avertisements 2

মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢাবির শিক্ষক ও দুই ছাত্র মিলে চার শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেছিল

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৮ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫৭ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি পর্ব এবং শেষে চার শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং ও যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা হলেন চারুকলা অনুষদের শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আক্তারুজ্জামান সিনবাদ ও দুই ছাত্র।

মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীকে এবং এর আগের রাতে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি পর্বে অনুষদের আরও তিন শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং করা হয়।

দুই ঘটনায় ১৮ এপ্রিল শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় চক্রবর্তী ও অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ভুক্তভোগীদের এক বন্ধু গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রার পরের ঘটনায় শুধু প্রভাষক আক্তারুজ্জামান সিনবাদ জড়িত থাকলেও আগের রাতের ঘটনায় তার সঙ্গে অনুষদের আরও দুই শিক্ষার্থী জড়িত।

লিখিত অভিযোগে তাদের নামও উলে­খ করা হয়েছে। এই শিক্ষার্থী আরও জানান, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন অনুষদের সাবেক ছাত্র শুভ্র বাড়ৈই। অন্যজন পুলক বাড়ৈই। তিনি ভাস্কর্য বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। তিনি বলেন, ‘একটি অভিযোগ আমাকে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে শিক্ষার্থীরা জমা দিয়েছে। কী ঘটেছিল, তা জানার জন্য আমরা একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছি। কমিটি অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেছে।

পৃথকভাবে কথা বলা হলেও তাদের বক্তব্যে মিল আছে। এজন্য আমরা মনে করছি, অভিযুক্ত শিক্ষকেরও বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন। তাই আমরা সেই শিক্ষককে বক্তব্য দেওয়ার জন্য চিঠি ইস্যু করেছি।

৮ মের মধ্যে তাকে লিখিত উত্তর দিতে বলা হয়েছে। লিখিত বক্তব্য একবার দিলে আর উইথড্র করা যায় না। তাই ভেবেচিন্তে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ওই শিক্ষককে বেশি সময় দেওয়া হয়েছে।’

নিসার হোসেন বলেন, ‘অভিযোগপত্রে শিক্ষক ছাড়াও আরও দুই শিক্ষার্থীকে দায়ী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক শিক্ষার্থীকে তার বিভাগের শিক্ষকের মাধ্যমে ডেকে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করছি। আর রানিং যে শিক্ষার্থী আছে, সে বাড়ি চলে যাওয়ায় জুমে তার বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আখতারুজ্জামান সিনবাদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। আমার কাছে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। আমি সেখানে বিস্তারিত উলে­খ করব।

এ ব্যাপারে অনুষদের সাবেক ছাত্র শুভ্র বাড়ৈই বলেন, আমাকে ডিন অফিসে ডাকা হয়েছিল। সেখানে আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শিক্ষকের সঙ্গে আমার নাম কেন জড়ানো হয়েছে, তা আমি জানি না।

এদিকে অভিযোগ দেওয়ার কিছুদিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা না হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে একটি প্রতিবাদলিপি ছাপিয়েছেন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদলিপিতে দুই ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

প্রথম ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার পরবর্তী মুহূর্তে চারুকলা অনুষদের অন্য বন্ধুদের সঙ্গে অনুষদ প্রাঙ্গণে বসে ছিলেন এক বুয়েট শিক্ষার্থী। এমন সময় শিক্ষক সিনবাদ বুয়েট শিক্ষার্থীকে দেখে ক্রমাগত শিস দিতে থাকেন।

একপর্যায়ে শিক্ষার্থী তার দিকে তাকালে তিনি অশ্লীল মুখভঙ্গি ও চোখ দিয়ে আপত্তিকর ইঙ্গিত করতে থাকেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তিনি (সিনবাদ) প্রথমে অস্বীকার করার চেষ্টা করেন।

পরে তিনি হুমকিধমকি দিয়ে কৃতকর্মের কথা স্বীকার করেন এবং নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা বন্ধুকে আবাসিক হলে থাকে কি না সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাপূর্বক দমনমূলক আচরণ করেন। আর তিনি যে শিক্ষক, সেটা স্মরণ করিয়ে তার এহেন আচরণের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেন।’

আগের রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি পর্বে অনুষদের জয়নুল শিশুকলা নিকেতন কক্ষে একই শিক্ষক (সিনবাদ) চারুকলা অনুষদের তিন ছাত্রীর সঙ্গে বিকৃত ও অপ্রীতিকর আচরণ করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের সঙ্গে অনুষদের দুই শিক্ষার্থী জড়িত।’

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এ ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2