পূজার মায়ের মৃত্যু হয়েছিল ২৯-এ, পূজাও চলে গেলেন একই বয়সে!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:১১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সাভারের বলিয়াপুর এলাকায় দুটি বাস ও একটি ট্রাকের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকার (২৯)। তার এমন মৃত্যুর শোক কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছে না পরিবার। মেয়েকে হারিয়ে বিলাপ করছিলেন পূজা সরকারের বাবা অতুল সরকার। মাত্র ২৯ বছর বয়সী স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন বহু বছর আগেই। স্ত্রীকে হারানোর পরে মেয়েকে স্নেহ দিয়ে বড় করলেও সেই মেয়েও না ফেরার দেশে চলে গেলেন সেই ২৯-এই।
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে বেঁচে থাকলে বড় বিজ্ঞানী হতো। আমার মেয়ের মতো আর কারও যেন এমন মর্মান্তিক মৃত্যু না হয়। ছয় বছর বয়সে সে তার মাকে হারিয়েছে। তখন ওর মায়ের বয়স ছিল ২৯ বছর। প্রায় একই বয়সে মেয়েও মারা গেলো। ১১ জুন তার জন্মদিন। উদযাপনের জন্য আয়োজন শুরু করা হয়েছিল। তা আর করা হলো না।’
রুটিনমতো গত ৫ জুন অফিসের বাসে করে পূজা সরকার অন্যদের সঙ্গে ঢাকার হাটখোলা রোডের বাসা থেকে সাভারে কর্মস্থল আণবিক শক্তি কমিশনে যাচ্ছিলেন। বাসটি বলিয়ারপুর এলাকায় গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা সেইফ লাইন পরিবহনের একটি দূরপাল্লার বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজন অতিক্রম করে আণবিক শক্তি কমিশনের বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পূজা সরকারসহ আরও দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বাবা অতুল সরকার জানান, স্ত্রী আলপনা সরকার দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর মেয়ে পূজাকে মায়ের স্নেহ দিয়ে বড় করেন। এ কারণে অনেক আশা ছিল আমাদের পুরো পরিবারের ওর প্রতি। সে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাবে। ওই সময় আমাদের কাছে বেড়াতে আসবে। অফিসে ব্যস্ততা, তাই জামাই ষষ্টির দাওয়াতে আসতে পারেনি তারা।
তিনি বলেন, “ভিকারুননিসা নুন স্কুলে পড়ত। ভাল রেজাল্ট করেছিল। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্সে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে কৃতিত্ব অর্জন করে পূজা। ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আট মাস শিক্ষকতা করে সে। এরই মধ্যে আণবিক শক্তি কমিশনে চাকরি হয় তার।”