জানুয়ারিতে মৃতদের ৭৩ শতাংশই টিকা নেয়নি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৩৭ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বেশ লম্বা সময় পর গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ থেকে দেশে আবারো শুরু হয় নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। তবে এক সপ্তাহ ধরে বাড়তে শুরু করেছে মৃতের সংখ্যা। জানুয়ারিতে দেশে কভিড-১৯ পজিটিভ হয়ে ৩২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেননি।
সরকারের দেয়া গত এক মাসের করোনাবিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, জানুয়ারিতে মৃত ৩২২ জনের মধ্যে ২৩৪ জন অর্থাৎ ৭৩ শতাংশ কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা নেননি। মাত্র ২৭ শতাংশ বা ৮৮ জন টিকা নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে আবার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন ১৮ জন আর দুই ডোজ নিয়েছিলেন ৬৮ জন। তবে মৃতদের মধ্যে মাত্র দুজন বুস্টার বা তৃতীয় ডোজের টিকা পেয়েছিলেন।
নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণের কারণে গত বছর দেশের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল। পরে বছরের শেষাংশে এসে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ডিসেম্বর তা আবারো বাড়তে শুরু করে। ওমিক্রনের প্রভাবে গত ১২ জানুয়ারি দেশে করোনা রোগী ১৬ লাখ ছাড়ায়। এর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ জানুয়ারি এ সংখ্যা ১৭ লাখ অতিক্রম করে। প্রায় চার মাস পর দেশে আবার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ভাইরাসটির নতুন ধরন ওমিক্রনের কথা বলা হচ্ছে। এর ফলে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে এক লাখ রোগী বেড়েছে। সব মিলিয়ে মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে কভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ১১ হাজার ৯৮৭।
ওমিক্রনের সংক্রমণের মধ্যে জানুয়ারিতে ২ লাখ ১৩ হাজার ২৯৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ৩২২ জনের। তার আগের মাস ডিসেম্বরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ২৫৫ জন ও ৯১ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ গতকাল আরো ১৩ হাজার ১৫৪ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ৪২৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, গতকাল আরো ২ হাজার ৭২১ জন রোগী সুস্থ হয়ে ওঠায় মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৯৩৪।
করোনা মহামারীর মধ্যে এক মাসে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত বছর জুলাইয়ে। সেই মাসে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জন রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে কম হলেও নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার সর্বোচ্চ হয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার সর্বোচ্চ ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশে দাঁড়ায়। আর গতকাল সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ আর মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
গতকাল মারা যাওয়া ৩১ জনের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ ও ১৬ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৯ জন ঢাকা, সাতজন চট্টগ্রাম, একজন করে তিনজন রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা এবং দুজন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ২০২০ সালের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যু হয়। আর গত বছর ৫ ডিসেম্বর কভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত ৫ ও ১০ আগস্ট দুই দিনই সর্বোচ্চ ২৬৪ জন করে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।