avertisements 2

প্রতারণা চক্র লাভের প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় টাকা

২২ টাকার ওমানি মুদ্রা ওরা ১০হাজার টাকায় বিক্রি করে

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩০ আগস্ট,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:০৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

ব্যাংকে গিয়ে ওত পেতে থেকে টাকা তুলতে আসা গ্রাহকদের অনুসরণ করত একটি চক্র। টাকা তুলে গ্রাহক ব্যাংকের বাইরে বের হলেই তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলত চক্রের সদস্যরা। তারা বিভিন্ন দেশের কারেন্সি নোট দেখাত। এরপর কৌশলে বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যেত। চক্রটি ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে মাত্র ২২ টাকার ওমানি মুদ্রা ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করত। এমনই এক ভুক্তভোগীর কাছে ২০টি ওমানি মুদ্রা বিক্রি করে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। অথচ ২০টি ওমানি মুদ্রার মূল্য মাত্র ৪৪০ টাকা।

ওমানের মুদ্রা নিয়ে অভিনব এমন প্রতারণার অভিযোগে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের দলনেতাসহ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতরা হলো মো. আল আমিন (৩৫) ও মো. শাহজাহান সিরাজ (৪৬)। গত শনিবার রাজধানীর উত্তরা-পশ্চিম থানাধীন খালপাড়ে অবস্থিত সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস অফিসের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আল আমিনের কাছ থেকে ৪০টি ওমানি মুদ্রা ও নগদ ১০ হাজার টাকা ও শাহজাহান সিরাজের কাছ থেকে ১৮টি ওমানি মুদ্রা ও নগদ ১০ হাজার টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশা জব্দ করা হয়।

গতকাল রবিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা ইউনিটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, গত ২৩ আগস্ট লুৎফর রহমান (৪৯) সাভারের বাসা থেকে বের হয়ে তার বড় ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ভাইয়ের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা নিয়ে ফিরছিলেন তিনি।

পথে কদমতলী চৌরাস্তার পূর্ব পাশে জাহিদ মার্কেটের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক সিএনজি অটোরিকশাচালক তাকে স্যার বলে সম্বোধন করে ডাকেন। তিনি ঐ অটোরিকশার কাছে গেলে চালক তাকে কয়েকটি বিদেশি মুদ্রার নোট দেখিয়ে কোথায় একচেঞ্জ করা যাবে জানতে চান। তখন লুত্ফর রহমান ঐ অটোরিকশাচালককে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাঙানো যায় বলে জানান। এরপর চালক তাকে ২০-২৫টি বিদেশি কারেন্সি দেখায় এবং ভাঙানো হলে কত টাকা পাওয়া যাবে জানতে চায়। তখন তাদের কাছাকাছি অজ্ঞাতনামা আরও দুই জন এসে লুত্ফরের পাশে দাঁড়ায়। তাদের এক জন ব্যাংকে চাকরি করে এবং অন্যজন মানি এক্সচেঞ্জে চাকরি করে বলে পরিচয় দেয়, যোগ করেন তিনি।

‘ঐ দুই জন জানায়, বিদেশি কারেন্সিগুলো অনেক দামি এবং এগুলো ওমানি কারেন্সি নোট। মানি এক্সচেঞ্জের দোকানে গিয়ে জমা দিলে অনেক টাকা পাওয়া যাবে। তাদের এক জন তখন লুত্ফর রহমানকে দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সিএনজি অটোরিকশাচালকের কাছ থেকে চারটি নোট কিনে নেন। তারা লুত্ফর রহমানকে বাকি নোটগুলো কেনার জন্য প্রলুব্ধ করেন। তার কথায় বিশ্বাস করে লুত্ফর রহমান চালকের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা দিয়ে ২০টি ওমানি কারেন্সি নোট কিনে নেন। তখন চালকসহ অজ্ঞাত ঐ দুই ব্যক্তি সিএনজিতে দ্রুত রাজধানীর বাবুবাজারের দিকে চলে যায়।’

পরবর্তী সময় ভুক্তভোগী লুত্ফর রহমান জানতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন এবং ২ লাখ টাকা খুইয়েছেন। এরপর তিনি ২৭ আগস্ট দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2