ফিলাডেলফিয়ার রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:২৮ এএম, ৮ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০৬:০৬ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার সনদ যে নগরীতে গৃহীত হয়েছিল, সেই ফিলাডেলফিয়ার রাজনীতিতে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি অভিবাসীদের প্রভাব উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের এই শহরের পরিস্থিতি এখন এমন যে, বাংলাদেশিরা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালেও অনায়াসে জয় পেয়ে যান!
সর্বশেষ পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রাইমারি নির্বাচনে অডিটর জেনারেল পদে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিনা আহমেদ ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। মূল নির্বাচনে জয়ী হলে ২৩৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজ্য পর্যায়ের একটি সম্মানজনক পদে নির্বাচিত হবেন। ফিলাডেলফিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যম এনকোয়ারার জানিয়েছে, গত জুনে নিনা যখন প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন তখন তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েও দমানো যায়নি।
বাংলাদেশি অভিবাসীরা কীভাবে ফিলাডেলফিয়ার রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছেন, প্রতিবেদনটিতে তার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সেখানে মোহাম্মদ হারিসের কথা বলা হয়েছে।
২০১৮ সালে হারিস ডেমোক্রেটিক পার্টি পজিশনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েও অনুমতি পাননি। সিক্সথ ওয়ার্ডের ডেমোক্রেটিক লিডার পিট উইলসন তাকে বলেন, তার আসনে যে নারী আছেন তিনি ভালোই করছেন। উইলসনের ভাষায়, হারিস বাংলাদেশি কমিউনিটির হওয়ায় ভরসা রাখার মতো নন!
হারিস এরপর একাই জিতে আসেন।
সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘মানুষ অবাক হয়েছিল।’
ওই বছর হারিসের পাশাপাশি কমিটিতে আরও তিনজন বাংলাদেশি জয় পান। এখন তারা প্রবাসীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
ফিলাডেলফিয়া এমন একটি রাজ্য যেখানে ‘বাইরের’ বিদ্রোহীরা প্রায়ই প্রতিষ্ঠিতদের হারিয়ে দেন। ফিলাডেলফিয়া এনকোয়ারার বলছে, এই ধারাবাহিকতা বাংলাদেশিরা রীতিমতো অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
১৯৮৬ সালের দিকে চট্টগ্রাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া হারিস রাজনীতিতে নামেন স্বদেশিদের কথা ভেবে। স্টুডেন্ট ভিসায় দেশটিতে যাওয়া এই প্রবাসী এখনো নিজের অতীতকে ভুলতে পারেন না, ‘আমি মাঝে মাঝে কাঁদতাম।’
২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, ফিলাডেলফিয়ায় মাত্র ১ হাজার ৭৩৫ জন বাংলাদেশি বসবাস করেন। অথচ এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ১৫ লাখের বেশি। সংখ্যায় কম হয়েও স্থানীয় রাজনীতিতে বাংলাদেশিরা যেভাবে প্রভাব বিস্তার করছেন তা দেখে প্রতিষ্ঠিতরা বলছেন, ‘প্রবাসীদের নিয়ে আরও ভাবতে হবে।’
‘পুরোনো এবং ক্ষয়ে যাওয়া অবকাঠামো কাজ না করলে, আমাদের সময়ের সঙ্গে নতুন কিছু ভাবতে হবে,’ মন্তব্য করে ফিলাডেলফিয়ার অভিবাসী রাজনৈতিক সমর্থন কর্ম কমিটির চেয়ারম্যান সিওভেন লিয়নস বলছেন, ‘অভিবাসীদের গুরুত্ব না দিলে সামনে এমন আরও পরিবর্তন আমরা দেখতে পাব।’
উৎসঃ দেশ রূপান্তর