস্যের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। তল্লাশিকালীন বাড়িটি হতে অবৈধ অস্ত্র, মাদক, অনুমোদনবিহীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াকিটকি, হাতকড়া প্রভৃতি উদ্ধার করা হয়। অভিযানকারীদের কাছ হতে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় সংসদ সদস্যের পুত্র বাড়িটির একটি কক্ষ অবৈধভাবে আটক পরবর্তী ‘নির্যাতন কেন্দ্র’ হিসেবে ব্যবহার করতেন। অভিযানকালে শৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিচার পরিচালনা করে সংসদ সদস্যের পুত্র ও তার সহযোগীকে অবৈধ মাদক ও অনুমোদনবিহীন ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য উভয়কে ছয় মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। শৃঙ্খলাবাহিনীর সূত্রে প্রকাশ, সংসদ সদস্যের পুত্র ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। এ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পরিণয়সূত্রে অপর একজন সংসদ সদস্য ও তার স্ত্রী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের জামাতা। এ সংসদ সদস্য আবার একটি জেলার ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
কাকতালীয়ভাবে পূর্বোল্লিখিত ঘটনায় বেপরোয়াভাবে বিলাসবহুল গাড়ির চালক এবং পরবর্তী ঘটনায় সংসদ সদস্যের স্টিকার সম্বলিত গাড়ির আরোহী সংসদ পুত্র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ক্ষমতাসীন দলের একই পরিবারের পুত্র ও কন্যা জামাতা। প্রণিধানযোগ্য যে, আলোচ্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পিতা সংসদ-সদস্য বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকায় নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত।
সন্তানদের এহেন অন্যায় ও অমানবিক কাজকে ক্ষমতাধর পিতা-মাতা যেভাবে ক্ষমতা ও অর্থের জোরে ধামাচাপা দেয়ার প্রয়াস নেন এতে ভবিষ্যতে পিতা-মাতার প্রশ্রয়ে এ ধরনের সন্তানদের স্বভাব ও আচরণে পাশবিকতার কাছে যে মানবিকতার পরাজয় ঘটবে এ কথাটি তাদের পিতা-মাতার উপলব্ধিতে আছে কি? আর না থাকার কারণেই আমাদের মাঝে মাঝে এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করার অবকাশ ঘটে যা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় প্রাচুর্য দরিদ্রতার চেয়ে যে কত অধিক ভয়াবহ।